ভাগ্যকেই দোষারোপ টুখেলের

বিদায় নিয়েছে টুখেলের চেলসিছবি : রয়টার্স

প্রথম লেগে নিজেদের মাঠেই চেলসি হেরেছিল ৩-১ গোলে। অনেকে তখনই চেলসির শেষ দেখে ফেলেছিলেন। নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলেন, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে হতে যাওয়া দ্বিতীয় লেগটা শুধুই আনুষ্ঠানিকতার, শেষমেশ রিয়ালই উঠবে সেমিতে।

কিন্তু দ্বিতীয় লেগে আরেকটু হলেই সেসব মানুষদের কথা গিলতে বাধ্য করে ফেলছিল চেলসি। সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে ৭৫ মিনিটে রিয়াল ৩-০ গোলে পিছিয়ে, এমন ঘটনা শেষ কবে হয়েছে, যথেষ্ট গবেষণার বিষয়। এমন ঘটনা ফুটবলপ্রেমীরা দেখলেন ওই প্রথম লেগে ৩-১ গোলে হেরে যাওয়া চেলসির কল্যাণেই। দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে তখন চেলসিই এগিয়ে, কোচ টমাস টুখেলের চোখ-মুখ তখন সেমিতে ওঠার সম্ভাবনায় উজ্জ্বল।

শেষ হাসি রিয়ালই হেসেছে
ছবি : রয়টার্স

কিন্তু নিজেদের মাঠে রিয়াল মাদ্রিদ চেলসির প্রত্যাবর্তনের গল্প চেয়ে দেখবে, তা কী হয়? নিজেদের মাঠে নিছক দর্শক থাকতে রাজি হলেন না বেনজেমা-মদরিচরা। আর দশটা ম্যাচে রিয়ালকে যেভাবে খাদের কিনারা থেকে তুলে এনেছেন, এই ম্যাচেও সেটাই করলেন এই দুই বুড়ো। প্রথমে রদ্রিগোকে দিয়ে এক গোল করালেন মদরিচ, দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন হলো ৪-৪, ম্যাচ গড়ালো অতিরিক্ত সময়ে।

আরও পড়ুন

অতিরিক্ত সময়ে করিম বেনজেমার গোলে চেলসির এত এত পরিশ্রম বৃথা গেল। বৃথা গেল রুডিগার-জেমসের সাহসী রক্ষণ, ব্যর্থ হলো ভেরনার, হাভার্টজ, মাউন্টদের হার-না-মানা আক্রমণ-কাব্য। সেমিতে উঠল রিয়ালই। চ্যাম্পিয়নস লিগের দীর্ঘ ইতিহাসে যুক্ত হলো আরেকটি অবিস্মরণীয় রাত, যেখানে পরতে পরতে রঙ বদলাতে দেখলেন ফুটবলপ্রেমীরা। যে রাতের শেষে চেলসির ভাগ্য জুটল বেদনার নীল রংটাই।

হতাশায় মুষড়ে পড়েছে শিষ্য, টুখেল নিজেও কী মুষড়ে পড়েননি?
ছবি : রয়টার্স

এত কিছুর পর নিজেদের খালি হাতে ফিরতে দেখাটা ঠিক মানতে পারছেন না চেলসির কোচ টমাস টুখেল। সমানে দুষছেন ভাগ্যকে। ম্যাচ শেষের সাক্ষাৎকারে ভাগ্যের নির্মম পরিহাসটাই বড় হয়ে দেখা দিল এই জার্মান কোচের কাছে, 'আমরা একই সঙ্গে অনেক হতাশ, এবং অনেক গর্বিত। আমরা সব মিলিয়ে চার গোল করেছি, হয়তো আরও বেশি করতে পারতাম। পরের রাউন্ডে যাওয়াটাই আমাদের প্রাপ্য ছিল। আমরা হেরেছি ভাগ্যের দোষে। আর হেরেছি ওদের খেলোয়াড়দের মানের কাছে। এমন সব ম্যাচে ভাগ্যের সহায়তাও দরকার হয়, যা আমাদের পক্ষে ছিল না।'

তবে, কোয়ার্টার থেকে বিদায় নেওয়ার পেছনে নিজেদের দোষও দেখছেন টুখেল, 'তারা স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে অনেক বেশি গোলের সুযোগ সৃষ্টি না করেও জিতেছে। সামান্য সুযোগগুলোও ওরা কাজে লাগিয়েছে, গোল করেছে। আপনি যদি আপনার ভুলের পরিমাণ কমাতে না পারেন তাহলে দুই দলের মধ্যে ব্যবধান বাড়বেই। আর সেটাই হয়েছে। আমরা দুর্ভাগা ছিলাম, কিন্তু আমাদের মনে কোনো কষ্ট নেই। এ পরাজয় এমনই, যা ক্রীড়াবিদ হিসেবে আপনাকে গর্বিত করবে।'

অবশ্য টুখেলের গর্বিত হওয়ার কারণও আছে। কয়টা দলই বা সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গিয়ে এভাবে রিয়ালের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিয়ে আসতে পারে!