ম্যারাডোনা–মুলারও ছিলেন ব্যালন ডি’অরের রাতে

ব্যালন ডি’অর হাতে লিওনেল মেসি। কাল রাতে প্যারিসেছবি: এএফপি

গত বছর এই নভেম্বরেই তিনি চলে যান। এ বছর নভেম্বরে তাঁকে স্মরণ করছে ফুটবল বিশ্ব। ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানটা যেহেতু এই নভেম্বরেই আর লোকটাও ডিয়েগো ম্যারাডোনা—কীভাবে তাঁকে ভুলে থাকা সম্ভব!

প্যারিসে থিয়েখ দু শাতেলে ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে তাই পূর্বসূরিকে স্মরণ করলেন লিওনেল মেসি। রাতটি ছিল পিএসজির এই আর্জেন্টাইন তারকার। সপ্তমবারের মতো জিতেছেন বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ব্যালন ডি’অর।

ম্যারাডোনার প্রয়াণের মাসে পুরস্কারটি জিতে মেসি কিংবদন্তিকে স্মরণ করবেন না, তা কী হয়! গত বছর ২৫ নভেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো ’৮৬ বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সপ্তম ব্যালন ডি’অর জেতা মেসি।

অনুষ্ঠান চলাকালে জায়ান্ট স্ক্রিনে ম্যারাডোনার খেলোয়াড়ি জীবনের কিছু ফুটেজ দেখানোর সময় মেসি তাঁকে স্মরণ করে বলেন, ‘বাসায়ই তাঁর মৃত্যুসংবাদ পাই। খবরটা ছড়িয়ে পড়ার আগে বাবা জানতে চাইলেন ডিয়েগোর খবর শুনেছ? মারা গেছে। তিনি ভালো নেই, এটা জানতাম। কিন্তু সেটা মারা যাওয়ার মতো, তা ভাবিনি। খবরটা ছিল ভয়ংকর।’

ম্যারাডোনার সঙ্গে নানা সময়ের স্মৃতিচারণাও করেন মেসি, ‘ডিয়েগোর সঙ্গে প্রথম পরিচয় তাঁর একটি অনুষ্ঠানে। তিনি অনুষ্ঠান শুরুর আগেই চলে এসেছিলেন। আমাকে অভ্যর্থনা জানান এবং কিছু কথাও হয়। সেটি ছিল অসাধারণ এক মুহূর্ত। অন্য সব আর্জেন্টাইনের মতো আমার কাছেও ডিয়েগোই সেরা। তাঁর সঙ্গে সময় কাটানোর সৌভাগ্য হয়েছে। তাঁর জীবনের খুব ভালো সময়ে আমি তাঁকে কোচ হিসেবে পেয়েছি। খেলা, অনুশীলন, বিশ্বকাপ—এসব তিনি খুব উপভোগ করতেন। আমাদের জন্য সেটা ছিল জীবনের দারুণ এক সময়।’

ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও লিওনেল মেসি—যখন আর্জেন্টিনার কোচ ছিলেন ম্যারাডোনা
ফাইল ছবি: রয়টার্স

২০০৮ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ ছিলেন ম্যারাডোনা। ২০১০ বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে ৪–০ গোলের হারে আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর ম্যারাডোনার কোচের দায়িত্ব ছাড়েন।

ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে ম্যারাডোনার পাশাপাশি আরও এক কিংবদন্তিকে স্মরণ করা হয়—গার্ড মুলার। গত আগস্টে না ফেরার দেশে পাড়ি জমানো এ জার্মান কিংবদন্তিকে নিয়ে কথা বলেন বায়ার্ন মিউনিখের পোলিশ স্ট্রাইকার রবার্ট লেভানডফস্কি।

বর্ষসেরা স্ট্রাইকারের পুরস্কার জেতা লেভা বর্ষসেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে হেরেছেন মেসির কাছে। মুলারকে নিয়ে লেভানডফস্কি বলেন, ‘তিনি সেরে উঠবেন আশা করেছিলাম। তাঁর পরিবার এবং বায়ার্ন মিউনিখের জন্য এটা খুব কঠিন এক দিন। আমরা দারুণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন এক খেলোয়াড়কে হারিয়েছি। বল যেখানে, তিনি সব সময় সেখানে থাকতেন। সম্ভবত শরীরের সব অংশ দিয়েই গোল করেছেন, তিনি একজন রোল মডেল। তাঁর পা দুটো আমার প্রেরণার উৎস।’

সেরা স্ট্রাইকারের পুরস্কার হাতে লেভানডফস্কি
ছবি: এএফপি

ফুটবল ইতিহাসে সর্বকালের অন্যতম সেরা গোলস্কোরার গার্ড মুলার। ১৯৭৪ বিশ্বকাপজয়ী মুলার জার্মানির জার্সিতে ৬২ ম্যাচে ৬৮ গোল করেছেন। বায়ার্নের হয়ে বুন্দেসলিগায় ৪২৭ ম্যাচে করেছেন ৩৬৫ গোল।