বার্সা-রিয়ালের উচিত ইংলিশ ক্লাবগুলোর পথে হাঁটা?

রিয়াল-বার্সা-আতলেতিকোসহ ১২ দল মিলে গড়তে চেয়েছে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ।ছবি: রয়টার্স

এক দিনের মধ্যেই কি তবে শেষ যত হাঁকডাক!

ইউরোপের ফুটবলে বদল আনার ডাক দিয়ে এক দিন আগেই ‘কুলীন’ ১২টি ক্লাব ইউরোপিয়ান সুপার লিগের ঘোষণা দিয়েছিল। উয়েফার আয়োজনে চ্যাম্পিয়নস লিগ আর ইউরোপা লিগের বদলে টুর্নামেন্টটা আনছে তারা, এ-ই ছিল ঘোষণা। যেটিকে বলা হচ্ছিল বিদ্রোহী লিগ!

ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ সুপার লিগ আয়োজন করতে ছিলেন বদ্ধ পরিকর।
ফাইল ছবি

রিয়াল মাদ্রিদের সভাপতি ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ আর জুভেন্টাসের আন্দ্রেয়া আনেয়েল্লি এর পেছনে সবচেয়ে বড় নাটের গুরু। তাঁদের পরিকল্পনার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল বার্সেলোনা, আতলেতিকো মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, লিভারপুল, চেলসি, ম্যানচেস্টার সিটি, আর্সেনাল, টটেনহাম, এসি মিলান আর ইন্টার মিলান।

ফুটবলে বদলটদল আর কী! সাদা চোখের বিশ্লেষণই বলে দিচ্ছিল, লোভই এই ‘বিদ্রোহে’র মূল কারণ। চ্যাম্পিয়নস লিগ থেকে যে টাকা পাচ্ছিল, তাতে ক্লাবগুলোর পেট হয়তো ভরছিল, তবে মন ভরছিল না নিশ্চিত। এর মধ্যে করোনাভাইরাস আসায় ক্লাবগুলোর অর্থের বানে টান লেগেছে। ফল? তড়িঘড়ি করে ‘বিদ্রোহে’ নামল ১২ ক্লাব!

কিন্তু লোভের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিদ্রোহের যে দম থাকে না!

ইতিহাস তা-ই বলে। ইতিহাস আরেকবার শিখিয়ে দিয়ে গেল ইউরোপের কুলীন ক্লাবগুলোকেও।

ক্লাবের সমর্থক, খেলোয়াড়, কোচ কী চান; তার তোয়াক্কা না করে ক্লাবগুলোর অর্থলোভী মালিকপক্ষ বিদ্রোহী টুর্নামেন্টে টেনে নিয়ে গেল ক্লাবগুলোকে। রিয়াল মাদ্রিদ, লিভারপুল, এসি মিলান, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, বার্সেলোনা...ক্লাবগুলোর এত বছরের কৌলিন্যের ভাগ এই মালিকদের আছে, কিন্তু সেগুলোকে নিজেদের স্বার্থে, নিজেদের লোভে ব্যবহারের অধিকার তো কেউ দেয়নি তাঁদের!

সুপার লিগে লিভারপুল যোগ দেওয়ায় ক্লাবের মালিকপক্ষের ওপর খেপেছেন লিভারপুল সমর্থকেরা। ব্যানার নিয়ে এসেছেন ক্লাবের আঙিনায়।
ছবি: টুইটার

সমর্থকেরা তা-ই মনে করিয়ে দিলেন! লিভারপুল থেকে শুরু, ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’কে বিশ্বাসে গেঁথে নেওয়া সমর্থকেরা ক্লাবটার মালিকপক্ষ এফএসজিকে জানিয়ে দিলেন, ‘এ বেলা তোমরা একাই হাঁটবে! ’ একে একে ইংল্যান্ডের সব ক্লাবের সমর্থকেরা বিদ্রোহে নামলেন। ওদিকে উয়েফা-ফিফা এই টুর্নামেন্টে যাওয়া ক্লাবগুলোকে নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে। ফল? ইংল্যান্ডের ছয় ক্লাব কাল রাতে সরে গেছে বিদ্রোহী লিগ থেকে। বিদ্রোহ? দমিত!

কিন্তু স্পেন থেকে এখনো কোনো আওয়াজ আসেনি। ইতালি থেকেও নয়। বার্সা-রিয়াল কিংবা জুভেন্টাস-মিলানের মতো ক্লাবগুলো কী করবে? সুপার লিগ যে আর হচ্ছে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত। এখন শুধু বাকি ছয় ক্লাবেরও সরে আসার ঘোষণার অপেক্ষা। কিন্তু তা কি আসবে? নাকি পেরেজ-আনেয়েল্লি কিংবা বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তার মতো লোকজন অন্য কোনো বিকল্পের খোঁজে আছেন?

পাঠক, আপনার কী মনে হয়, বার্সা-রিয়াল-জুভের মতো ক্লাবগুলোরও উচিত ইংলিশ ক্লাবগুলোর পথ অনুসরণ করা?