সাইফ স্পোর্টিংয়ের আক্রমণভাগে নাইজেরিয়া জাতীয় দলে খেলা দুই ফরোয়ার্ড এমফোন উদোহ ও এমেকা ওগবাগ। একটু দূর অতীতে হলেও নাইজেরিয়ার হয়ে উদোহ ও ওগবাগ খেলেছেন ৩টি ও ৫টি করে ম্যাচ। স্বাভাবিকভাবে তাঁদের দিকেই তাকিয়ে থাকে সাইফ। কিন্তু স্বাধীনতা কাপে আজ সাইফকে ম্যাচ জিতিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা।
আজ কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রের বিপক্ষে ৩–২ গোলে জয় পেয়েছে সাইফ। সাইফের তিনটি গোলই স্থানীয় খেলোয়াড়দের। একটি করে গোল করেছেন জাতীয় দলের উইঙ্গার ফয়সাল আহমেদ ও রাইটব্যাক নাসিরুল ইসলাম। অন্য গোলটি বদলি নামা সাজ্জাদ হোসেনের। জোড়া গোল করে ব্যবধান কমিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার জাপানি ফরোয়ার্ড তেসুয়াকি মিসিওয়া।
স্কোরলাইন দেখে মনে হতে পারে জম্পেশ একটি ম্যাচ হয়েছে, আসলে তা নয়। একচেটিয়া খেলে ম্যাচে ৩–০ গোলে এগিয়ে যায় সাইফ। নিশ্চিত জয় ধরে খোশমেজাজে খেলতে থাকে আন্দ্রেস ক্রুসিয়ানির দল। শেষের দিকে ২ গোল হজম করে তারই খেসারত দিতে হয়েছে। তা–ও আবার ১০ জনের মুক্তিযোদ্ধার বিপক্ষে।
৪–৩–৩ ফরমেশনে ক্রুসিয়ানির নাম্বার নাইন ওগবাগ, ডান প্রান্তে উদোহ ও বাঁ প্রান্তে ফয়সাল। দুই নাইজেরিয়ানের চেয়ে ফয়সালের পারফরম্যান্স অনেক বেশি উজ্জ্বল। সমান তালে আক্রমণে উঠছেন, প্রতিপক্ষের পায়ে বল গেলে রক্ষণভাগকে সহায়তার জন্য নিচে নেমে এসেছেন। ম্যাচের শেষের দিকে উঠে যাওয়ার আগপর্যন্ত একেবারেই গোললাইন টু লাইন দৌড়ালেন।
বিদেশি ফরোয়ার্ডদের ব্যর্থতার ক্ষতে প্রলেপ দিতে হয়েছে স্থানীয়দের। ১৬ মিনিটে একই মুভে দুবার গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি ওগবাগ। স্বদেশি উদোহর সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান করে বক্সে ঢুকেছিলেন। ওগবাগের সামনে শুধু গোলকিপার মোহাম্মদ রাজিব। যে শট নিলেন তা গোলকিপারের আয়ত্তের মধ্যেই ছিল। গোলকিপার মাটিতে পড়ে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় শটও নিলেন ওগবাগ। সেটাও রাজিবের হাতের মধ্যে।
২ মিনিট পরেই সাইফকে এগিয়ে দেন ফয়সাল। বাঁ প্রান্ত থেকে কোনাকুনি বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে গোলটি করেছেন। ৪১ মিনিটে ২–০ করেছেন নাসিরুল। ওভারলেপিংয়ে উঠে উদোহর সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ান করে বক্সে ঢুকে গোলকিপারের মাথার ওপর দিয়ে জালে পাঠিয়েছেন তিনি।
বিরতিতে যাওয়ার আগেই ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা। সাইফ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার ব্যাক পাস গোলরক্ষক মিতুল হোসেন গ্রিপে নিলে গোল লাইনের প্রায় ১০ গজ দূরে ইনডিরেক্ট ফ্রি–কিক পায় মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু সে সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেননি মিশরীয় স্ট্রাইকার আহমেদ আয়মান।
দ্বিতীয়ার্ধে ওগবাগের বদলি হিসেবে নামানো হয় সাজ্জাদ হোসেনকে। ৮১ মিনিটে ৩–০ করেছেন সাজ্জাদই। উজবেকিস্তানের মিডফিল্ডার আশরোর গফুরভের কাটব্যাকে প্রথম স্পর্শেই প্লেসিং শটে জালে জড়িয়ে দেন তরুণ সাজ্জাদ।
এর আগে ৭৬ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন মুক্তিযোদ্ধার ডিফেন্ডার সাজন মিয়া। অথচ ১০ জনের মুক্তিযোদ্ধাই শেষের দিকে ২ গোল পরিশোধ করে। দুটি গোলই করেছেন জাপানি ফরোয়ার্ড তেতসুয়াকি মিসিওয়া। ৮৬ মিনিটে দিদারুলের ফ্রি–কিক থেকে জটলার মধ্যে বুকে নামিয়ে ডান পায়ের শটে ৩–১। যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে ২–০।
এই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ ‘সি’ থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে এক পা দিয়ে রাখল সাইফ। টানা দুই হারে তলানিতে মুক্তিযোদ্ধা।