আন্দ্রে রাসেল না সাকিব আল হাসান?
দুবাইয়ে আজ আইপিএল ফাইনালে চেন্নাই সুপার কিংসের মুখোমুখি হওয়ার আগে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।
সঠিক উত্তরের খোঁজ করছে কলকাতা নাইট রাইডার্সও। ভারতের সংবাদমাধ্যমেও এ নিয়ে চলছে হিসাব-নিকাশ। ফাইনালে কে বেশি কার্যকর হতে পারেন?
গৌতম গম্ভীর সরাসরি এ প্রশ্নের উত্তর দেননি। কলকাতাকে আইপিএল জেতানো সাবেক এই অধিনায়ক ক্রিকইনফোয় এক ভিডিও বার্তায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন এভাবে, ‘হ্যাঁ (রাসেলকে) খেলানো উচিত, যদি সে বল করে। বল না করলে সাকিবকে খেলানো উচিত।’
কলকাতার ‘মেন্টর’ ডেভিড হাসি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার জয়ের পর জানিয়েছিলেন, চোট সারিয়ে ফিট হওয়ার পথে রাসেল। নেটে বলও করেছেন দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের আগে।
একই ভিডিও বার্তায় দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক পেসার ডেল স্টেইন রাসেলকে খেলানোর পক্ষে। তাঁর যুক্তি, ‘রাসেল পুরো ফিট থাকলে আমি তাকে খেলাতাম। সে ফিট থাকলে কলকাতারও তাকে খেলানো উচিত। সে এমন এক খেলোয়াড় যে প্রতিপক্ষের ভাবনা পাল্টে দিতে পারে।’
চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ১০ ম্যাচে ১৬৯.৪৯ স্ট্রাইকরেটে ৩০০ রান করেছেন রাসেল। স্ট্রাইকরেট বিচারে আজকের ফাইনালে স্বাভাবিকভাবেই সাকিবের চেয়ে এগিয়ে তিনি। টি-টোয়েন্টি যে মেজাজে খেলা উচিত, বিশ্বের যেকোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি দল এ ক্ষেত্রে তাঁকে আদর্শ মেনে থাকে।
ঝামেলাটা হয়েছে রাসেল চোটে পড়ার পর। স্থগিত হওয়া আইপিএলের বাকি অংশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে শুরুর পর কলকাতার একাদশে সুযোগ পাননি সাকিব। পেস অলরাউন্ডার হিসেবে রাসেল ও স্পিন অলরাউন্ডার হিসেবে সুনীল নারাইনকে খেলায় কলকাতা।
নারাইন ব্যাটিংয়ে না হলে বোলিংয়ে ধারাবাহিকভাবে ভালো করে গেলেও রাসেল চোটে পড়েন এবং তাঁর জায়গায় সুযোগ পেয়ে যান সাকিব। দলে সুযোগ পেয়েই নিজের প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়েছেন সাকিব।
এলিমিনেটরে ৬ বলে ৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে কলকাতার কঠিন ম্যাচ সহজ করেছেন। ব্যাটিংয়ে ভালো করতে না পারলেও আরব আমিরাতে বল হাতে ভালো করছেন সাকিব। ০/২৮, ০/২৪, ১/১ ও ১/২০—চার ম্যাচে এই স্পেলগুলো তারই প্রমাণ।
সেভাবে উইকেট না পেলেও প্রতিপক্ষের রানের চাকা আটকেছেন। ফিল্ডিংয়েও তিনি যথেষ্ট কার্যকর। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কিছু ক্যাচ নেওয়ার সঙ্গে রানআউটও করেছেন। কিন্তু ব্যাটিং সামর্থ্যের কথা ধরলে রাসেল এগিয়ে। টি-টোয়েন্টিতে শেষ দিকে যেভাবে রান তুলতে হয় কিংবা যেভাবে রান তাড়া করতে হয়, এমন সব মঞ্চে ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের জন্য রাসেলের জুড়ি মেলা ভার।
যদিও ডেভিড হাসি এর আগে ফাইনালে সাকিবকে নিয়ে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন, ‘সে ভালো খেলোয়াড়। সম্ভবত আমাদের দুটি ম্যাচ জিতিয়েছে কিংবা জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাই আমি তাকে ফাইনালের ভাবনায় রাখতে চাই।’
কিন্তু রাসেলের ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে হাসির কথা শুনলে সাকিব সমর্থকেরা হতাশ হতে পারেন। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে দিল্লি ক্যাপিটালসকে হারিয়ে হাসি বলেছিলেন, ‘দিল্লির বিপক্ষে ম্যাচের আগে সে বল করেছে। তাই ফাইনালে তাকে রাখা হতে পারে।’
নারাইন, রাসেল ও সাকিবকে কলকাতা ফাইনালে যে একসঙ্গে খেলাবে না, তা মোটামুটি নিশ্চিত। নারাইন কলকাতার ‘অটোমেটিক চয়েস’ আর রাসেল-সাকিবের মধ্য থেকে যেকোনো এক অলরাউন্ডারকে বেছে নিতে হবে।
চোটে পড়ায় রাসেল ম্যাচ খেলার মধ্যে নেই। এ সুযোগে কলকাতার শেষ ম্যাচগুলো খেলেন সাকিব এবং তিনি ম্যাচ খেলার মধ্যেই আছেন। সাকিব সমর্থকেরা এ যুক্তি দিতে পারেন, খেলার মধ্যে আছেন, এমন কাউকেই ফাইনালে রাখা উচিত। যদিও ভারতের বেশির ভাগ সংবাদমাধ্যম আইপিএল ফাইনালে কলকাতার সম্ভাব্য একাদশে সাকিবকে না রেখে রাসেলকে রেখেছে।
এখন কলকাতা কী করে, সেটাই দেখার বিষয়। বাংলাদেশ সময় আজ রাত ৮টায় মাঠে গড়াবে আইপিএল ফাইনাল।