১১৮০ কোটি টাকার তারকা নিয়েও গার্দিওলার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড
এক অর্থে ইংলিশ মিডফিল্ডার জ্যাক গ্রিলিশকে লিওনেল মেসির বিকল্প খেলোয়াড় বলাই যায়।
২১ বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার ঘোষণাটা আনুষ্ঠানিকভাবে যেদিন এল, সেদিনই ১০ কোটি পাউন্ড খরচ করে আনুষ্ঠানিকভাবে অ্যাস্টন ভিলা থেকে এই ইংলিশ মিডফিল্ডারকে দলে এনেছিল পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি। পরম আরাধ্য ১০ নম্বর জার্সিটাও তুলে দিয়েছে গ্রিলিশের হাতে।
পরে মেসির প্রতি সিটির আগ্রহের গুঞ্জনে পানি ঢেলে গার্দিওলা বলেছিলেন, ‘আমরা জ্যাক গ্রিলিশের জন্য ৪০ মিলিয়ন পাউন্ড খরচ করেছি। পরিশোধ করেছি ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড এবং (খেলোয়াড় বেচে) এসেছে ৬০ মিলিয়ন পাউন্ড। (গ্রিলিশ) সে ১০ নম্বর জার্সি পরবে এবং এ নিয়ে কথা হয়েছে তার সঙ্গে। কারণ, আমরা ভেবেছিলাম মেসি বার্সাতেই থাকবে। তাই এই মুহূর্তে সে (মেসি) আমাদের ভাবনায় নেই।’
গার্দিওলার কথাতেই পরিষ্কার, তাঁরা ভেবেছিলেন, মেসি বার্সাতেই থাকবেন। অমনটা ভেবেছিলেন দেখেই গ্রিলিশের দিকে হাত বাড়িয়েছিলেন। বার্সেলোনার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটা আর কয়টা দিন আগে এলে তাই গ্রিলিশের প্রতি গার্দিওলার আগ্রহ থাকত কি না, প্রশ্ন তোলাই যায়। সেই গ্রিলিশও গত রাতে সিটির হয়ে নিজের অভিষেকে গার্দিওলার মুখে হাসি ফোটাতে পারেননি। বাৎসরিক কমিউনিটি শিল্ডের ম্যাচে গত রাতে লেস্টার সিটির কাছে ১-০ গোলে হেরে বসেছে ম্যানচেস্টার সিটি।
প্রতি বছর প্রিমিয়ার লিগজয়ী ক্লাব এই কমিউনিটি শিল্ডের জন্য লড়ে এফএ কাপজয়ী ক্লাবের বিপক্ষে। মৌসুমের প্রথম শিরোপাটা গেছে এফএ কাপজয়ী লেস্টারের ঘরে।
এই হার নিশ্চিত করল গার্দিওলার এক অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড। এ নিয়ে প্রথমবারের মতো ক্যারিয়ারে টানা দুই ফাইনাল হারলেন গার্দিওলা। এর আগে চেলসির বিপক্ষে হেরেছিলেন চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালটাও।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, গার্দিওলার বুকে শেল বিঁধানো গোলটা এসেছে গার্দিওলারই বিক্রি করে দেওয়া একজনের পা থেকে। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে লেস্টারের হয়ে গোল করেন নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার কেলেচি ইহেয়ানাচো। যাঁকে আড়াই কোটি পাউন্ডের বিনিময়ে ২০১৭ সালে লেস্টারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন গার্দিওলা।
এমনিতেই কোচরা কমিউনিটি শিল্ডকে অতটা পাত্তা দেন না, এই ম্যাচও এর ব্যতিক্রম ছিল না। দুই দলই বেশ দুর্বল একাদশ নামিয়েছিল। সিটির একাদশে কেভিন ডি ব্রুইনা, এদেরসন, জন স্টোনস, রদ্রি, রাহিম স্টার্লিং, গ্যাব্রিয়েল জেসুস—কেউই ছিলেন না। স্যামুয়েল এদোজি, কোল পালমারের মতো একাধিক নতুন মুখকে এই ম্যাচে সুযোগ দিয়েছিলেন গার্দিওলা। জ্যাক গ্রিলিশ ছিলেন বেঞ্চে। একই অবস্থা ছিল লেস্টারেরও। চোট, বিশ্রাম—সবকিছু মিলিয়ে এই ম্যাচে তিমোথি কাস্তানিয়ে, ওয়েসলি ফোফানা, জনি এভান্সের মতো অনেকেই ছিলেন না।
কিন্তু দিন শেষে শিরোপা তো শিরোপাই। সে শিরোপার লড়াইয়ে পরে বেঞ্চ থেকে এসেও গ্রিলিশ শিরোপা জেতাতে পারেননি দলকে। কোচকে উদ্ধার করতে পারেননি অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড থেকে। ৮৭ মিনিটে সিটির ডাচ ডিফেন্ডার নাথান আকে গোলকিপার জ্যাক স্টেফেন্সকে একটা ব্যাকপাস দিতে গিয়ে ভজকট পাকিয়ে ফেলেন। আকের পা থেকে বল উদ্ধার করতে যান কেলেচি, উল্টো কেলেচিকে ডি–বক্সে ফাউল করে বসেন আকে। পেনাল্টি পেয়ে যায় লেস্টার। সে পেনাল্টি থেকে গোল করেই লেস্টারের শিরোপা নিশ্চিত করেন এই নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার।