করোনাভাইরাস আটকে দিল আগুয়েরো-ওজিলদের খেলা

এই সপ্তাহে আর মাঠে নামবেন না আগুয়েরোরা। ছবি : এএফপি
এই সপ্তাহে আর মাঠে নামবেন না আগুয়েরোরা। ছবি : এএফপি

>

করোনাভাইরাসের কারণে স্থগিত করা হয়েছে ম্যানচেস্টার সিটি বনাম আর্সেনালের খেলা। জীবনঘাতী এই ভাইরাসের কারণে এর আগে ইতালিয়ান সিরি’আ বা স্প্যানিশ লা লিগায় ম্যাচ স্থগিত হলেও ইংলিশ লিগে এমন ঘটনা এই প্রথম ঘটল

ম্যাচটা অনেক দিক দিয়েই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আজ ম্যানচেস্টার সিটি জিতে গেলে লিভারপুলকে শিরোপা নিশ্চিত করার জন্য আর অন্তত দুটি জয় পাওয়া লাগত। কিন্তু হেরে গেলে, তাদের শিরোপা নিশ্চিত করার জন্য লিগে আর মাত্র একটা ম্যাচ জিতলেই হতো। সঙ্গে আগামী মৌসুমে ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পথটাও সুগম হতো আর্সেনালের জন্য। এ ছাড়া সিটির সহকারী কোচ থেকে আর্সেনালের মূল কোচ হওয়ার পর এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই সিটির মাঠে প্রথম যেতেন মিকেল আরতেতা।

কিন্তু আপাতত এসব কিছুই হওয়ার সম্ভাবনা নেই। করোনাভাইরাসের কারণে সিটির ইতিহাদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ম্যানচেস্টার সিটি-আর্সেনাল ম্যাচটা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এর পেছনে গ্রিক ক্লাব অলিম্পিয়াকোস ও ইংলিশ ক্লাব নটিংহ্যাম ফরেস্টের মালিক ইভানগেলোস মারিনাকিস একটু হলেও ‘দায়ী’। গত শুক্রবার মিলওয়ালের কাছে নটিংহামের ৩-০ গোলে হারের ম্যাচে এই ভদ্রলোক ছিলেন মাঠে। এ ছাড়াও গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অলিম্পিকায়োসের কাছে হেরে আর্সেনালের বাদ পড়াও দেখেছেন এমিরেটস স্টেডিয়ামে বসে। গতকাল জানা গেছে, করোনাভাইরাস টেস্টে ‘পজিটিভ’ হয়েছেন মারিনাকিস। আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে আর্সেনালের বেশ কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন মারিনাকিস। ধারণা করা হচ্ছে, মারিনাকিসের শরীরী সংস্পর্শে আসার কারণে আর্সেনালের বেশ কিছু কর্মকর্তার মধ্যেও করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে। এ কারণেই ম্যাচটা আয়োজন করার ঝুঁকি নিতে চাচ্ছে না ম্যানচেস্টার সিটি।

করোনার লক্ষণ শরীরে প্রকাশ পাওয়ার আগে ১৪দিন সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে ইউরোপা লিগে আর্সেনাল-অলিম্পিয়াকোস ম্যাচে মারিনাকিস যাঁদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন কিংবা শরীরী সংস্পর্শে এসেছেন তাদেরও ঝুঁকি থেকে যায়। যদিও আর্সেনালের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘তার সঙ্গে শরীরী সংস্পর্শে আসা কারও শরীরে এখনো কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি।’

কিন্তু শুধু মুখের কথায় কি আর চিড়ে ভেজে? সিটিও তাই শুধু মুখের কথায় বিশ্বাস করে ঝুঁকি নিচ্ছে না।

করোনাভাইরাসের বিস্তৃতি ঠেকাতে এর আগে বিভিন্ন ফুটবল লিগের ম্যাচ দর্শক শূন্য মাঠে আয়োজন করা হচ্ছে। সিরি আ তো অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিতই ঘোষণা করা হলো। লা লিগাতেও একই অবস্থা। তবে করোনাভাইরাসের কারণে ইংলিশ লিগের কোনো ম্যাচ স্থগিত হওয়ার ঘটনা এই প্রথম।

করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে এদিকে লিগ স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা। দর্শকহীন মাঠে খেলার চাইতে না খেলাই ভালো বলে মনে করছেন তিনি, ‘দর্শক ছাড়া কী ফুটবল জমে? খেলা দেখতে মানুষ যদি নাই আসতে পারে, তাহলে সে খেলা আয়োজন করার দরকার কী? করোনাভাইরাস প্রতিরোধ যা করা দরকার, আমরা করতে রাজি। তবে দর্শকহীন মাঠে খেলতে পছন্দ করি না আমি।’

স্পেন ও ইতালির মতো ইংল্যান্ডেও ম্যাচ স্থগিত করা হবে বলে মনে করছেন গার্দিওলা, ‘স্পেন ও ইতালিতে কী হচ্ছে, সে ব্যাপারে আমরা জানি। ইতালিতে লিগ স্থগিত করা হয়েছে। স্পেনে আগামী দুই সপ্তাহের ম্যাচগুলো বন্ধ দরজার পেছনে আয়োজন করা হবে। এসব সিদ্ধান্তগুলো হয়তো ইংল্যান্ডেও নেওয়া হবে। চ্যাম্পিয়নস লিগ বা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচগুলো দর্শকহীন মাঠে খেলার কোনো ইচ্ছে নেই আমাদের। তবে সরকার যা বলবে, আমরা সেটাই করব।’