বার্তোমেউ উৎখাতে রইল বাকি গণভোট

বার্সেলোনা সভাপতি জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউছবি: টুইটার

সমর্থকদের দাবির মুখে বার্সেলোনা সভাপতির পদ ছেড়ে দেওয়ার মতো লোক নন জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউ। অগত্যা অন্য পথে হেঁটেছেন বার্সা সমর্থকেরা। গণস্বাক্ষর আদায় করে একটা গণভোটের আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তাঁরা। গণভোট আয়োজন করে বার্তোমেউকে উৎখাত করার চেষ্টা করছেন। সে পথে তাঁরা অনেকটা এগিয়েও গেছেন। সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, অনাস্থার গণভোট আয়োজন করতে যে পরিমাণ সঠিক স্বাক্ষরের প্রয়োজন ছিল তা জোগাড় করেছেন সমর্থকেরা।

স্প্যানিশ রেডিও ‘ওন্দা চেরো’র ক্রীড়া সংবাদকর্মী আলফ্রেদো মার্তিনেজ আজ সন্ধ্যায় টুইট করেন, ‘বিষয়টি এর মধ্যে আনুষ্ঠানিক। (ভোটসংখ্যা) ১৬ হাজার ৫২১ এর বেশি। অর্থাৎ বার্তোমেউয়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে (বোর্ড পরিচালকেরা তার আগেই পদত্যাগ না করলে)।’

বার্সা বোর্ড পরিচালকেরা এর মধ্যে পদত্যাগ করলে আর অনাস্থা ভোটের দরকার হবে না, তখন এমনিতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বার্তোমেউয়ের বিরুদ্ধে এই অনাস্থা ভোটের কার্যক্রম শুরু করেছে ‘মেস কে উনা মোচিও’ (আন্দোলনের চেয়েও বেশি কিছু) নামে ক্লাবের কিছু সদস্যের গ্রুপ।

স্বাক্ষর সংগ্রহের বাক্স নিয়ে বার্সার সমর্থকগোষ্ঠী
ছবি: টুইটার

মোট ২০,৬৮৭টি স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয় গত ১৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এর মধ্যে সঠিক ভোট কতটি, নিয়ম অনুযায়ী বার্সেলোনার পক্ষ থেকে সেটি গণনার কার্যক্রম শুরু হয় গত ২৯ সেপ্টেম্বর। অনাস্থা ভোট আয়োজন করতে প্রয়োজন ছিল ন্যূনতম ১৬,৫২১টি সঠিক স্বাক্ষর। সংবাদমাধ্যম ‘গোল’ জানিয়েছে, গণনা শুরুর নবম দিনের মধ্যেই সঠিক স্বাক্ষরসংখ্যা এ লক্ষ্য ছাড়িয়ে যায়।

মোট কতটি স্বাক্ষর ঠিক, সেটির সংখ্যা যাচাই–বাছাই করা হবে পরবর্তী ধাপে যাওয়ার আগে এবং তা ১০ অক্টোবরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। গণনার পুরো এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর ক্লাব সভাপতির বিরুদ্ধে গণভোট আয়োজন করতে ১০–২০ কার্যদিবস সময় পাবে বার্সা। নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের আগ পর্যন্ত তা অনুষ্ঠিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছে সংবাদমাধ্যম।

বার্তোমেউকে বার্সা সভাপতির পদ থেকে হটাতে গণভোটে বার্সার দেড় লাখেরও বেশি নিবন্ধিত সদস্যের ন্যূনতম ৬৬.৬ শতাংশ (দুই–তৃতীয়াংশ) ভোট তাঁর বিপক্ষে পড়তে হবে। বার্সার সভাপতি পদপ্রার্থী ভিক্টর ফন্ত এ কার্যক্রমের পেছনে মন্ত্রণা দিচ্ছেন। এ ছাড়াও ৮টি সমর্থকগোষ্ঠী জড়িত রয়েছে।

বার্সায় সভাপতি হিসেবে বার্তোমেউকে ব্যর্থ মনে করছেন অনেক সমর্থক। ক্লাবের আর্থিক বিবরণীতে দিনে দিনে ক্লাবের রুগ্ন অবস্থা ফুটে উঠছে। পরশুই আর্থিক বিবরণী প্রকাশ করে বার্সা জানিয়েছে, তাদের এই মৌসুমে ক্ষতি হয়েছে ৯৭ মিলিয়ন বা ৯ কোটি ৭০ লাখ ইউরো, আর দায়ের পরিমান দাঁড়িয়েছে ৪৮৮ মিলিয়ন বা ৪৮ কোটি ৮০ লাখ ইউরো! দলবদলের বাজার, খেলোয়াড় ব্যবস্থাপনায় বার্তোমেউর অদক্ষতার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছেন সমর্থকেরা। গত মাসে সভাপতির ওপর ক্ষোভ উগরে দিয়ে ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। পরে অনেক জল গড়ানোর পর থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মেসি।

আগামী মার্চে এমনিতেই বার্সার নতুন সভাপতি নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। বার্সা সভাপতি হিসেবে এ মৌসুম পর্যন্ত মেয়াদ আছে বার্তোমেউয়ের। কিন্তু অনাস্থা ভোটে হারলে মেয়াদ পূরণের আগেই সভাপতির পদ ছাড়তে হবে তাঁকে। স্থানীয় কিছু সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বার্তোমেউ তার আগেই পদত্যাগ করতে পারেন। তবে ইএসপিএন বিভিন্ন সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে খবরটা নিশ্চিত করতে পারেনি।