তখনো তিনি ‘ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো’ হয়ে ওঠেননি। তখন ১২ বছরের এক ভিতু কিশোর। বাবার হাত ধরে যে নিজের দ্বীপ মাদেইরা ছেড়ে লিসবনে এসেছে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে। যে ক্লাবের একাডেমিতে শুরু হয়েছিল তাঁর সেই স্বপ্নের পথচলা, ১৯ বছর পর সেই স্পোর্টিং লিসবনের বিপক্ষে আরও একবার মাঠে নামতে যাচ্ছেন রোনালদো। ফিরছেন তাঁর স্মৃতির শহরে। এখন তিনি রিয়াল মাদ্রিদের, এখন তিনি সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার, কারও কারও মতে সর্বকালের সেরাদের একজনও।
শৈশব আর কৈশোরের স্মৃতি জড়ানো ক্লাবের মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতাটা অবশ্য নতুন নয় রোনালদোর জন্য। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে থাকার সময়েই ২০০৭-০৮ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে দুবার স্পোর্টিং লিসবনের বিপক্ষে খেলেছেন। দুটি ম্যাচেই দলের জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল তাঁর। লিসবনে প্রথম লেগে ম্যাচের একমাত্র গোলটাই করেছিলেন তিনি, ওল্ড ট্রাফোর্ডে ফিরতি লেগেও তাঁর শেষ মুহূর্তের গোলেই ইউনাইটেড জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে।
প্রায় ৯ বছর পর এবার চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে লিসবনকে পেল রিয়াল মাদ্রিদ। সেপ্টেম্বরে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রথম লেগের ম্যাচটা রিয়াল জিতল ২-১ গোলে, যেখানে রোনালদোরও এক গোল! সেদিন গোল করার পর যখন পর্তুগিজ উইঙ্গার একদমই উদ্যাপন করেননি, বোঝা যাচ্ছিল স্পোর্টিং লিসবন এখনো তাঁর হৃদয়ের অনেকটা জায়গাজুড়ে। ম্যাচ শেষে স্বীকারও করেছেন সেটা। আজ ফিরতি লেগে গোল পেলেও তাই মনে হয় না রোনালদোর কোনো উদ্যাপন দেখা যাবে।
এমনিতে রিয়ালের জন্য ম্যাচটা খুব কঠিন কিছু হওয়ার কথা নয়। এর আগে দুই দলের ৫ বার দেখা হয়েছে, রিয়াল জিতেছে ৩ ম্যাচ, লিসবন একটি। বাকি ম্যাচটি হয়েছে ড্র। ৫ ম্যাচে রিয়াল যেখানে ১০ গোল করেছে, লিসবনের সেখানে মাত্র ৫ গোল।
‘এফ’ গ্রুপের পয়েন্ট তালিকায়ও বেশ ভালো অবস্থানে জিনেদিন জিদানের দল। ৪ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে। ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। হিসাব বলছে, লিসবনের সঙ্গে আজ ড্র করে ১ পয়েন্ট পেলেই পরের রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যাবে রিয়ালের। তবে ইউরোপের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা নিশ্চয়ই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই পরের রাউন্ডে যেতে চাইবে, যাতে পরের রাউন্ডে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ পাওয়া যায়। আর সে কারণেই আজ লিসবনের বিপক্ষে ম্যাচটা বাড়তি গুরুত্ব নিয়ে আসছে রোনালদোদের জন্য।
স্পোর্টিং লিসবনের জন্য অবশ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটা। ৪ ম্যাচে তাদের এখন পর্যন্ত ৩ পয়েন্ট। পরের রাউন্ডে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে আজ রিয়ালের বিপক্ষে জয় ছাড়া বিকল্প নেই।
এমনিতে লিসবন রিয়ালের জন্য সৌভাগ্যের শহর। এক যুগ অপেক্ষার পর এখানেই ২০১৪ চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে অ্যাটলেটিকোকে হারিয়ে ‘লা ডেসিমা’ জিতেছিল তারা। দেখা যাক, এবার লিসবন কী নিয়ে অপেক্ষা করছে রিয়ালের জন্য! উয়েফা ডটকম।
আজ মুখোমুখি
সিএসকেএ-লেভারকুসেন
স্পোর্টিং সিপি-রিয়াল মাদ্রিদ
সেভিয়া-জুভেন্টাস
মোনাকো-টটেনহাম
ডর্টমুন্ড-লেগিয়া
জাগরেব-লিঁও
কোপেনহেগেন-পোর্তো
লেস্টার-ব্রুগা
* প্রথমে স্বাগতিক দল