ব্রাজিল ‘শো’ চায়, নেইমার চান জিততে

ব্রাজিলের হয়ে কিছু জেতার ইচ্ছা প্রবল হয়ে উঠেছে নেইমারেরফাইল ছবি: এএফপি

ফেনোমেননের পডকাস্ট, আর সে পডকাস্টে অতিথি নেইমার। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সব সৌন্দর্য গত দুই দশকে যে তিনজনের পায়ে সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে, তাঁদের দুজন এক সঙ্গে ফুটবল নিয়ে কথা বলছেন! এমন সৌভাগ্য প্রতিদিন হয় না। দেড় ঘণ্টা লম্বা পডকাস্টে নেইমারই ছিলেন মূল বক্তা।

পডকাস্টে নেইমারকে অনেক কিছু নিয়েই কথা বলতে শোনা গেছে। সুপার হিরো সিনেমা নিয়ে আগ্রহ, কেন সুপার হিরোর গল্পকে অনুপ্রেরণা মানেন, কবে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা, অবসরের আগে পেলের মতো যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে ছাপ রাখা—অনেক বিষয়েই কথা বলেছেন নেইমার। অনুমিতভাবেই বিশ্বকাপের বছরে উঠে এসেছে বিশ্বকাপ প্রসঙ্গে। সে প্রসঙ্গে ব্রাজিলিয়ান ফুটবল সমর্থকদের চিরায়ত দর্শন উঠে এসেছে। ব্রাজিলের সমর্থকদের দেখনদারি ফুটবলের প্রতি আকর্ষণের প্রতি অমোঘ টানের কথা আবারও জানিয়েছেন নেইমার।

বর্তমানে ফুটবলে হাতে গোনা যে কজন ফুটবলার এখনো দৃষ্টিনন্দন ফুটবল উপহার দেন, নেইমার তাঁদের একজন। কিন্তু আগামী বিশ্বকাপে দেখনদারি ফুটবল বিসর্জন দিয়ে হলেও জিততে চান নেইমার।

এবারের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে চূড়ান্ত দাপট দেখিয়েছে ব্রাজিল। বাছাইপর্বের মাঝামাঝি সময়েই প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তাদের কাতার যাত্রা। কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে নেইমাররা কত আত্মবিশ্বাসী সেটা জানতে চেয়েছিলেন পূর্বসূরি। নেইমার স্বীকার করেছেন, ফিটনেসের বর্তমান যুগ তাঁদের কাজটা কঠিন করে দিয়েছেন, ‘প্রতিটি দলই ভালো করছে, ইউরোপেও, আমেরিকাতেও। কলম্বিয়ার কথা বলতে হয়, এখন ওদের বিপক্ষে খেলা কঠিন। ইউরোপের অনেক দলও এখন শারীরিক দিক দিয়ে শক্তিশালী। আমরা সেরাটাই চেষ্টা করছি।’

ব্রাজিলের জার্সিতে বরাবরই উজ্জ্বল নেইমার
ফাইল ছবি: রয়টার্স

রোনালদো এই উত্তরে সন্তুষ্ট হননি। শিরোপা লড়াইয়ে নেইমারের চোখে কারা বড় বাঁধা সেটা জানতে চেয়েছিলেন ফেনোমেনন। নেইমার পরিচিত নামগুলোর নামই বলেছেন, ‘ফ্রান্স ভালো খেলছে। জার্মানি সব সময় শীর্ষ দলগুলোর একটি। আর্জেন্টিনাও। এখন হয়তো ইতালির অবস্থা ভালো না। স্পেনও আছে, অনেক দূর যেতে পারে।’

ব্রাজিল সর্বশেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ২০ বছর হয়ে গেছে। কিছুদিন আগেই ঘরের মাঠে কোপা আমেরিকার ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার কাছে হেরে গেছেন নেইমাররা।

২০২২ বিশ্বকাপই নেইমারের শেষ বিশ্বকাপ হতে পারে
ফাইল ছবি: এএফপি

সাফল্যবুভুক্ষু ব্রাজিলের মানুষকে সন্তুষ্ট করা কঠিন, কারণ তাঁরা সাফল্য চান। কিন্তু কোনোমতে জয় পেলেও তাঁরা তৃপ্ত হন না, সত্যিকারের ব্রাজিলিয়ান ফুটবল বা ‘জোগো বোনিতো’ও থাকতে হবে খেলায়। নেইমার অবশ্য বিশ্বকাপের জন্য খেলার সৌন্দর্যে ছাড় দিতে রাজি, ‘ব্রাজিলের ব্যাপারটা তো জানেন। যদি ১-০ গোলে জিতি, তারা ‘শো’ দেখতে চায়। যদি ‘শো’ দেখিয়ে হারি, তারা খারাপ বলে। সবাইকে তো খুশি করা যায় না। তবে দল হিসেবে থিতু হচ্ছি। আমরা গোল বেশি খাই না। অনেক ম্যাচে জয় পাচ্ছি। তিতে কঠোর পরিশ্রম করছি। আমি শুধু জিততে চাই, ব্যবধান নিয়ে ভাবি না।’