বিনয়ী নেইমার মনে করিয়ে দিচ্ছেন রোনালদিনিওকে
মাঠের ভেতরের নেইমারের মতো মাঠের বাইরের নেইমারকে নিয়েও কম আলোচনা হয় না। নেইমার আবেগপ্রবণ, উদ্ধত, দুর্বিনীত, বেপরোয়া জীবন যাপন করেন—কত অভিযোগ তাঁকে নিয়ে সবার। কিন্তু পিএসজির কোচ মরিসিও পচেত্তিনোর কথা শুনলে মনে হবে, নেইমার আসলে তেমন কেউ নন। তাঁর ভেতরেও লুকিয়ে আছে নরম মনের একজন মানুষ। যিনি দিন শেষে আর দশজন বাধ্য শিষ্যের মতোই একজন। যিনি কোচের কথা শোনেন, নতুন কিছু শিখতে চান।
টানা দুই বছর চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ওঠার স্বপ্নে বিভোর পিএসজি। গতবার তীরে এসে তরি ডুবেছিল, ফাইনালে হেরেছিল বায়ার্নের কাছে। এবার তেমনটা হতে দিতে চায় না। ডাগআউটে এখন টমাস টুখেলের জায়গায় মরিসিও পচেত্তিনো। নতুন কোচের অধীনে পিএসজি আবারও স্বপ্ন দেখছে সেই এক শিরোপার, যে শিরোপা তাদের অর্জনের খাতায় নেই। আর সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে পিএসজির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় নেইমার। চ্যাম্পিয়নস লিগের স্বপ্ন পূরণের জন্য পচেত্তিনো-নেইমার জুটি সফল হওয়া বড্ড দরকার। আর সফল হওয়ার জন্য দুজনের বোঝাপড়াটা ভালো হওয়া দরকার বেশ। পচেত্তিনো জানিয়েছেন, সে বোঝাপড়াটা তাঁদের মধ্যে বেশ ভালোই আছে। আর সেটা আছে নেইমারের মানবিক কিছু গুণের কারণেই।
পিএসজির কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বেশি দিন হয়নি। এর মধ্যেই নিজের নতুন এই শিষ্যকে নিপাট বিনয়ী বলেই মনে হয়েছে পচেত্তিনোর, ‘নেইমারের মতো বিশ্বমানের খেলোয়াড়কে কোচিং করানোর জন্য অত বেশি কিছু করতে হয় না আসলে। প্রথম দিন থেকেই ও আমার সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখিয়েছে। ও অনেক বিনয়ী, সব সময় কথা শোনে। প্রতিটি নির্দেশনা মনোযোগ দিয়ে শুনে সেটা মাঠে প্রয়োগ করার চেষ্টা করে।’
নেইমারদের মতো অমিত প্রতিভাধর খেলোয়াড়দের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনার জন্য একজন কোচের কী করতে হয়, সেটাই এক ফাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন পচেত্তিনো, ‘ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়দের মধ্যে বিশেষ কিছু থাকে। তারা ফুটবল খেলতে পছন্দ করে, কারণ তাদের কাছে এটা নৃত্যশিল্পের মতো মনে হয়। তাদের খেলা দেখলে মনে হয় তারা নাচছে। আমি যখন পিএসজির খেলোয়াড় ছিলাম, তখন রোনালদিনিও আমার সতীর্থ ছিল। আর এখন নেইমারকে পেয়েছি শিষ্য হিসেবে। তাদের দাম দিতে হয়, ভালো অনুভব করাতে হয়, খুশি রাখতে হয়। তাহলেই তাদের কাছ থেকে সেরাটা বের করে আনা যায়।’
গত নয় বছরের মধ্যে সাতবার ঘরোয়া লিগের শ্রেষ্ঠত্ব কায়েম করা পিএসজির অধরা কিছু থাকলে সেটা এই চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপাই। পচেত্তিনো নিজেও এটা বেশ ভালোভাবে জানেন। আর জানেন বলেই এই শিরোপাকে পাখির চোখ করেছেন, ‘১০ বছর ধরে এই ক্লাবের মূল লক্ষ্য চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা। তারা প্রচণ্ড খেটে চলেছে এই স্বপ্ন পূরণ করার জন্য।’