গতকাল চ্যাম্পিয়নস লিগে নিজেদের ৩১তম সেমিফাইনাল খেলেছে রিয়াল। ৬৭ বছরে একটি দলের ৩১ বার সেমিফাইনাল খেলার পরিসংখ্যান আরও একবার অবিশ্বাস্য শব্দটি লিখতে বাধ্য করে। এই ৩১ বারের মধ্যে ১৭ বারই সেমিফাইনাল–বাধা পেরিয়েছে তারা। চ্যাম্পিয়নস লিগে এমন ইতিহাস বরাবরই রিয়ালের প্রেরণার নাম। কিন্তু কাল এই ইতিহাসই ছিল রিয়ালের বিপক্ষে।
গতকালের আগপর্যন্ত ৩০টি সেমিফাইনালের মধ্যে ১৪টি সেমিফাইনাল থেকে হতাশায় বিদায় নিয়েছে রিয়াল। এর মধ্যে দুটি ম্যাচে প্রথম লেগে জিতেও বাদ পড়েছে রিয়াল। চারবার প্রথম লেগে ড্র করে হেরেছে তারা। আর বাদবাকি আটবার প্রথম লেগে হেরেছে রিয়াল। রিয়ালের সেমিফাইনালে প্রথম লেগে হেরে যাওয়ার সর্বমোট রেকর্ডও আট।
অর্থাৎ সেমিফাইনালে প্রথম ম্যাচ হেরে কখনো পরের লেগে সে ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি দলটি। সবচেয়ে কাছাকাছি গিয়েছিল ২০১১-১২ সালে। সেবার দ্বিতীয় লেগে জিতে ম্যাচটা অতিরিক্ত সময় ও পেনাল্টি নিয়েছিল রিয়াল। কিন্তু পেনাল্টি শুটআউটে সের্হিও রামোস ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো হতাশ করেছিলেন।
এই রেকর্ডের শুরু ১৯৬৮ সালে। সেবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মাঠে ১-০ গোলে হেরে ঘরের মাঠে ৩-৩ গোলে ড্র করেছিল রিয়াল। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইউনাইটেডই। ১৯৭৩ সালেও প্রতিপক্ষের মাঠে হেরে বসেছিল (২-১) রিয়াল। ঘরের মাঠেও সেবারের চ্যাম্পিয়নের কাছে হারতে হয়েছিল তাদের।
১৯৮৭ সালে বায়ার্ন মিউনিখের মাঠে ৪-১ গোলে হারের পর নিজেদের মাঠে ন্যূনতম ব্যবধানের (১-০) জয় রিয়ালের কোনো কাজে আসেনি। ২০০১ সালে একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দুই লেগেই (০-১, ১-২) হেরেছিল তারা। ২০১১ সালে ঘরের মাঠে লিওনেল মেসির দুই গোলের পর ক্যাম্প ন্যুতে ১-১ ড্র রিয়ালকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দিয়েছে। ২০১২ সালে বায়ার্নের মাঠে ২-১ গোলের হারের নিজেদের মাঠে ২-১ গোলের জয়। এরপরের গল্পটা একটু আগেই জেনেছেন।
পরের বছরই একই ভাগ্য রিয়ালের। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের মাঠে ৪-১ গোলে হার। রবার্ট লেভানডফস্কির সে ৪ গোলের জবাব বার্নাব্যুতে দিতে পারেনি রিয়াল। ঘরের মাঠে ২-০ গোলের জয় যথেষ্ট হয়নি। সর্বশেষ ২০১৫ সালে জুভেন্টাসের মাঠে ২-১ ব্যবধানে হেরে যাওয়া কার্লো আনচেলত্তির রিয়াল ঘরের মাঠে ১-১ গোলে ড্র করে ছিটকে পড়েছিল।
গতকাল তাই ইতিহাস ছিল ম্যানচেস্টার সিটির পক্ষে। কিন্তু রিয়াল যে শুধু ইতিহাস ধারণ করে না, ইতিহাস নতুন করে গড়েও!