চাপটা নিশ্চিতভাবেই বাড়ল রোনাল্ড কোমানের ওপর। মুখে তাঁকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলে হুমকিও দিয়ে রেখেছেন বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা। বলেছেন, প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিতে হাত কাঁপবে না। সেটা যে বিদায়, অর্থাৎ ‘লাল কার্ড’ তা খুলে না বললেও চলে।
বার্সায় আপাতত ‘হলুদ কার্ড’ দেখলেও মাঠে কোমানের কপাল খারাপ। কাদিজের মাঠে গোলশূন্য ড্র করেছে বার্সা। ম্যাচের একদম শেষ মুহূর্তে ডাগ আউটে লাল কার্ড দেখেন কোমান। রাগে অগ্নিশর্মা ছিলেন এ ডাচ কোচ।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুঞ্জন চলছে, কাদিজের বিপক্ষে জিততে না পারলে শেষ হতে পারে বার্সায় কোমান-অধ্যায়। লাপোর্তা অবশ্য বলে দিয়েছেন, কাদিজ ম্যাচের ফলে কোমানের ভবিষ্যত নির্ভর করছে না। তবু কাদিজের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগির পর তাঁর ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই।
মাঠের খেলা তেমন পাল্টাতে পারেননি কোমান। প্রথমার্ধে গোলমুখ খুলতে পারেনি তাঁর দল। দুই প্রান্ত দিয়ে ক্রস-নির্ভর খেলার চেষ্টা করেছে। বিরতির পর তুলনামূলক ভালো খেলেছে বার্সা। প্রথম ১০ মিনিটের মধ্যে গোলের দারুণ দুটি সুযোগ নষ্ট করেন বার্সা ফরোয়ার্ড মেম্ফিস ডিপাই।
৬৫ মিনিটে মিডফিল্ডার ফ্রেঙ্কি ডি ইয়ং লাল কার্ড দেখায় ১০ জনে পরিণত হয় বার্সা। কাদিজ এরপর বেশ কিছু গোলের সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি।
বার্সা গোলকিপার মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন বিরতির পর দারুণ দুটি সেভ করেন। কাদিজ ফরোয়ার্ড আলভারো নেগ্রেদের বাঁ পায়ের শট ডাইভ দিয়ে রুখে দেন। হার এড়ানোয় জার্মান গোলকিপারের কাছে ঋণী থাকবে বার্সা। শেষ দিকে কাদিজ উইঙ্গার সালভি সানচেজ তাঁকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। দারুণ দক্ষতায় রুখে দেন টের স্টেগেন।
প্রতিপক্ষের পা থেকে বল দখল করতে গিয়ে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ডি ইয়ং। ডাচ মিডফিল্ডারকে 'লঘু পাপে গুরুদন্ড' দেওয়া হয়েছে কি না, তা প্রশ্নসাপেক্ষ। ডাগ আউটে তখন থেকেই গজরাচ্ছিলেন কোমান। যোগ করা সময়ের একদম শেষ মুহূর্তে গিয়ে মেজাজ আর ধরে রাখতে পারেননি। লাল কার্ড দেখতে হয়।
মাঠে তখন আরেকটি বল ঢুকে পড়েছিল। সের্হিও বুসকেতস সে বলে লাথি মারেন। খেলা থামাতে তখন কাদিজের এক খেলোয়াড়কে কড়া ভাষায় কিছু বলেন কোমান। ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ রাগ ঝাড়লেন, ‘চতুর্থ রেফারিকে শুধু বলেছি, মাঠে দুটো বল। এই দেশে কিছু না বললেও বের করে দেওয়া হয়। খুব শান্তভাবে রেফারিকে জিজ্ঞেস করেছি। কিন্তু কী আর করা, এটা আমার সমস্যা নয়।’
বার্সা কিন্তু ম্যাচটা জেতার সুযোগ পেয়েছে। যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে বল বাইরে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন ডিপাই। দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরুর কিছুক্ষণ পর ডি ইয়ংয়ের চিপ থেকে আলতো টোকা দিলেই গোল পেতেন। বলে ঠিকমতো পা-ই ছোঁয়াতে পারলেন না!
৬৮ মিনিটে লুক ডি ইয়ংকে তুলে কুতিনিওকে মাঠে নামান কোমান। মাঝ মাঠে তেমন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান। বদলি হয়ে নামা সার্হি রবার্তো দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে ভালো খেলেছেন।
অন্য ম্যাচে ওসাসুনাকে ৩-১ গোলে হারায় রিয়াল বেতিস। গ্রানাডার বিপক্ষে ৩-২ গোলে জিতেছে রিয়াল সোসিয়েদাদ।
লা লিগায় শেষ পাঁচ ম্যাচে এ নিয়ে দুই জয় পেল বার্সা। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে শেষ তিন ম্যাচ জয়হীন দলটি। চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘরের মাঠে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে নাস্তানাবুদ হওয়ার পর লিগে গ্রানাডার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র, এরপর কাদিজের মাঠে গোলই করতে পারল না কোমানের দল।
৫ ম্যাচে বার্সার সংগ্রহ মাত্র ৯ পয়েন্ট, অবস্থান সাতে। মাঠে দল ভালো করলে তবু মাঠের বাইরে কোমানকে নিয়ে বিতর্ক সামাল দিতে পারতেন বার্সা সভাপতি। কিন্তু আসল কাজ, মাঠের খেলাতেই ব্যর্থ হচ্ছেন কোমান।
লাপোর্তা এখন কি করবেন?