বিরহ সইল না সাবেক বার্সা তারকার

বিরহ সইতে পারছেন না অঁরি।
ফাইল ছবি

ছিলেন ফরাসি ক্লাব মোনাকোর কোচ। সেখান থেকে অব্যাহতি নিয়ে ২০১৯ সালে নাম লিখিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের এমএলএসের ক্লাব সিএফ মন্ট্রিয়লের। সেখানে বেশ সফলই হয়েছিলেন। ২০১৬ সালের পর ক্লাবকে প্রথমবারের মতো প্লে-অফে তুলেছিলেন। কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টারেও উঠেছিল মন্ট্রিয়ল। আরও কিছুদিন থাকলে হয়তো থিয়েরি অঁরির অধীনে আরও বেশ কিছু সাফল্য পেত এমএলএসের এই ক্লাবটা। কিন্তু তাতেও বাদ সাধল করোনা।

বিশ্বব্যাপী চলতে থাকা করোনা মহামারির কারণে কত মানুষকে কত সমস্যার মুখোমুখিই না হতে হচ্ছে। এমনও হচ্ছে, এক দেশে পরিবারকে রেখে আরেক দেশে কাজ করতে যাওয়া কোনো মানুষ এই করোনার কারণে চলতে থাকা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে পরিবারের সঙ্গে দেখাই করতে পারছে না। আর এটাই হয়েছে অঁরির ক্ষেত্রেও। এমনিতেই লন্ডনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা বহুদিনের। এখানেই আর্সেনালের হয়ে খেলে নিজেকে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। সে থেকে তাঁর পরিবার লন্ডনেই থাকে। চাকরি সূত্রে কখনো ফ্রান্স, কখনো যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে অঁরিকে থাকা লাগলেও পরিবার থেকেছে লন্ডনেই।

মন্ট্রিয়লের চাকরি ছাড়লেন অঁরি।
ফাইল ছবি

এরপর আঘাত হানল করোনা। আর তাতেই আর দশটা পরিবারের মতো বিচ্ছেদ-বেদনার সৃষ্টি হলো অঁরির পরিবারেও। দিনের পর দিন সন্তানদের চেহারা না দেখে বিদেশবিভূঁইয়ে যেন একদম অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছেন অঁরি। শেষমেশ থাকতে না পেরে কোচের পদ থেকেই অব্যাহতি দিয়ে দিয়েছেন। গত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন আর্সেনাল ও বার্সেলোনার বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই কিংবদন্তি ফরাসি স্ট্রাইকার, ‘দুঃখভারাক্রান্ত মনে আজ এই বার্তাটা লিখছি আমি। ব্যক্তিগতভাবে গত এক বছর আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল। বিশ্বব্যাপী চলতে থাকা মহামারির কারণে আমি আমার বাচ্চাদের দেখতে পারিনি। দুর্ভাগ্যবশত, যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী অন্তত কয়েক মাসে এর কোনো পরিবর্তন যে হবে, সেটা মনে হয় না। এই দূরে থাকার ব্যাপারটা আমি আর আমার বাচ্চারা আর নিতে পারছি না। তাই অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমি সিএফ মন্ট্রিয়লের দায়িত্ব ছেড়ে লন্ডনে ফিরে যাচ্ছি, যেখানে আমার পরিবার থাকে।’

অঁরি যখন বার্সায় খেলতেন।
ফাইল ছবি

মোনাকোর কোচ হিসেবে অভিজ্ঞতাটা তেমন সুখকর ছিল না অঁরির। সে হিসেবে মন্ট্রিয়লের দায়িত্ব নিয়েই নিজেকে খুঁজে পেয়েছিলেন। তাই সদ্য সাবেক হওয়া চাকরিদাতাকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি অঁরি, ‘এই ক্লাবের ভক্ত, কর্মকর্তা সবাইকে ধন্যবাদ, তাঁরা আমাকে আপন করে নিয়েছিলেন। কেভিন গিলমোর, অলিভিয়ের রেনার্ড, জোয়ি ও সাপুতো পরিবারের সবাইকে ধন্যবাদ আমাকে এত বড় একটা সুযোগ দেওয়ার জন্য। খুব কঠিন একটা বছর কাটিয়েছি আমরা। এই মানুষগুলোকে নিয়ে প্লে-অফ খেলেছি, এই অভিজ্ঞতা আমি কখনো ভুলব না। সবাইকে এই যাত্রার সঙ্গী হওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের ভবিষ্যৎ যেন সফল হয়, সে কামনা করি।’

তবে বহুদিন ধরেই কানাঘুষা শোনা যাচ্ছে, ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বিভাগের দল এফসি বোর্নমাথের দায়িত্ব নিতে পারেন অঁরি। সে ক্ষেত্রে পরিবারের পাশেও থাকা যাবে, চাকরিও করা যাবে। দূরে দূরে থাকা লাগবে না। এখন আপাতত বোর্নমাথের ভারপ্রাপ্ত কোচ হিসেবে সাবেক ইংলিশ ডিফেন্ডার জোনাথান উডগেট থাকলেও মৌসুম শেষে তারা যে পাকাপাকিভাবে অন্য কাউকে দলে আনবে, এটা নিশ্চিত।

সে ‘অন্য কেউ’ কি অঁরি হবেন? দেখা যাক!