সালাহকে রেফারিংয়ে আমন্ত্রণ রেফারির

সালাহর হাতে বাঁশি ও কার্ড তুলে দিতে চেয়েছিলেন রেফারি ভিক্টর গোমেজছবি: রয়টার্স

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে ছবিটা ভাসছে। দক্ষিণ আফ্রিকান রেফারি ভিক্টর গোমেজ দুই হাত বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে মোহাম্মদ সালাহর সামনে। তাঁর হাতে বাঁশি ও কার্ড।

গোমেজের ভাবখানা এমন যেন সালাহর হাতে সেসব তুলে দেওয়ার মাধ্যমে বলতে চাইছেন, আমার সিদ্ধান্ত যেহেতু মনঃপুত হচ্ছে না, তাহলে রেফারিংও তুমিই করো!

ওদিকে সালাহর মুখভঙ্গী তখন সেই কুশলী ডিফেন্ডারদের মতো, যাঁরা প্রতিপক্ষকে থামানোর কাজটি বৈধ কিংবা অবৈধভাবে নিপুণ দক্ষতায় সেরে নিজেকে নবজাতকদের মতোই নির্দোষ দাবি করেন!

না, সালাহ এ যাত্রায় ফাউল করেননি, ভুলও ছিল না। রেফারি গোমেজের কাছে স্রেফ একটা অভিযোগ তুলেছিলেন। তাতেই গোমেজ যে প্রতিক্রিয়া দেখালেন, তা দেখে মিসর তারকা দুই হাত দুই দিকে বাড়িয়ে এমনভাবে কাঁধ ঝাঁকালেন যেন, ‘যাহ্‌ বাবা! অভিযোগও করা যাবে না!’

ঘটনাটা কাল আফ্রিকান কাপ অব নেশনসের (আফকন) ফাইনালে। লিভারপুল সতীর্থ সাদিও মানের সেনেগালের কাছে টাইব্রেকারে হেরে হতাশ হয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মিসরের সালাহকে। ম্যাচের ওই মুহূর্তে অবশ্য সালাহ বেশ লড়াকু মেজাজেই ছিলেন।

গোলের কয়েকটি সুযোগ নষ্ট করায় লিভারপুল ফরোয়ার্ডের মেজাজটা বোধ হয় চড়ে গিয়েছিল। ৩৫ মিনিটে মিসরের দুই খেলোয়াড় মিলে সেনেগাল তারকা সাদিও মানেকে ফেলে দেন। তাঁদের মধ্যে মিডফিল্ডার হামদি ফাতিকে হলুদ কার্ড দেখান গোমেজ। সালাহর আর সহ্য হয়নি। ছুটে যান গোমেজের কাছে।

মিসর ফরোয়ার্ড সিদ্ধান্তটি নিয়ে প্রতিবাদ জানান। গোমেজের প্রতিক্রিয়া ছিল দেখার মতো, ডান হাতটা ওপর-নিচ করে এমনভাবে নাড়ালেন যেন বোঝাচ্ছেন, ‘ঘ্যান ঘ্যান না করে শান্ত হও বাছা! মাঠে আমিই রেফারি।’

কিছু সময় এভাবে চলার পর গোমেজ একটু সামনে এগিয়ে যান। নাছোড়বান্দা সালাহও গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে কিছু একটা বলার চেষ্টা করতেই হাতের বাঁশি ও কার্ড তাঁর প্রতি বাড়িয়ে দেন গোমেজ। বিস্ময়ে চোয়ালঝোলানো ভাব ফুটিয়ে সালাহও বুঝিয়ে দেন, ‘এসব আমি নিতে যাব কোন দুঃখে!’ গোমেজ এরপর ডাগআউটের দিকে হাত বাড়িয়ে কিছু একটা ইঙ্গিত করেন। সেটি হতে পারে, ‘তুমিই দায়িত্বটা পালন করো বাপু, আমি যাই’—এমন কোনো কথা।

শিরোপাটা জিততে পারেননি সালাহ
ছবি: রয়টার্স

মুহূর্তটা বেশ মজা দিয়েছে দর্শকদের। অনেকে এ নিয়ে টুইটও করেন। একজনের টুইট, ‘এটা অনেকটা সেই শিক্ষকের মতো যিনি তাঁর ছাত্রকে বলছেন, “এতই যদি পারো, তাহলে ক্লাসে বেশি কথা না বলে তুমিই শিক্ষকতাটা করো।”’ আরেকজনের টুইট, ‘আফকনের রেফারিরা কাউকে পাত্তা দেয় না। ভালো লেগেছে।’