এবার কি রোনালদোর ক্লাবে যাবেন হরলান্ড
সাম্প্রতিক সময়ে দলবদলের বাজারে গুঞ্জন মানেই আর্লিং হরলান্ডের নাম ওঠা। হরলান্ড ডর্টমুন্ডে থাকবেন নাকি থাকবেন না? এই এক প্রশ্নে প্রায় দেড় বছর ধরে সরগরম আলোচনার টেবিল। নরওয়ের এই স্ট্রাইকার নিজে বিভিন্নভাবে বুঝিয়েছেন, দীর্ঘ মেয়াদে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডে থাকার কোনো ইচ্ছা নেই তাঁর।
তাহলে হরলান্ড যাবেন কোথায়! বিশ্বের প্রায় সব বড় বড় দলই পেতে চায় তাঁকে। কয়েক দিন আগে তো শোনা গেল হরলান্ডকে রাজি করানোর জন্য জার্মানির মিউনিখে গিয়েছেন বার্সেলোনার কোচ জাভি। হরলান্ডের বাবা ও এজেন্ট রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সেলোনা ঘুরে ইংল্যান্ডের শীর্ষ ক্লাবগুলোতে ঘুরে এসেছেন। ওভাবে নাম শোনা না গেলেও তাঁকে পেতে চায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও।
২০২০ সালে রেড বুল সালজবুর্গে খেলার সময় থেকে হরলান্ডের ওপর চোখ ইউনাইটেডের। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ২০টি দল তাঁকে পাওয়ার চেষ্টা করেছিল। ইউনাইটেডও ছিল এই ভিড়ে। কিন্তু সবাইকে টপকে ডর্টমুন্ড পেয়েছিল তাঁকে। বড় বড় সব ক্লাব ফেলে তাঁকে পেতে একটি বুদ্ধি খাটিয়েছিল জার্মান ক্লাব। ডর্টমুন্ডের প্রধান নির্বাহী হ্যানস জোয়াকিম ওয়াটজকিই জানালেন সেটা, ‘আমরা আরলিং হরলান্ডকে রিলিজ ক্লজ দিয়েছি। না হলে সে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে যেত।’
হরলান্ডের পারফরম্যান্স অনুযায়ী তাঁর রিলিজ ক্লজ খুবই কম। ২০২০ সালে নরওয়েজ এই স্ট্রাইকার নাম লেখান ডর্টমুন্ডে। ডর্টমুন্ডের হয়ে লিগে ৬৪ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন ৫৮টি। এমন কোনো খেলোয়াড়কে ক্লাবের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিতে চাইলে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। এই ডর্টমুন্ড থেকে উসমান দেম্বেলেকে নিতে প্রায় ১৪ কোটি ইউরো ব্যয় করেছে বার্সেলোনা। সেখানে হরলান্ডের মতো গোলমেশিনের জন্য মাত্র সাড়ে ৭ কোটি রিলিজ ক্লজ তো কমই। চুক্তির সময় এত কম রিলিজ ক্লজ ঠিক করে ডর্টমুন্ড তাঁকে দলে টেনেছিল। বুঝিয়েছিল, দেড় বছরের পর চলে যেতে চাইলে তারা বাধা দেবে না।
ফর্মের তুঙ্গে থাকা এমন স্ট্রাইকারকে কোন দলই-বা না পেতে চাইবে। ডর্টমুন্ড যে তাঁকে এখনো ধরে রাখতে চায়, সেটাও বুঝিয়ে দিয়েছেন ওয়াটজকি। তবে বলে দিয়েছেন, চলে যেতে চাইলে সমস্যা নেই, বিকল্প একজনকে ঠিকই খুঁজে বের করবেন তাঁরা। এবং সে ক্ষেত্রে কোনো রিলিজ ক্লজ রাখা হবে না, ‘ওকে (হরলান্ড) সিদ্ধান্ত নিতে হবে, একসময় না একসময় সেটা নেবেই। তবে আমরা নিশ্চিত নতুন হরলান্ড ঠিকই খুঁজে পাব। আমাদের নতুন হরলান্ড দরকার।’
হরলান্ডকে পাওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে ম্যানচেস্টার সিটি। রিয়াল মাদ্রিদও আছে দৌড়ে। সে তুলনায় একসময় যে দলে প্রায় চলেই গিয়েছিলেন, সেই ইউনাইটেডের নাম খুব একটা শোনা যাচ্ছে না। গোলস্কোরারের খোঁজে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ফিরিয়ে এনেছে ইউনাইটেড। সেখানে আলোও ছড়াচ্ছেন কিংবদন্তি। পর্তুগিজ এই তারকার পাশে খেলা যেকোনো ফুটবলারের জন্যই স্বপ্ন। আর এমন দুজনকে একসঙ্গে খেলতে দেখা? ইউনাইটেড সমর্থকদের জন্য এ তো রীতিমতো ঈদ!
ইউনাইটেডের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ রাংনিকের মতে, ইউনাইটেডে হরলান্ডের মতো একজন দরকার, ‘হরলান্ড তরুণ একজন খেলোয়াড়। যার বয়স ২১ অথবা ২২। সে তাদের একজন, আমি যাদের কথা বলেছি। কিন্তু অন্যদিকে সে বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল স্ট্রাইকারে পরিণত হয়েছে। আমাদের উচিত ওকে উদাহরণ মেনে এমন খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করা এবং তাদের ক্লাবে যোগ দিতে রাজি করা যেন ম্যানচেস্টারের হয়ে আগামী কয়েক বছর খেলতে পারে।’ দেখা যাক, এবার ইউনাইটেড ও হরলান্ডের মধ্যে মিলন হয় কি না।