তাঁর বয়সে অনেকে কোচিংয়ে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু দানি আলভেজ অন্য ধাতে গড়া মানুষ। ৩৮ বছর বয়সেও চুটিয়ে খেলতে উন্মুখ। বার্সেলোনায় কাল ব্রাজিলিয়ান রাইটব্যাকের আনুষ্ঠানিক পরিচিতিপর্বে তাঁর হাসিমুখ দেখে এমনই মনে হচ্ছিল।
ক্যাম্প ন্যু–তে প্রায় ১১ হাজার সমর্থকের সামনে আলভেজ যখন হাত নাড়ছিলেন, তখন অনেকের মনেই মেসি–আলভেজ জুটি উঁকি দিয়েছে। সে এক সময় ছিল!
ডান প্রান্তে মেসির বেশির ভাগ আক্রমণের উৎস ছিলেন আলভেজ। পায়ের কারুকাজে দুজন গড়েছেন বার্সার সোনালি সময়ের অনেক বড় একটি অংশ। দুজনের বন্ধুত্বও দারুণ। ৪৩টি ট্রফি জিতে ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে সফল খেলোয়াড় আলভেজ বার্সায় ফেরার পর নিশ্চিতভাবেই মিস করছেন মেসিকে।
কাল তাই আলভেজের পরিচিতিপর্বে মেসির বার্সায় ফেরার প্রসঙ্গও এল। সে প্রশ্নে সকৌতুক আলভেজের উত্তর, দু-তিন ঘন্টা সময় পেলেই মেসিকে ‘ধরে আনতে’ পারবেন তিনি!
২০০৮ সালে বার্সায় যোগ দেওয়া আলভেজের ২০১৬ বিদায়টা মোটেও সুখকর ছিল না। সে সময়ে জোসেপ মারিয়া বার্তোমেউর অধীন বোর্ডের বিরুদ্ধে অনেক কথাও বলেছিলেন ব্রাজিলিয়ান রাইটব্যাক। কিন্তু বার্সা যেহেতু তাঁর প্রাণের ক্লাব, আলভেজ তাই প্রাণের দাবি ফেলতে পারেননি।
বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তাকে ফোনে কয়েক দফা ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেন আলভেজ। ক্যাম্প ন্যু–তে তাঁর এক সময়ের সতীর্থ জাভি হার্নান্দেজ যেহেতু এখন কোচ, তাই দ্বিতীয়বারের মতো বার্সায় ফিরতে অসুবিধা হয়নি আলভেজের।
জাভির সবুজ–সংকেত দেওয়ার পরই আলভেজকে নিয়ে এসেছে বার্সা। এখন শুধু লিওনেল মেসি ও আন্দ্রেস ইনিয়েস্তাকে ফিরিয়ে আনলেই নিজেদের সোনালি সময়ের বেদিতে অন্যরকম এক অর্ঘ্য দিতে পারবে বার্সা। তা হবে কি না, বোঝা যাবে সময় হলেই।
তবে আলভেজ যে মেসিকে মিস করছেন, তা বোঝা গেল তাঁর কৌতুকবোধে। কে না জানে, বার্সায় মেসির সঙ্গে দারুণ সম্পর্ক ছিল আলভেজের। এ মৌসুমের আগে বার্সা ছেড়ে পিএসজিতে নাম লিখিয়েছেন আর্জেন্টাইন তারকা। সেই বার্সা, সেই ক্যাম্প ন্যু...সব থাকলেও মেসি নেই; এ বিষয়টি মেনে নেওয়া কঠিন আলভেজের জন্য। সুক্ষ্ম কৌতুকবোধে এই বাস্তবতা মেনে নেওয়ার চেষ্টা করলেন আলভেজ। বললেন, ‘আমাকে দু-তিন ঘন্টা সময় দিলে মেসিকে ধরে আনতে পারব’—যেন তিনি প্যারিসে গেলেই মেসিকে উদ্ধার করা সম্ভব!
সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে খানিকটা কৌতুক করে সাবেক সতীর্থকে প্রাপ্য সম্মানটাই দিলেন আলভেজ, ‘ইতিহাস লেখা হয়েছে আগেই। ওকে সব সময় মনে রাখা হবে। আমার দেখা সে–ই সেরা এবং সেরা সতীর্থও। কিংবদন্তিদের সবাই মিস করবে, এটাই স্বাভাবিক। আর তার সঙ্গে যদি ভালো সম্পর্ক থাকে তাহলে তো কথাই নেই। এখানে সে থাকলে অবিশ্বাস্য হতো, কিন্তু তা তো আর হচ্ছে না। আমি অনেক জায়গা ঘুরেছি, কিন্তু বার্সেলোনার মতো জায়গা হয় না।’