হাড্ডাহাড্ডি লড়াই দুই মিলানের, চাই লিগ শিরোপা
যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিট চলছে তখন।
আক্রমণভাগের বাঁ প্রান্ত থেকে বক্সের উদ্দেশে ক্রস করলেন এসি মিলানের ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ড আনতে রেবিচ। হেড করে বলটা ক্লিয়ার করতে গিয়েও পুরোপুরি পারলেন না ইতালিয়ান সেন্টারব্যাক ফ্রান্সেসকো আসেরবি। বল চলে গেল সামনে থাকা ইব্রাহিমোভিচের কাছে। ইব্রাহিমোভিচ হেড করে বল পাঠালেন মাঝে থাকা ইতালিয়ান মিডফিল্ডার সান্দ্রো তোনালির কাছে। ডান পায়ের হালকা টোকায় বল জালে জড়ালেন এই মিডফিল্ডার।
ড্র আর সে কারণে লিগ শিরোপা–দৌড় থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় কাঁপতে থাকা এসি মিলান প্রত্যাবর্তনের দুর্দান্ত রচনা করে সেই গোলের মাধ্যমেই পকেটে পুরল পুরো ৩ পয়েন্ট। লাৎসিওকে হারাল ২-১ গোলে। সঙ্গে নিশ্চিত করল, নগরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইন্টার মিলানের সঙ্গে শিরোপার লড়াইয়ে এখনই অন্তত পিছিয়ে পড়ছে না।
ইতালিয়ান সিরি ‘আ’র শিরোপা-লড়াই এবার দুই মিলানের সুপ্রাচীন রেষারেষি সামনে তুলে এনেছে। দুই মিলানের এই লড়াই আজকের নয়। লিগের পয়েন্ট তালিকার ওপরের দিকে দুই মিলানের এই লড়াই এ শতাব্দীর শুরুর দশকে নিয়মিত দেখা যেত। লড়াইয়ে জুভেন্টাস থাকলেও দুই মিলান ছেড়ে কথা কইত না। অবস্থার পরিবর্তন আসে গত দশকে, যখন জুভেন্টাসের একাধিপত্যের সঙ্গে দুই মিলানের ফর্মহীনতা মিলিয়ে লিগ শিরোপাটা তুরিনের বুড়িদের একরকম একক সম্পত্তি হয়ে যায়।
দুই বছর ধরে অন্তত সে কথা বলা যাচ্ছে না। গত বছর শিরোপা জিতেছিল ইন্টার, দ্বিতীয় স্থানে থেকে ফুটবলপ্রেমীদের মিলান শহরের ফুটবলীয় শ্রেষ্ঠত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল এসি মিলান। এবারও তা–ই। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়ছে দুই মিলান। ঠিক যেন সেই আগের সময়গুলোর মতো!
গত রাতে লাৎসিওকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে এসেছে এসি মিলান। ৩৪ ম্যাচে ৭৪ পয়েন্ট তাদের। ২ পয়েন্ট কম নিয়ে ইন্টার ঠিক পেছনেই আছে। অবশ্য নেরাজ্জুরিরা ম্যাচ খেলেছেও একটা কম। হাতে থাকা ম্যাচটা জিতলেই শীর্ষে উঠে যাবে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা। আর জুভেন্টাস? ৬৩ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার চারে। শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা তাদের এখন আর নেই বললেই চলে।
ম্যাচের চার মিনিটেই প্রতিপক্ষ ডি-বক্সে আদর্শ স্ট্রাইকারের মুভমেন্ট দেখিয়ে লাৎসিওকে এগিয়ে দেন ইতালিয়ান স্ট্রাইকার চিরো ইম্মোবিলে। ৫০ মিনিট পর্যন্ত পিছিয়ে ছিল মিলান প্রথমার্ধে যেভাবে খেলছিল, তাতে সমর্থকদের মনে জয় নিয়ে দ্বিধাও সৃষ্টি হয়েছিল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড রাফায়েল লিয়াওয়ের পাসে গোল করে মিলানকে সমতায় ফেরান ফরাসি স্ট্রাইকার অলিভিয়ের জিরু। ড্রই যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচের একমাত্র নিয়তি, তখনই ত্রাতা হয়ে হাজির হন তোনালি। ভাগ্যিস এসেছিলেন, না হয় ইন্টারের সঙ্গে শিরোপা-লড়াইটা একটু হলেও রং হারাত!