যেভাবে বাঁচল এরিকসেনের জীবন
সে মুহূর্তটি ছিল ভয়াবহ!
বল ধরতে এসে মুখ থুবড়ে মাঠেই পড়ে গেলেন ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন। মাঠের সবাই হতবিহ্বল। কী হলো ডেনিশ তারকার? এ সময় দূর থেকে সতীর্থের কাছে ছুটে গেলেন ডেনমার্ক অধিনায়ক সিমোন কায়ের। প্রাথমিক চিকিৎসাসংক্রান্ত নিজের যাবতীয় ধারণা তিনি প্রয়োগ করলেন এরিকসেনের জন্য। তিনি নিশ্চিত করেন, তাঁর দলের সেরা তারকার জিব যেন শ্বাসনালি আটকে না ফেলে। বুকে চাপ দিয়ে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না মাঠের বাইরে থেকে চিকিৎসকেরা এসে তাঁকে সিপিআর (বুকে চাপ দিয়ে কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস চালু রাখা) দেওয়া শুরু না করেন। সিমোন কায়েরের এ তৎপরতা এরই মধ্যে মনোযোগ কেড়েছে সারা দুনিয়ার। সবাই বলছেন, একেবারে সামনে থেকেই এ সংকট মুহূর্তে নেতৃত্ব দিয়েছেন ডেনিশ অধিনায়ক।
এরিসকসেন মাঠে পড়ে যাওয়ার পরের একটা ঘণ্টা ছিল ফুটবল দুনিয়ার জন্য চরম উৎকণ্ঠার। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে তখন প্রার্থনা—এ যাত্রায় যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন ডেনিশ তারকা। অনেকের কাছেই তাঁর ফেরাটা অসম্ভব বলে মনে হচ্ছিল। উয়েফা যখন বিবৃতি দিয়ে জানাল, এরিকসেন সুস্থ আছেন, স্থিতিশীল আছেন, তখন কায়েরের প্রাথমিক পদক্ষেপগুলোকে কৃতিত্ব দিয়েছেন সবাই।
মাঠেই এরিসকসেনের চারপাশে বলয় তৈরি করেছিলেন ডেনিশ খেলোয়াড়েরা। রেফারি অ্যান্টনি টেলর সঙ্গে সঙ্গেই খেলা থামিয়ে দিয়ে চিকিৎসকদের ডেকেছিলেন। কাল রাতে যে দৃশ্য সবাই দেখেছেন, সেটি হতবিহ্বল করে দেওয়ার মতোই এক দৃশ্য। এমন সময়ে মাথা ঠান্ডা রেখে এরিকসেনের জীবন বাঁচাতে কায়েরের পদক্ষেপগুলো যেকোনো বিচারেই ফুটবল–ইতিহাসে সেটি জায়গা করে নেবে।
এরিকসেনকে সুস্থ করে তোলার সেই ভয়ংকর কঠিন মুহূর্তগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন ডেনমার্ক দলের চিকিৎসক। তিনি জানিয়েছেন, একটা সময় এরিকসেনের হৃৎস্পন্দন বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। ম্যাচ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক মার্টিন বোসেন বলেন, ‘আমাদের মাঠে ডাকেন রেফারি। আমি নিজে প্রথমে দেখিনি, তখনো এটা পরিষ্কার ছিল যে এরিকসেন জ্ঞান হারিয়েছেন।’
এরপর ওই চিকিৎসক তাঁর চিকিৎসার ধাপগুলো বর্ণনা করেন, ‘আমি প্রথমে ওকে যখন দেখি, তখন সে নিশ্বাস নিতে পারছিল। তাঁর হৃৎস্পন্দন ছিল। কিন্তু হঠাৎ পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তখন তাঁকে সিপিআর দিতে হয়। পুরো জিনিসটাই খুব দ্রুত হয়েছে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এরিকসেনকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।’