রোনালদো-আলোয় জয়ের ধারায় ফিরল ইউনাইটেড
লিগে যেন জিততে ভুলেই গিয়েছিল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ম্যানচেস্টার সিটি, ওয়াটফোর্ড, চেলসি—টানা তিন লিগ ম্যাচে জয়ের মুখ দেখেনি দলটা। দলের সবচেয়ে বড় তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও ম্যাচ তিনটিতে ছিলেন নিষ্প্রভ।
গত রাতে আর সেটা হলো না। আপন আলোয় জ্বলে উঠলেন এই পর্তুগিজ তারকা। আর তাতেই আর্সেনালকে নিজেদের মাঠ ওল্ড ট্রাফোর্ডে ৩-২ গোলে হারাল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। রোনালদো নিজে করেছেন দুটি গোল। দুই গোল করেই ক্যারিয়ারে ৮০০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন।
একটি গোল করেছেন আরেক পর্তুগিজ তারকা ব্রুনো ফার্নান্দেস। ওদিকে আর্সেনালের হয়ে গোল করেছেন দুই তরুণ মিডফিল্ডার এমিল স্মিথ-রো ও মার্টিন ওডেগার্ড।
৪-২-৩-১ ছকে দলকে নামিয়েছিলেন ইউনাইটেডের ভারপ্রাপ্ত কোচ মাইকেল ক্যারিক। নতুন কোচ রালফ রাংনিক ভিসা জটিলতায় এখনো ইউনাইটেডের দায়িত্ব পুরোপুরিভাবে নিতে পারেননি। যদিও ম্যাচ শুরুর আগেই এই জটিলতা নিরসন হওয়ার কারণে মাঠে উপস্থিত থেকে ম্যাচটা দেখেছেন। সামনে রোনালদোকে রেখে দুই উইংয়ে খেলেছেন জ্যাডন সানচো ও মার্কাস রাশফোর্ড। আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডে ব্রুনো ফার্নান্দেসকে রেখে দুই রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছেন ফ্রেদ ও স্কট ম্যাকটমিনে। নিয়মিত দুই ফুলব্যাক অ্যারন ওয়ান-বিসাকা ও লুক শকে না খেলিয়ে দিওগো দালোত ও অ্যালেক্স তেয়েসকে খেলিয়েছেন ক্যারিক। আর গোলকিপার দাভিদ দা হেয়ার সামনে রক্ষণে জুটি বেঁধেছিলেন অধিনায়ক হ্যারি ম্যাগুয়ার আর লিন্ডেলফ।
ওদিকে একই ছকে নেমেছিল আর্সেনালও। সামনে অধিনায়ক পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াংকে রেখে দুই উইংয়ে খেলেছেন গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি ও এমিল স্মিথ-রো। আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডে ওডেগার্ডের পেছনে রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছেন মোহাম্মদ এলনেনি ও টমাস পার্টে। রক্ষণের দুই পাশে তাকেহিরো তোমিয়াসু আর নুনো তাভারেসকে রেখে মাঝে জুটি বেঁধেছিলেন বেন হোয়াইট আর গাব্রিয়েল মাগালহেস। প্রথম থেকেই বল পায়ে রেখে আক্রমণের পরিকল্পনা ছিল আর্সেনালের, ওদিকে ইউনাইটেড সব সময় চেয়েছে আর্সেনালের আক্রমণ সামলে হুট করে প্রতি–আক্রমণে উঠে যেতে।
১৩ মিনিটেই আজগুবিভাবে গোল খেয়ে বসে ইউনাইটেড। মার্টিন ওডেগার্ডের কর্নার ঠেকাতে গিয়ে নিজেদের ডিবক্সে সতীর্থ গোলকিপার দা হেয়ার পায়ের ওপর পা দিয়ে বসেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফ্রেদ। ব্যথায় কাতর দা হেয়া যখন গড়াগড়ি খাচ্ছেন, তখনই সে সুযোগে এলনেনির সহায়তায় বক্সের বাইরে থেকে শট মেরে দলকে এগিয়ে দেন এমিল স্মিথ-রো।
৪৪ মিনিটেই নিজের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেন ফ্রেদ ব্রুনো ফার্নান্দেসকে দিয়ে গোল করিয়ে। ইউনাইটেডের হয়ে এটা ছিল ফার্নান্দেসের শততম ম্যাচ। শততম ম্যাচে গোল পাওয়ার জন্য এর চেয়ে হয়তো ভালো পরিস্থিতি পেতেন না এই পর্তুগিজ মিডফিল্ডার!
৫২ মিনিটে এবার ইউনাইটেডের এগিয়ে যাওয়ার পালা। ডান প্রান্ত থেকে আসা রাশফোর্ডের পাস থেকে ঠান্ডা মাথায় গোল করেন রোনালদো। এই শোধ করতে দেড় মিনিটও লাগল না ইউনাইটেডের। রোনালদো-রাশফোর্ড যেভাবে একটু আগেই গোল করেছিলেন, ঠিক একইভাবে মার্টিন ওডেগার্ডকে দিয়ে এবার গোল করালেন আর্সেনালের ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি। ৬৭ মিনিটে আবারও ইউনাইটেডের ত্রাতা রোনালদো। বক্সের মধ্যে বাজেভাবে ফ্রেদকে ফেলে দিয়েছিলেন ওডেগার্ড। সেখান থেকেই পাওয়া পেনাল্টিতে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন রোনালদো। সেই স্কোরলাইন নিয়েই ম্যাচ শেষ হয়।
২১ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের সাত নম্বরে আছে ইউনাইটেড, ২৩ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম আর্সেনাল।