ফুটবলে অচেনা, গুণে মেসি-রোনালদোকেও ছাপিয়ে
চেক প্রজাতন্ত্রের হয়ে ২০১৭ সালে অভিষেক। খেলেছেন গত ইউরোতেও। ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে উদিনেসে, সাম্পদোরিয়া ও হেতাফে ঘুরলেও জেতা হয়নি কিছুই। তেমন ডাকাবুকো কেউ হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
কিন্তু এই ইয়াকুব ইয়াঙ্কতোরই এমন কিছু গুণ আছে, যা লিওনেল মেসি কিংবা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরও নেই। সেগুলো অবশ্য মাঠের বাইরের দক্ষতা; থাকতেই হবে এমন শর্ত নেই। অনেকটাই ‘যিনি রাঁধতে জানেন তিনি চুলও বাঁধতে জানেন’ প্রবাদের মতো। থাকলে তাঁকে একটু আলাদা চোখে দেখা যায়।
এই যেমন, ইয়াকুব ইয়াঙ্কতো ২৫ বছর বয়সে ফুটবলার, চিত্রকর, ব্যবসায়ী। দখল আছে চারটি ভাষায়, এখন পড়াশোনা করছেন রাশিয়ান ভাষা নিয়েও। প্রতিভার খনি আর কি! তার মধ্যে ছবি আঁকতেই বেশি ভালো লাগে ইয়াঙ্কতোর।
শৈশবে তুলি হাতে আঁকার প্রেরণা পেয়েছেন চেক মাস্টার আলফানসো মুচো, জোসেফ লাডাদের কাছ থেকে। একই বয়সে লাথি মেরেছেন বলেও। হাতে তুলি আর পায়ে বল আরকি।
স্লাভিয়া প্রাহার বয়সভিত্তিক দলে ২০০২ সালে যোগ দেন ইয়াঙ্কো। ১৮ বছর বয়সে পাড়ি জমান ইতালিতে। উদিনেসে থেকে ধারে আসকোলি হয়ে পরে আবারও ফেরেন উদিনেসেতে। দেড় কোটি ইউরোয় ২০১৮ সালে যোগ দেন সাম্পদোরিয়ায়, গত বছর সেখান থেকে স্পেনের ক্লাব হেতাফেতে।
ইতালির জেনোয়া শহরে (সাম্পদোরিয়া) থাকার সময়ে বাস্কেটবল কিংবদন্তি কোবি ব্রায়ান্টের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটা কিছু করার তাড়না অনুভব করেন ইয়াঙ্কতো। গত বছর ২৬ জানুয়ারি কোবির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি ভিডিও প্রকাশ করে সাম্পদোরিয়া।
ভিডিওতে দেখা যায়, নীল হুডি পরা এক ব্যক্তি তুলি হাতে ছবি আঁকছেন আর সে ছবিটা কোবি ব্রায়ান্টের। ছবি আঁকা শেষে হুডি খুলে নিজের পরিচয় দেন আঁকিয়ে। ইয়াঙ্কতো!
ফুটবলারদের ছবিও আঁকেন তিনি। আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার পাপু গোমেজ এবং ইতালিয়ান স্ট্রাইকার আন্দ্রেয়া পেতানিয়া যখন আতালান্তায় ছিলেন, তাঁদের ছবিও এঁকেছেন ইয়াঙ্কতো।
মজার বিষয়, একটি জায়গায় ইয়াঙ্কতো ও লিওনেল মেসির মিল আছে। মেসি এমনিতে ডানহাতি হলেও ফুটবল খেলেন বাঁ পায়ে। ইয়াঙ্কতোও তেমনি ছবি আঁকেন ডান হাতে, কিন্তু ফুটবলার বাঁ পায়ের। নিজের আঁকা প্রতিটি ছবিতেই সই আছে তাঁর।
এত সব গুণের মধ্যে ব্যবসায়ী পরিচয়ে একবার ফোর্বস সাময়িকীতেও নাম তুলেছেন ইয়াঙ্কতো। ৩০ বছরের কম বয়সী সেরা উদ্যোক্তাদের তালিকায় উঠে এসেছেন তিনি। প্রাগে একটি খেলাধুলার একাডেমি তৈরিতে ১২ লাখ ইউরো ঢেলেছেন ইয়াঙ্কতো।
তাঁর ডাক নাম ‘সাম্পি’র নামে এই একাডেমির নামকরণ। ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রস-কান্ট্রি স্কিয়ার সাম্পা লাউনেনের নামে ইয়াঙ্কতোর নাম রেখেছিলেন তাঁর বাবা।