আলফ্রেডো ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামের ম্যাচটা শেষ হলো ১-১ সমতায়। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদের মাঠে ম্যাচ বলেই সেই ড্র নিয়েও খুশি মনে লন্ডন ফিরে যেতে পারে চেলসি। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষের মাঠে একটা গোলের মূল্য কী, তা তো ভালোই জানেন চেলসির খেলোয়াড়েরা। স্টামফোর্ড ব্রিজে ফিরতি লেগে এই গোলটাই হয়ে যেতে পারে মহামূল্যবান।
একই কারণে ড্র্ করেও হয়তো স্বস্তিতে নেই জিনেদিন জিদানের রিয়াল মাদ্রিদ। লন্ডন সফরে কঠিন চ্যালেঞ্জই আসলে জয় করতে হবে রিয়ালকে।
ম্যাচের ১০ মিনিটে প্রথম সুযোগটা পায় টমাস টুখেলের চেলসি। বাঁ পাশ থেকে আসা মেসন মাউন্টের ক্রসে দারুণ হেড করে টিমো ভের্নারের দিকে বল বাড়ান ক্রিস্টিয়ান পুলিসিক। কিন্তু ভের্নারের শট পা বাড়িয়ে ফিরিয়ে দেন রিয়াল মাদ্রিদের দীর্ঘকায় গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া।
গোলের জন্য অবশ্য বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি চেলসির। মিনিট চারেক পরেই প্রায় মাঝমাঠ থেকে চেলসি ডিফেন্ডার আন্তোনিও রুডিগারের দুর্দান্ত এক লম্বা পাস যায় রিয়ালের ডি-বক্সের বাঁ পাশে থাকা পুলিসিকের পায়ে। বিপদ দেখে বেশ বেরিয়ে এসেছিলেন কর্তোয়া। কিন্তু দারুণ ভাবে বল নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে এক ডিফেন্ডার এবং কর্তোয়াকে কাটিয়ে পুলিসিক ডান পায়ের শট পাঠিয়ে দেন রিয়ালের জালে। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল বা এর উপরের ধাপে প্রথম আমেরিকান হিসেবে গোল করলেন পুলিসিক।
২৩ মিনিটেই অবশ্য সেই গোলটা প্রায় শোধ করে দিয়েছিল রিয়াল। কিন্তু করিম বেনজেমার বাঁ পায়ের শট বেরিয়ে যায় পোস্টে লেগে।
গোল শোধে মরিয়া রিয়ালের মুখে হাসি ফুটে ম্যাচের ২৯ মিনিটে। কর্নারের পর মার্সেলোর একটা বিপজ্জনক ক্রস যায় চেলসির ডি-বক্সে জটলার মধ্যে এদের মিলতাওয়ের মাথায়। রিয়াল ডিফেন্ডারের হেড ভিড়ের মধ্যে শেষ পর্যন্ত চলে যায় বেনজেমার মাথায়। দারুণ ভাবে বল নামিয়ে অসাধারণ এক ভলিতে সমতা ফেরান ফরাসি স্ট্রাইকার।
চ্যাম্পিয়নস লিগে এই মৌসুমে এটা বেনজেমার ৬ষ্ঠ ও সব মিলিয়ে ৭১তম গোল, শীর্ষ গোলদাতাদের তালিকায় রাউলের সঙ্গে এখন তিনি যৌথভাবে চতুর্থ। সামনে আছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, লিওনেল মেসি ও রবার্ট লেভানডফস্কি।
বিরতির আগে চেলসিই কিছুটা দাপুটে খেলেছে, সুযোগও পেয়েছে রিয়ালের চেয়ে বেশি। তবে সমতা ফেরানো গোলের পর ভালোভাবেই খেলায় ফিরেছে রিয়াল, তাদের মাঝমাঠের প্রাণ লুকা মদরিচের পায়েও বল দেখা গেছে বেশি।
বিরতির পর মিনিট তিনেকের মধ্যেই ১৫ গজ দূর থেকে ভের্নারের একটা শট কর্নারের বিনিময়ে বাঁচিয়ে দেন মিলিতাও।
ম্যাচের ৬৬ মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে তুলে নিয়ে রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান এদেন হ্যাজার্ডকে নামান তাঁর সাবেক দলের বিপক্ষে। কিন্তু ভিনিসিয়ুসের মতোই মাঠে প্রায় অদৃশ্য রয়ে গেছেন হ্যাজার্ড। বরং চেলসির হয়ে পুলিসিকের বদলি নামা হাকিম জিয়েশ বেশ কয়েকবার কাঁপন ধরিয়েছেন রিয়ালের রক্ষণে।
তবে আলফ্রেডো ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে বৃষ্টিঝরা সন্ধ্যায় গোল আর হয়নি। বিরতির আগের একটি করে গোল নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে দুই দলকে।
আগামী ৫ মে চেলসির মাঠ স্টামফোর্ড ব্রিজে ফিরতি লেগ খেলবে দুই দল।