
লন্ডন অলিম্পিকে ১০ হাজার মিটার দৌড়ে ব্রিটেনকে প্রথম সোনার পদক এনে দিয়েছিলেন মো ফারাহ। সেই সাফল্যের পর গত পাঁচ বছরে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল অ্যাথলেট হিসেবে। লন্ডনে বিশ্ব অ্যাথলেটিকসে আবারও ৩৪ বছর বয়সী দূরপাল্লার এ দৌড়বিদ দেখালেন তাঁর বুড়ো হাড়ের ভেলকি। সেই অলিম্পিক স্টেডিয়ামেই গতকাল শুক্রবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ১০ হাজার মিটার দৌড়ে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব আবারও প্রমাণ করলেন ফারাহ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের এ ইভেন্টে এটি তাঁর টানা তৃতীয় সোনার পদক।
তবে গতকালের দৌড়ে শেষ ল্যাপে এসে বাঁ পায়ের গোড়ালিতে দুবার আঘাত পেয়েছিলেন ফারাহ। চোটের চ্যালেঞ্জ নিয়েই দৌড়টা শেষ করতে হয়েছে তাঁকে। প্রথম আঘাতটা ছিল বেশি মারাত্মক। পা দিয়ে রক্ত ঝরছিল। কিন্তু তারপরও সবার আগে দৌড় শেষ করে অ্যাথলেটিকসের টানা দশম বৈশ্বিক সোনাটি জিতে নেন মো ফারাহ। ২০১১ দেগুতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ৫ হাজার মিটার দৌড়ে সোনার পদক জিতে দারুণ এক অভিযাত্রার শুরু করেছিলেন মো ফারাহ। মাঝের এ ছয় বছরে অলিম্পিক ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের দূরপাল্লার দৌড়ে (৫ হাজার ও ১০ হাজার মিটার) সোমালি বংশোদ্ভূত এই অ্যাথলেটকে কেউ হারাতে পারেনি।
মো ফারাহর সামনে এখন টানা তৃতীয় ‘ডাবল’ জয়ের সুযোগ। ২০১৩ মস্কো বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০১৫ বেইজিং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে দূরপাল্লার দৌড়ে দুটি ইভেন্টেই (৫ হাজার মিটার ও ১০ হাজার মিটার) সোনার পদক জিতেছিলেন তিনি। এবার লন্ডনে ৫ হাজার মিটার জিততে পারলে তৃতীয় ডাবলের কীর্তি নিজের করে নেবেন। চোটগ্রস্ত পা নিয়েও ফারাহ কিন্তু চ্যালেঞ্জটা নিচ্ছেন, ‘চোট পেয়েছি, এখন মন শক্ত রেখে ডাক্তার দেখাব। একটু কেটে গেছে, হয়তো কয়েকটা সেলাই লাগবে। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে হবে, সে জন্য পর্যাপ্ত সময়ও হাতে আছে।’ আগামী বুধবার ৫ হাজার মিটার দৌড়ের হিট। ফাইনাল আগামী শনিবার। হাতে আছে সপ্তাহ খানে সময়।
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, শেষ ল্যাপে চোট পেলেও গতি কমাননি ফারাহ। ঘরের মাঠে ৫৫ হাজার দর্শকের সামনে ২৬ মিনিট ৪৯.৫১ সেকেন্ড সময় নিয়ে তিনি গড়েন চলতি বছরের সেরা টাইমিং। পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে ল্যাপ অব অনার শেষে ফারাহ বলেন, ‘এ দর্শকদের জন্যই ব্রিটিশ হতে পেরে গর্ব লাগে। এ স্টেডিয়ামকে আমি ভালোবাসি। এটা ছিল একটা দীর্ঘ যাত্রা, অবিশ্বাস্য।’ ফারাহর পেছনে থেকে রুপা জিতেছেন উগান্ডার ২০ বছর বয়সী তরুণ জশুয়া চেপতেগেই (২৬ মিনিট ৪৯.৯৪ সেকেন্ড)। এটি তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা টাইমিং। ব্রোঞ্জ জিতেছেন কেনিয়ার পল তানুইয়ের (২৬ মিনিট ৫০.৬০ সেকেন্ড)। রয়টার্স, এএফপি