মেসি-নেইমার নেই, এমবাপ্পেও অনুজ্জ্বল, আবারও হোঁচট পিএসজির
দুই অর্ধের শেষ দিকে তাঁর দুটি শট লিওঁর গোলপোস্টে লেগে ফিরেছে, এর বাইরে কিলিয়ান এমবাপ্পের জন্য রাতটা ছিল ভুলে যাওয়ার মতোই। করোনা থেকে সেরে ওঠার প্রক্রিয়ায় থাকা লিওনেল মেসি আর চোটে মাঠের বাইরে থাকা নেইমার দলে নেই, এমবাপ্পেও বারবার লিওঁর জমাট রক্ষণে আটকা পড়েছেন...লিওঁর মাঠে লিগের ম্যাচে কাল তাই পিএসজিকে বেশ ভুগতে হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত যে হার নিয়েই বাড়ি ফিরতে হয়নি, এ-ই যা স্বস্তি হতে পারে পিএসজির। প্রথমে পিছিয়ে পড়েও ১-১ গোলে ড্র করে ফিরেছে প্যারিসের ক্লাবটি। এ নিয়ে লিগে সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিতেই ড্র করল মরিসিও পচেত্তিনোর দল।
লিগের শিরোপাদৌড়ে তাতে অবশ্য ক্ষতিবৃদ্ধি খুব একটা হয়নি। দারুণ অনেক তরুণ প্রতিভা নিয়ে সাজানো দল নিস ২০ ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে পয়েন্ট তালিকার ২ নম্বরে, পিএসজি তাদের চেয়ে ১১ পয়েন্ট এগিয়ে!
মেসি-নেইমার নেই, আনহেল দি মারিয়া, ইউলিয়ান ড্রাক্সলারসহ আরও অনেকেও করোনায় আক্রান্ত। সে কারণে কাল আক্রমণে এমবাপ্পের সঙ্গে মাউরো ইকার্দিকে নিয়ে দল সাজান পচেত্তিনো। কিন্তু পিএসজিকে মূলত হারের হাত থেকে বাঁচিয়েছে তাদের গোলকিপার কেইলর নাভাস আর তাদের রক্ষণের নৈপুণ্য।
পিএসজিকে বল দখলে রাখতে দিয়ে দ্রুতগতির পাল্টা–আক্রমণের কৌশল বেছে নেয় ৩-৪-২-১ ছকে নামা লিওঁ, তাদের দুই আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতা ও হুসাম আউয়ারের সমন্বয় বেশ ভুগিয়েছে পিএসজির রক্ষণকে।
পাঁচ মিনিটে পিএসজি মিডফিল্ডার আন্দের এরেরার ভুল পাস ধরে বক্সে ঢুকে পড়েন লিওঁর হুসাম আউয়ার, তাঁর শট রুখে দেন নাভাস। ১৯ মিনিটে সেই নাভাসই আবার ত্রাণকর্তা, রুখে দেন করোনা থেকে সেরে ওঠা লিওঁর ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার লুকাস পাকেতার শট।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পাল্টা–আক্রমণে বক্সে ঢুকে যাওয়া লিওঁ স্ট্রাইকার মুসা দেম্বেলের শট রুখে দেন নাভাস, আউয়ারের ফিরতি শট আটকে দেন পিএসজির এক ডিফেন্ডার।
এর মধ্যেই অবশ্য প্রথমার্ধের শুরুতেই গোল পেয়ে যায় লিওঁ। নিজেদের অর্ধ থেকে লিওঁ মিডফিল্ডার ব্রুনো গিমারেসের পিএসজির রক্ষণভেদী বাতাসে ভাসানো থ্রু ধরে বক্সে ঢুকে যান পাকেতা, তাঁর আড়াআড়ি শট আটকানোর সাধ্য ছিল না নাভাসের।
বিরতিতে পিছিয়ে থাকা পিএসজি বিরতির পরও খুব একটা গুছিয়ে উঠতে পারছিল না। কিন্তু সেখান থেকে কোচ পচেত্তিনোর দুই বদলেই ম্যাচ ঘুরে যায়। ৬৯ মিনিটে একসঙ্গে তিনটি বদল আনেন পচেত্তিনো—রাইটব্যাক কলিন দাগবার বদলে থিলো কেহেরের আর দুই মিডফিল্ডার আন্দের এরেরা ও লিয়ান্দ্রো পারেদেসের বদলে জাভি সিমন্স আর এদুয়ার্দ মিশু।
সাত মিনিট পরই গোল পায় পিএসজি, গোলে তিন বদলিরই ছোঁয়া! গোলদাতা কেহেরের, গোলটি এসেছে মিশুর পাস থেকে, তার আগে আক্রমণ গড়ে ওঠার পথে অবদান আছে সিমন্সেরও।
জয় না পেলেও শেষ দিকে গোল বের করে নেওয়াতে তৃপ্তি খুঁজে নিচ্ছেন কেহেরের, ‘আমরা যা চেয়েছিলাম তা হয়নি, আরও ভালো খেলতে হতো। তবে শেষ দিকে এসে গোল পাওয়া আমাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা বোঝায়।’
লিওঁ মিডফিল্ডার ব্রুনো গিমারেস অবশ্য অতটা হতাশ নন, ‘ফলটা যেমন চেয়েছি তেমন হয়নি ঠিকই, তবে আমরা ম্যাচের অনেকটাজুড়েই দাপট দেখিয়েছি। আশা করি, মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে এই মানসিকতা নিয়ে খেলে যেতে পারব।’