সফর বাতিলের পর বাফুফের হুঁশ

  • যে খেলোয়াড় তালিকা করা হয়েছে, সেখানে ১৫ জনের ২ ডোজ টিকা দেওয়া আছে।

  • সাতজনের এক ডোজ দেওয়া আছে। ছয়জনের কোনো টিকা দেওয়া নেই।

ইন্দোনেশিয়ায় খেলা হচ্ছে না বাংলাদেশ ফুটবল দলেরছবি: বাফুফে

ফিফা ও এএফসির নির্ধারিত সূচির বাইরে জাতীয় ফুটবল দলের ম্যাচ আয়োজন মানেই যেন নাটক! গত বছর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের শেষ তিন ম্যাচের আগে সৌদি আরবে গিয়ে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশ দলের। ঢাকা ছাড়ার আগের রাতে বাতিল হয়ে যায় যাত্রা। এবারও ইন্দোনেশিয়ায় গিয়ে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ খেলার ঘোষণা দেওয়ার ছয় দিনের মধ্যেই গতকাল সফর বাতিলের ঘোষণা দিয়েছে বাফুফে।

গত শনিবার জানানো হয়, নতুন কোচ হাভিয়ের কাভেরার অধীনে ২৪ ও ২৭ জানুয়ারি দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। এই ম্যাচ দুটিকে সামনে রেখে নতুন স্প্যানিশ কোচেরও চলে আসার কথা আগামীকাল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ম্যাচ দুটি হচ্ছে না। গতকাল বাফুফের পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও বাফুফের সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, ‘খেলোয়াড় ও দল–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুই ডোজ করোনার টিকা দেওয়া থাকতে হবে। কিন্তু আমাদের যে খেলোয়াড় তালিকা করা হয়েছে, সেখানে ১৫ জনের ২ ডোজ টিকা দেওয়া আছে। সাতজনের এক ডোজ দেওয়া আছে এবং ছয়জনের কোনো টিকা দেওয়া নেই।’ ইন্দোনেশিয়া সফরের সম্ভাব্য দলে কারা ছিলেন, সেটি অবশ্য জানায়নি বাফুফে।

৬ জন ফুটবলার যাঁরা এক ডোজ টিকাও নেননি, তাদের ছাড়া খেলতে চায় না বাফুফে
ফাইল ছবি
জাতীয় ফুটবল দলের সবার দুই ডোজ করোনার টিকা নেওয়া নেই বলে বাতিল করতে হয়েছে ইন্দোনেশিয়া সফরের দুটি ম্যাচ।

বিশেষ ছাড় পেয়ে দুই ডোজ টিকা ছাড়াই গত বছর বিদেশ সফর করেছে জাতীয় ফুটবল দল। কিন্তু ইন্দোনেশিয়া সরকার কঠোর হওয়ায় এবার আটকে গেছে বাংলাদেশ দল। বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ায় যেতে করোনার দুই ডোজ টিকা বাধ্যতামূলক, সেটি নাকি তাঁদের জানানো হয়েছে গত মঙ্গলবার। যাঁদের এক ডোজ দেওয়া আছে, তাঁদের কালই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি আমরা। কিন্তু তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগ খেলোয়াড়েরই দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময় হয়নি। যাঁরা এখনো টিকা দেননি, তাঁদের কারও জাতীয় পরিচয়পত্র নেই, কারও আবার পাসপোর্টের সঙ্গে জাতীয় পরিচয়পত্রের নাম–ঠিকানায় পার্থক্য আছে।’

বাফুফের তথ্য অনুযায়ী তালিকার ২৮ খেলোয়াড়ের মধ্যে ৬ জন ১ ডোজও টিকা নেননি, ৭ জন নিয়েছেন ১ ডোজ করে। এক ডোজ নেওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে কয়েকজনের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময় চলে এসেছে। এর মানে যাওয়ার আগে ২০ জনের মতো খেলোয়াড়ের ২ ডোজ টিকা দেওয়া হয়ে যেত। সঙ্গে দুই ডোজ টিকা নেওয়া নতুন কিছু খেলোয়াড় যোগ করে ম্যাচ দুটি খেলে আসা যেত কি না, সে প্রশ্ন উঠছে। বিদেশে গিয়ে ম্যাচ খেলার সুযোগ তো আর সব সময় পায় না বাংলাদেশ!

ইন্দোনেশিয়া সফর বাতিল হওয়ার পর হুঁশ ফিরেছে বাফুফের
ফাইল ছবি

এ ব্যাপারে আবু নাঈমের ব্যাখ্যা, ‘দুই ডোজ টিকা না দেওয়া খেলোয়াড়দের নাম বড় বড়। তাঁদের ছাড়া খেলতে চাই না আমরা।’ তবে তাঁদের নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি তিনি। ইন্দোনেশিয়া সফর বাতিলের পর অবশ্য বাফুফের হুঁশ হয়েছে। খেলোয়াড়দের নিজ নিজ জেলায় গিয়ে কাগজপত্র ঠিক করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ৫০ জন ফুটবলারকে দ্রুত দুই ডোজ টিকা দেওয়া নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিচ্ছে বাফুফে। গত এপ্রিলে খেলোয়াড়-কোচ-রেফারি ও কর্মকর্তাদের জন্য ৭০০ টিকা বরাদ্দ পেয়েছিল বাফুফে। কিন্তু অনেক খেলোয়াড়ের জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় সবাইকে টিকা দেওয়া যায়নি।

ইন্দোনেশিয়া সফরের জন্য লিগ পিছিয়েছিল বাফুফে। এখন যেহেতু সফরটি হচ্ছে না, তাই লিগ এগিয়ে আনা যায়। এ ব্যাপারে জানতে পেশাদার লিগ কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফের জ্যেষ্ঠ সভাপতি সালাম মুর্শেদীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। অবশ্য বাফুফের সাধারণ সম্পাদক জানান, লিগ এগিয়ে আনার সম্ভাবনা নেই—এ রকম শোনা যাচ্ছে, খেলা না হলেও জাতীয় দলের জন্য অনুশীলন ক্যাম্প আয়োজন করতে চায় বাফুফে।