স্ত্রীকে নিয়ে কেঁদেছিলেন মেসি

প্যারিস নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন মেসি-রোকুজ্জোরাছবি: রয়টার্স

লিওনেল মেসি এখন পিএসজির। এরই মধ্যে অনুশীলনেও নেমে গেছেন। দুই বন্ধু আনহেল দি মারিয়া ও নেইমারকে নিয়ে অনুশীলনে বাকিদের ঘোল খাওয়ানোর ভিডিও দেখে ফেলেছেন অনেকেই। হাসিমাখা সে মুখ দেখে এখন হয়তো বোঝাও যাবে না, কতটা কষ্ট নিয়ে বার্সেলোনা ছেড়েছেন ক্লাবটির সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়।

এক বছর আগেই রাগ করে ক্লাব ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু ক্লাবের বোর্ডে পরিবর্তন আসার পর সে সিদ্ধান্ত থেকে শুধু সরেই আসেননি, নিজের বেতন অর্ধেকে নামিয়ে আনতে রাজি হয়েছিলেন মেসি। কিন্তু কিছুই কাজে আসেনি। বার্সেলোনার আর্থিক অবস্থা এতটাই বাজে হয়ে গিয়েছিল যে তাঁকে নিয়ম না ভেঙে ধরে রাখতে পারেনি বার্সেলোনা। ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও যে ক্লাবের হয়ে আর খেলতে পারবেন না সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সে খবর শুনে কেঁদেছিলেন মেসি ও তাঁর স্ত্রী।

নিজের সন্তানদের নিয়েই বেশি চিন্তায় ছিলেন মেসি
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

গতকাল পিএসজির হয়ে প্রথম সংবাদ সম্মেলন করেছেন মেসি। এরপরও তো কত কিছু জানার থাকে ভক্তদের। বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে সে কৌতূহল মেটানোর চেষ্টা করেছেন মেসি। বিবিসির হয়ে মেসির সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গিয়েম বালাগ। সেখানেই মেসি বলেছেন বার্সা ছাড়ার সময়কার অনুভূতির কথা।

বার্সেলোনা যে তাঁকে চাইলেও রাখতে পারছে না, সেটা রোববার জানা গিয়েছিল। মেসি সে দুঃসংবাদ জেনেছেন তার আগের দিন, ‘আমার বাবা ঘরে এসে সে খবর জানাল। বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন এবং যখন ঘরে ফিরলেন, আমাকে খবরটা জানালেন। আন্তোনেলা ও বাচ্চাদের এই দুঃসংবাদ দেওয়ার আগে আমাকে প্রস্তুত হওয়ার জন্য সময় দিয়েছেন বাবা।’

মেসি ও রোকুজ্জো
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

মেসি এর আগে বলেছিলেন মৌসুম শেষ হওয়ার আগে থাকবেন, নাকি চলে যাবেন, সে সিদ্ধান্ত নেবেন না। কিন্তু বার্সেলোনায় থাকার ব্যাপারে নাকি ডিসেম্বরেই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন। তিন ছেলে ও পরিবারের সবাইকে আশ্বস্ত করেছেন, শিকড় উপড়ে কোথাও যেতে হচ্ছে না। কিন্তু নিজের দেওয়া কথা রাখতে পারবেন না ভেবে কেঁদেছেন মেসি, ‘এরপর আমি আন্তোনেলাকে সে খবর দিলাম এবং দুজনই কাঁদলাম। দুজনেরই খুব মন খারাপ হয়েছে এবং এরপর কীভাবে বাচ্চাদের এ খবর দেওয়া যায়, এ ব্যাপারে কথা বললাম। কারণ, গত ডিসেম্বরেই আমরা বলেছি, আমরা এখানেই থাকব। আমরা জানতাম, এ খবরে থিয়াগো (বড় ছেলে) কত বড় ধাক্কা খাবে।’

পিএসজিতেই আপাতত বেড়ে উঠবেন মেসির তিন ছেলে
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

আট বছরের থিয়াগো নিজের চেনা পরিবেশ ছেড়ে আসায় কষ্ট পাচ্ছে। তবে পাঁচ বছরের মাতেও এবং তিন বছরের চিরোকে নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয় মেসি। তাঁর আশা, থিয়াগোও ছোট দুই ছেলের মতো নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেবে, ‘অনেক সময় আমরা বেশি দুশ্চিন্তা করি। যেমন আমরা যেমনটা ভেবেছি, ছেলেরা অতটা বাজেভাবে খবরটা গ্রহণ করেনি। থিয়াগো আমার মতো, আমরা কিছু না বলে ভেতরে-ভেতরে কষ্ট সয়ে নিই। তবে এটা তেমন গুরুতর কিছু নয়। সে–ও অন্যদের মতো মানিয়ে নেবে। ওর জন্য এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা এবং এটা মানুষ হিসেবে বড় হতে ওকে সাহায্য করবে।’