ঘরের মাঠে টুর্নামেন্ট, আফ্রিকা-শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কারটা ষষ্ঠবারের মতো নিজেদের করে নেওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই ছিল ক্যামেরুনের। সেমিফাইনালে মোহাম্মদ সালাহর মিসরের কাছে টাইব্রেকারে হেরে সে স্বপ্নের সমাধি হয়েছে। গত রাতে তৃতীয় হওয়ার লড়াইয়ে বুরকিনা ফাসোর বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল স্বাগতিকেরা। অসাধারণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে সে ম্যাচে জিতেছে ক্যামেরুন। প্রথমে ৩ গোলে পিছিয়ে থাকার পর তিন গোল শোধ করে পেনাল্টি শুটআউটে বুরকিনা ফাসোকে চতুর্থ স্থানে ঠেলে দিয়েছে তারা। এ যেন ২০০৫ সালে লিভারপুল আর এসি মিলানের বিখ্যাত সেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল!
ম্যাচের ২৪ মিনিটেই ডিফেন্ডার স্টিভ ইয়াগোর গোলে এগিয়ে যায় বুরকিনা ফাসো। নিজের হাস্যকর এক ভুলে আত্মঘাতী গোল করে ৪৩ মিনিটে দলকে আরও পিছিয়ে দেন ক্যামেরুনের গোলকিপার আন্দ্রে ওনানা। ৪৯ মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করে দেন স্ট্রাইকার জিব্রিল উত্তারা। এরপরই যেন ঘুম ভাঙে ক্যামেরুনের। লিভারপুল-মিলানের সেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও লিভারপুলের অধিনায়ক স্টিভেন জেরার্ডের অনুপ্রেরণায় অল রেডরা যেভাবে ফিরে আসে, ক্যামেরুনের ক্ষেত্রেও সেই অনুপ্রেরণাদায়ীর ভূমিকা নিয়েছিলেন অধিনায়ক ভিনসেন্ট আবুবকর।
৭১ মিনিটে ক্যামেরুনের হয়ে প্রথম গোল করেন অজেঁর স্ট্রাইকার স্তেফান বাহোকেন। এরপরই শুরু হয় আবুবকর-ম্যাজিক। ৮৫ আর ৮৭ মিনিটে দুই গোল করে স্কোরলাইন ৩-৩ করে ফেলেন ক্যামেরুন অধিনায়ক। অতিরিক্ত সময়ে আর কোনো গোল না হলে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। সেখানে ৫-৩ ব্যবধানে জিতে টুর্নামেন্টে তৃতীয় স্থান অর্জন করে নেয় ক্যামেরুন।
এ নিয়ে টুর্নামেন্টে আট গোল হয়ে গেল আবুবকরের। ২০০০ সালের আফকনের পর টুর্নামেন্টের কোনো আসরে কেউ পাঁচটির বেশি গোল করতে পারেননি। সর্বশেষ এ টুর্নামেন্টে পাঁচটির বেশি গোল করে দেখিয়েছিলেন মিসরের হোসাম হাসান আর দক্ষিণ আফ্রিকার বেনি ম্যাকার্থি, তা–ও সেই ১৯৯৮ সালের কথা। আট গোল করা আবুবকরের হাত ধরেই ভাঙল সেই রেকর্ড। আফকনের ইতিহাসে এক আসরে এর চেয়ে বেশি গোল করার রেকর্ড শুধু কঙ্গোর এনদায়ে মুলাম্বার। ১৯৭৪ আফকনে ৯ গোল করেছিলেন তিনি।
আজ ফাইনালে মোহাম্মদ সালাহর মিসর লড়বে সাদিও মানের সেনেগালের বিপক্ষে।