মাঠে নামার আগে ‘রিয়ালের ইতিহাসে তাকিও না’
সেই জয় এখনো মনে আছে পেপ গার্দিওলার। দুই বছর আগে চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলোয় রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-২ গোলে জিতেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। চ্যাম্পিয়নস লিগে আগে চারবার মুখোমুখি হয়ে জয়খরায় ভোগার পর রিয়ালের বিপক্ষে সেটাই ছিল সিটির প্রথম জয়।
সেবারের মতো এবারও নকআউট পর্বে রিয়ালের মুখোমুখি পেপ গার্দিওলার সিটি। এবার মঞ্চটা সেমিফাইনাল। কাল তার প্রথম লেগে রিয়ালের মুখোমুখি হওয়ার আগে মাদ্রিদের ক্লাবটির ইতিহাস ভুলে যেতে বললেন সিটি কোচ।
গত এক দশকে কাঁড়ি কাঁড়ি পেট্রো ডলার ঢেলেও ইউরোপসেরার মুকুট জিততে পারেনি ইংলিশ ক্লাবটি। গার্দিওলা কোচ হয়ে আসার পর চ্যাম্পিয়নস লিগে ফাইনাল খেলেও শিরোপার দেখা পায়নি সিটি। রিয়াল অন্যদিকে ইউরোপে সবচেয়ে সফল ক্লাব।
চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে রেকর্ড ১৩ বার। গতবার ফাইনালে চেলসির কাছে হারা সিটির কোচ গার্দিওলা তাঁর শিষ্যদের বলেছেন, রিয়ালের মুখোমুখি হওয়ার আগে প্রতিপক্ষের ইতিহাস ভুলে যেতে।
ইউরোপে রিয়ালের সোনায় মোড়ানো ইতিহাসে তাকিয়ে ফিল ফোডেন-রাহিম স্টার্লিংদের আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি পড়ার ঝুঁকি দেখছেন সিটি কোচ, ‘তাদের (রিয়ালের) ইতিহাসের মুখোমুখি হতে হলে আমাদের কোনো সুযোগই নেই। পরিসংখ্যানই তাদের হয়ে কথা বলে। আমরা তাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাই। তাদের মুখোমুখি হওয়াটা সব সময়ই দারুণ পরীক্ষা, আমরা সে পরীক্ষাই দিতে চাই। ভুগলে সবাই একসঙ্গে ভুগতে চাই। ইতিহাস তো আমরা পাল্টাতে পারব না। তবে খেলাটা তো এগারোজন বনাম এগারোজনের, আর একটা বল। আমি কিংবা কার্লো তো জেতাতে পারব না। খেলোয়াড়েরাই পার্থক্য গড়ে দেবে।’
২০২০ সালে রিয়ালের কোচ ছিলেন জিনেদিন জিদান। ফরাসি কিংবদন্তির গড়া সেই দলের সঙ্গে কার্লো আনচেলত্তির দলের তেমন কোনো পার্থক্য দেখেন না গার্দিওলা। কোচ যে-ই থাক, রিয়ালের খেলার ‘ডিএনএ’ তিনি ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘তাদের কিছু খেলোয়াড় একেকটি প্যাকেজ। যেটা সবচেয়ে ভালো লাগে, কঠিন সময়ে যেমন ধরুন ০-৩ গোলে পিছিয়ে থাকতে ওদের খেলোয়াড়েরা ম্যাচটা বের করার চেষ্টা করে। ওরা বল নষ্ট করে না। বেনজেমা, কারবাহল, আলাবা, মদরিচ, ক্রুস—সবাই এভাবেই খেলে।’
রিয়ালের ঘুরে দাঁড়ানোর অভ্যাসের প্রশংসাও করলেন গার্দিওলা। চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনাল ফিরতি লেগে চেলসি ও লা লিগায় সেভিয়ার বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আনচেলত্তির দল। স্প্যানিশ কোচ গার্দিওলা মনে করেন, ভাগ্যের ছোঁয়া নয়, যোগ্যতা আছে বলেই এভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে রিয়াল, ‘এটা যোগ্যতা, কোনো দুর্ঘটনা নয়। ভাগ্যেরও কোনো ছোঁয়া নেই। তারা সবকিছুতেই খুব উঁচু মানের। লোকে বলে রিয়াল ভাগ্যবান...এসবের ভিত্তি নেই।’