৬ গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে কিংসের ত্রাতা কিংসলি
ম্যাচের ৭০ মিনিটে শেখ জামাল ধানমন্ডি ০–০ বসুন্ধরা কিংস। এরপর থেকে ১–০, ১–১, ২–১, ৩–১, ৩–২, ৩–৩।
একটা ম্যাচে এর চেয়ে বেশি নাটকীয়তা আর হতে পারত না। নিষ্প্রাণ প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধটা এমন নাটকীয় হবে, তা কে ভেবেছিলেন! শেষের ২০ মিনিটে হলো ৬ গোল। ৩টি বসুন্ধরা কিংসের আর বাকি ৩টি শেখ জামালের। ম্যাচ ৩–৩ গোলে ড্র। এতে অপরাজিত থেকে প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের প্রথম পর্ব শেষ করল শেখ জামাল।
বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাতে নিজেদের মাঠে টানা ৬ ম্যাচ জেতার পর আজ হার দেখছিল কিংস। ৮৫ মিনিট পর্যন্ত ৩–১ গোলে পিছিয়ে ছিল তারা। এই সময় ত্রাণকর্তা হয়ে এলেন বদলি স্ট্রাইকার এলিটা কিংসলি। ৬ মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে দলকে হারের হাত থেকে বাঁচালেন নাইজেরিয়া ছেড়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নেওয়া এই স্ট্রাইকার।
নিয়মিত ডিফেন্ডাররা চোটে থাকায় একাদশ সাজানোই এখন কষ্টকর কিংস কোচের। আজ তো ৪–৩–৩ ছকে মিডফিল্ডার মাসুক মিয়াকে রাইটব্যাক খেলাতেও বাধ্য হয়েছেন অস্কার ব্রুজোন। কিংসের খেলাটা তৈরি হয় আসলে অধিনায়ক ও ফরোয়ার্ড রবসন দা সিলভাকে ঘিরে। বাকি খেলোয়াড়েরা কে কোথায় খেললেন, এর প্রভাব মাঠে খুব একটা দেখা যায় না।
তাই ‘রবসনকে আটকাও, আটকে যাবে বসুন্ধরা কিংসও’। বসুন্ধরার প্রতিপক্ষ দলগুলোর ‘ট্যাগলাইন’ এখন এটাই। কেউ কৌশলটা বাস্তবায়ন করতে পারে, কেউ পারে না। আজ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় পেরেছে শেখ জামাল। তাই কিনা কিংসের ৩ গোলের দিনেও রবসনের নামের পাশে নেই কোনো গোল।
৭১ মিনিটে প্রতি–আক্রমণ ভালিজনভ ওতাবেকের গোলে ১–০ করেছিল শেখ জামাল। সোলেমান কিংয়ের দারুণ এক থ্রুতে ফাঁকা হয়ে যায় বসুন্ধরার রক্ষণভাগ। দারুণভাবে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গতিতে বের হয়ে যান ওতাবেক। পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে আসা আনিসুর রহমানের পাশ দিয়ে টোকা দিয়ে জালে পাঠান উজবেক এই মিডফিল্ডার।
জামালের এগিয়ে যাওয়ার হাসি স্থায়ী হয়েছে মাত্র ৫ মিনিট। ৭৬ মিনিটে স্তোয়ান ভ্রানিয়েসের গোলে সমতায় ফেরে বসুন্ধরা। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের দুর্দান্ত ফ্রি–কিকে গোলটি করেন বসনিয়ার এই স্ট্রাইকার।
সমতায় ফেরার পরও স্বস্তিতে ছিল না কিংস। ৮৩ মিনিটে ২–১ করেন শেখ জামালের গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড সুলাইমান সিল্লাহ। ফয়সালের সাদামাটা একটা শট ধরতে ব্যর্থ হন কিংস গোলকিপার আনিসুর। তাঁর হাত ফসকে বের হয়ে আসা বল টোকা দিয়ে জালে পাঠান সিল্লাহ। ২ মিনিট পরেই মোহাম্মদ ইব্রাহিমের ভুলের সুযোগ নিয়ে স্কোরলাইন ৩–১ করে ফেলে শেখ জামাল। বক্সের বাইরে থেকে মাপা শটে গোলটি করেন সোলেমান কিং।
৮৫ মিনিটে ৩–১ হওয়ার পর নাটকীয়ভাবে কিংসকে ম্যাচে ফেরান কিংসলি। ৮৯ মিনিটে করলেন ৩–২। ডান প্রান্তে মাহবুবুর রহমানের ক্রস থেকে হেডে গোলটি করেন কিংসলি। যোগ করা সময়ে তাঁর দ্বিতীয় গোলটিও হেডে। এবার ইব্রাহিমের ক্রিস থেকে বল পাঠান জালে। লিগে এটি তাঁর পঞ্চম গোল।
এই ড্রয়ে ১১ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে লিগের প্রথম পর্ব শেষ করল বসুন্ধরা। ২১ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে শেখ জামাল। অবশ্য আজ দিনের অন্য ম্যাচে আবাহনী জিতলে তারা চলে যাবে দ্বিতীয় স্থানে।