কৌতুকের পর সাংবাদিকদের ধুয়ে দিলেন ম্যারাডোনা

নিজের ফেস শিল্ড নিয়ে হাস্যকৌতুক ভালোভাবে নেননি ম্যারাডোনা।ছবি: এএফপি

ডিয়েগো ম্যারাডোনা মানেই তো খবর। তাঁর যা স্বভাব, তাতে করোনাকালীন সময়ে আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি স্বাস্থ্যবিধি না মেনে খবরে এলেও হয়তো অবাক হতেন না কেউ। কিন্তু ছিয়াশি বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি ম্যারাডোনা খবরে এলেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

বিশ্বব্যাপী করোনা ঠেকাতে সবাইকে পইপই করে মাস্ক পরতে বলা হচ্ছে। মাস্কের বদলে মুখ ঢাকার বিশেষ আবরণ বা ফেস শিল্ড হলে তো কথাই নেই। নাক, মুখ, চোখে ভাইরাসের ঢোকাটাই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ম্যারাডোনা সেই ফেস শিল্ডই পরেছেন। কিন্তু সেটি পরে দিব্যি একটা ম্যাচের ডাগআউটে বসে গেছেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি! ফেসবুক-টুইটারে সবকিছু নিয়ে ‘মিম’ বা হাস্যরসাত্মক কৌতুক বানানোর যুগে এটি কি আর বাদ পড়ে!

ম্যারাডোনাকে নিয়ে কৌতুক বানিয়েছেন অনেকে। সাধারণ দর্শক তো বটেই, ‘মিম’ বানিয়ে হাসিঠাট্টা করেছেন আর্জেন্টিনার অনেক সাংবাদিকও। কিন্তু ব্যাপারটা মোটেও পছন্দ হয়নি ম্যারাডোনার। রীতিমতো ধুয়ে দিয়েছেন সাংবাদিকদের।  

এই ফেস শিল্ড পরে এসেছেন ম্যারাডোনা।
ছবি: সংগৃহীত।

করোনাভাইরাসের কারণে এপ্রিলে ছুটি পড়ে যায় আর্জেন্টিনার ঘরোয়া ফুটবলে। করোনা কাটিয়ে কালই মাঠে ফিরেছে লাতিন আমেরিকান দেশটির ফুটবল। ছোট ছেলেকে সঙ্গে করে স্টেডিয়ামে এসেছেন আর্জেন্টিনার ক্লাব জিমনাসিয়া দে লা প্লাতার কোচ ম্যারাডোনা। তাঁর পরনে যে ফেস শিল্ড, সেটি দেখতে অনেকটা নভোচারীদের শিল্ডের মতোই। করোনা রোগীদের নিয়ে কাজ করা ডাক্তারদেরও পড়তে দেখা যায়।

এই নিয়ে উপহাস করা হয়েছে বিশ্ব ফুটবলের জীবন্ত কিংবদন্তিকে। ম্যারাডোনাও ছেড়ে কথা বলার পাত্র নন। কেন এই ধরনের মাস্ক পড়েছেন, সে ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁকে নিয়ে মজা করা ব্যক্তিদের ধুয়ে দিয়েছেন জীবন্ত কিংবদন্তি এই ফুটবলার। তোপটা বেশি গেছে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর দিয়েই।

দায়িত্বপালন কালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া ডাক্তারদের সম্মান জানাতেই এমনটা করেছেন জানিয়ে ম্যারাডোনা বললেন, ‘ডাক্তার আমাকে যেভাবে বলেছে, আমি আজ সেভাবে বাসা থেকে বের হয়েছি। এই ধরনের মাস্ক ডাক্তাররাও ব্যবহার করেছেন। করোনার জন্য যে ডাক্তাররা দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় মারা গেছেন, তাঁদের প্রতি সম্মান জানাতে আর নিজের স্বাস্থ্যবিধি পালনের দায়িত্ব মানতেই এটা পরেছি। কিন্তু কিছু প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ও সাংবাদিক আমাকে নিয়ে উপহাস করেছে।’

ম্যারাডোনার মূল ক্ষোভটা গণমাধ্যমকর্মীদের দিকে, ‘এই সাংবাদিকরাই আপনি স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আপনার সমালোচনা করবে। আবার মানলেও সমালোচনা করছে। তারা আমাকে নিয়ে হাসাহাসি করেছে। অথচ এরাই (করোনায়) মৃতের সংখ্যার খবরটা যখন দেয়, তখন তাদের মুখেই ভয়ের ছাপ থাকে। তাদের বুঝতে হবে যে কাউকে বা কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে সব সময় নিজেদের বিকিয়ে দিতে নেই। আপনারা সবাই আমার সঙ্গে একমত?’

আর্জেন্টিনায় করোনা বেশ ভালোভাবেই আঘাত করেছে। দেশটির প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ করেনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ১৭ হাজার মারা গিয়েছেন এই ভাইরাসে। এমন অবস্থায় ম্যারাডোনার মতো মাস্ক শিল্ড পড়ে বের হওয়াটাই তো স্বাভাবিক মনে হয়।