পিএসজিতে লিওনেল মেসির মৌসুমটার মূল্যায়নের ভার আপনার হাতে দেওয়া হলে দশে কত দেবেন?
ফরাসি সংবাদমাধ্যম লে’কিপের মূল্যায়ন আগেই চলে এসেছে। মৌসুমে ফরাসি লিগ জেতানোর পথে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে যে ১১ জনকে নামিয়েছে পিএসজি, তার মধ্যে সবচেয়ে কম ৫.৩০ রেটিং লে’কিপ দিয়েছে মেসিকেই। সবচেয়ে বেশি দিয়েছে ডিফেন্ডার মারকিনিওসকে—৫.৮২, দ্বিতীয় সেরা কিলিয়ান এমবাপ্পের রেটিং ৫.৮০। তারকাদের মধ্যে নেইমারকে লে’কিপ দিয়েছে ৫.৪২, মার্কো ভেরাত্তিকে ৫.৩৭, আশরাফ হাকিমিকে ৫.৩৬!
তা প্রসঙ্গ যখন মেসি, বার্সেলোনা ছেড়ে পিএসজিতে যাওয়ার পর প্রথম মৌসুমটা যে নিদারুণ হতাশায় কেটেছে ৩৪ বছর বয়সী এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের, এ ব্যাপারে সম্ভবত দ্বিমত করবেন না কেউই। তবে পিএসজি কোচ মরিসিও পচেত্তিনো আগলেই রাখছেন মেসিকে।
স্বদেশি তারকাকে নিয়ে আর্জেন্টাইন কোচের মূল্যায়ন, মেসিকে প্রথম মৌসুমে যেভাবে অন্যরা সবাই মূল্যায়ন করছেন, সেটি মোটেও উচিত হচ্ছে না। এভাবে মেসিকে মূল্যায়ন করা পচেত্তিনোর চোখে অন্যায্য। তবে নতুন ক্লাবে প্রথম মৌসুমের ধাক্কা কাটিয়ে মেসি আগামী মৌসুমে চেনা ছন্দে ফিরবেন—পচেত্তিনোর বিশ্বাস এমনই।
মেসির মৌসুমটা কেমন কেটেছে, সেটি শুধু গোল করা আর করানোর হিসাবে দেখতে গেলে হতাশার এক চিত্রই সামনে চলে আসবে। লিগে ২১ ম্যাচে গোল করেছেন ৪টি, চ্যাম্পিয়নস লিগে ৭ ম্যাচে ৫ গোল করলেও পিএসজি শেষ ষোলোতে বাদ পড়ায় সেটি আর পাত্তা পাচ্ছে না। যেমন পাত্তা পাচ্ছে না লিগে মেসির ২১ ম্যাচে ১৩ গোল করানোর কথাও, এই মুহূর্তে ফরাসি লিগে এই মৌসুমে সবচেয়ে বেশি গোল করানোর রেকর্ডও মেসিরই।
কিন্তু নামটা যখন মেসি, মৌসুমে সব মিলিয়ে ২৮ ম্যাচে ৯ গোল করা আর ১৩ গোল করানো মোটেও ভালো পারফরম্যান্স বলে গণনায় আসছে না।
কিন্তু মেসিকে এভাবে শুধু গোল দিয়ে মূল্যায়ন করারই পক্ষে নন পচেত্তিনো। পিএসজির আর্জেন্টাইন কোচের কথা, মেসিকে এভাবে মূল্যায়ন করা একেবারেই অন্যায্য। ওর মান সম্পর্কে আমার কোনো সংশয়ই নেই। ওর যা করা উচিত, সেটি করার মতো যথেষ্ট প্রতিভা ওর আছে। ও সেটা করেও দেখাবে। আগামী মৌসুমটা ওর জন্য অন্য রকম হবে।
এই মৌসুমে কেন তেমনটা দেখা যায়নি, সেটার পেছনে কারণ হিসেবে পচেত্তিনো তুলে এনেছেন দলবদলের প্রভাবকে। দলবদল মানে তো শুধু সতীর্থ, কোচ, দেশ, সংস্কৃতি, আবহাওয়ারই বদল নয়—এখানে পারিবারিক দিকটাও একটা বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সেটির কথাই বলছেন পচেত্তিনো, ‘বছরটা ছিল ওর জন্য শেখার বছর। সেটি শুধু পেশাদারি দিক থেকে পিএসজিতে আসা, নতুন লিগে নতুন সতীর্থদের সঙ্গে খেলার ব্যাপারেই নয়, পারিবারিক দিক থেকেও। সেটিকেও হিসাবে নিতে হবে। এটা অনেক বড় একটা পার্থক্য, যেটা একজন খেলোয়াড়ের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে।’
মেসির প্রতিভা সম্পর্কে যে তাঁর কোনো সংশয় নেই, সেটির প্রমাণ হয়ে আসবে পচেত্তিনোর পরের কথাটি। যে ডিয়েগো ম্যারাডোনা তাঁর চোখে ‘ঈশ্বরতুল্য’ বলে সব সময় শোনা যায়, সেই ম্যারাডোনার সঙ্গেই মেসির তুলনা টেনেছেন পচেত্তিনো, মেসির ব্যাপারে এভাবে (সমালোচনার সুরে) কথা বলা ঠিক নয়। ম্যারাডোনার ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই। আমি কোনো সাধারণ খেলোয়াড়ের কথা বলছি না। মেসিও ডিয়েগো ম্যারাডোনার পর্যায়েরই।