চটে গিয়েছিলেন নেইমারের বাবা
বার্সেলোনা-ভক্তরা খবরটা শুনে হয়তো আফসোসই করবেন। ইশ্, বার্সা বোর্ডের কী দরকার ছিল নেইমারের বাবার সঙ্গে ওভাবে টাকাপয়সা নিয়ে ঝামেলায় যাওয়ার? তা না হলে, কে জানে, নেইমার হয়তো বার্সায়ই থাকতেন! চুক্তি অনুযায়ী গত সপ্তাহে তাঁদের ‘প্রাপ্য’ ২৬ মিলিয়ন ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৪৮ কোটি টাকারও বেশি) না দেওয়াতেই যে বার্সেলোনার বোর্ডের ওপর চটে গিয়েছিলেন নেইমারের বাবা নেইমার সিনিয়র।
গত পরশু পিএসজিতে যাওয়ার সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে নেইমার বলেছিলেন, বাবার অমতেই বার্সেলোনা ছেড়েছেন তিনি। এমনিতেই নেইমারের ক্যারিয়ারে তাঁর বাবার সিদ্ধান্তের প্রভাব মোটামুটি সর্বজনবিদিত। ছেলের এজেন্ট হিসেবেও কাজ করেন নেইমার সিনিয়র। কিন্তু গত সপ্তাহে তিনি বিরক্ত হয়ে পড়েন কাতালান ক্লাবটির বোর্ডের ওপর। কেন? গত বছরে নেইমারের চুক্তি নবায়নের সময় শর্ত ছিল, এই বছরের ৩১ জুলাই পর্যন্ত ক্লাবে থাকলেই ‘বিশ্বস্ততার জন্য বোনাস’ হিসেবে ২৬ মিলিয়ন ইউরো পাবেন নেইমার ও তাঁর বাবা। কিন্তু আগস্টে এসে নেইমারের পিএসজি যাওয়ার সম্ভাবনা দেখে বার্সা বোর্ড জানিয়ে দেয়, ক্লাবে না থাকলে ওই টাকা পাবেন না নেইমাররা।
ব্যস, তাতেই শেষ বার্সেলোনার প্রতি নেইমারের বাবার সমর্থন। স্প্যানিশ রেডিও কাদেনা কোপেকে নেইমার সিনিয়র বলেছেন, ‘ওটা যখন করল, ওই মুহূর্তেই ওরা (বার্সেলোনা বোর্ড) আমার সমর্থন হারিয়ে ফেলে। এর আগ পর্যন্ত আমি বার্সেলোনার পক্ষেই ছিলাম। নেইমারকে থাকার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু বোর্ডের অমন আচরণের পর আর তাদের পক্ষে থাকার ইচ্ছে হয়নি। চুক্তিতে সব তো পরিষ্কার ও স্পষ্ট করেই লেখা ছিল।’ বার্সেলোনা ছেড়ে নেইমারের পিএসজিতে যাওয়াটাও তাঁর চোখে ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’, ‘যেখানে যাওয়ার স্বপ্ন ছিল, ও এখন সেখানেই আছে। ওর বন্ধু, আশপাশে যারা থাকে, ওদের পরামর্শ শুনেছে। চ্যালেঞ্জটা নিতে চেয়েছে। আমার মনে হয় ও অনেক সাহস দেখিয়েছে। আর সিদ্ধান্তটা নেওয়ার অধিকার ওর আছে।’
তা কোন চ্যালেঞ্জটা বেশি তাড়িত করেছে নেইমারকে? পিএসজিতে নিজের মতো করে ইতিহাস লেখা, নাকি মেসির ছায়া ছেড়ে বেরোনো? স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম দ্বিতীয় কারণটিও প্রাধান্য পাচ্ছে। তবে নেইমারের বাবা গুঞ্জনটাকে রীতিমতো তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন, ‘সবাই বলছিল, ও (নেইমার) মেসির বিকল্প হবে। কিন্তু ও তো কারও বিকল্প হতে চায়নি। লিওর ব্যাপারটা এখানে না জড়ানোই ভালো। ও এখানে (বার্সেলোনা) একজন আইডল। নেইমার নিজের রাস্তা ধরে এগোচ্ছে, যে চ্যালেঞ্জ সামনে এসেছে সেটা নিয়েছে। মানুষ যেভাবে তুলনাটা করে, তাতে লিও বা নেই (নেইমার) কারও প্রতিই সম্মান দেখানো হচ্ছে না।’ এএফপি।