বাদ পড়ে অনন্য উপায়ে প্রতিবাদ বক্সারের
দুই জুডোকার ইসরায়েলি প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলতে অস্বীকৃতি জানানো আর করোনা মহামারির মধ্যে অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে কিছু টোকিওবাসীর এখনো প্রতিবাদ—ব্যস, অলিম্পিকে এখন পর্যন্ত বিতর্ক বলতে এতটুকু। আজ অবশেষে কিছু ‘মসলা’ জুটল টোকিও অলিম্পিকের ভাগ্যে। প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছেন এক বক্সার। প্রতিযোগিতা শেষে রিং সাইড ছাড়তে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি।
ঘটনাটি ঘটেছে সুপার হেভিওয়েট (৮১ কেজি বা তার বেশি) ইভেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে। অন্তত ব্রোঞ্জ পদকের আশায় লড়তে নেমেছিলেন ফ্রেঞ্চ বক্সার মুরাদ আলিভ ও ব্রিটেনের ফ্রেজার ক্লার্ক। দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রতিপক্ষকে মাথা দিয়ে আঘাত করার কারণে ডিসকোয়ালিফাইড হন আলিভ। কিন্তু এভাবে বাদ পড়া মানতে পারেননি ফ্রেঞ্চ বক্সার। তাঁর দাবি, অন্যায় করা হয়েছে তাঁকে এভাবে বাদ দিয়ে।
এভাবে অলিম্পিক স্বপ্ন শেষ হয়ে যাওয়া মেনে নিতে পারেননি আলিভ। ২৬ বছর বয়সী বক্সার তাই রিংয়ের পাশে বসে ছিলেন বহুক্ষণ। তাঁর দাবি, অফিশিয়ালরা নাকি পরে স্বীকার করে নিয়েছেন নিজেদের ভুল, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে। এ কারণেই আমি এভাবে বসে প্রতিবাদ জানিয়েছি। এই গেমসের জন্য আমি চার বছর ধরে প্রস্তুত হয়েছি...আমি এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্যি লড়তে চাই। এ কারণেই আমি দেখাতে চেয়েছি, এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত নই আমি।’
আলিভের দাবি, তাঁকে ডিসকোয়ালিফাইড করার পরই বোঝা গিয়েছিল বিচারকেরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন, ‘বিচারকেরা সবাই একসঙ্গে আলোচনা করছিলেন কী হয়েছে, সেটা বোঝার জন্য। তাঁরা বলেছেন, আমারই জেতা উচিত ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে লেখা হয়ে গেছে, আমি ডিসকোয়ালিফাইড, তাই এ সিদ্ধান্ত আর বদলানো যাবে না। অনেক দেরি নাকি হয়ে গেছে।’
ফ্রেঞ্চ সুপার হেভিওয়েট বক্সারের দাবি ‘বাউট’ যে বাতিল হচ্ছে, এটা তাঁকে জানানো হয়নি, ‘কোনো সংকেত না দিয়েই আমাকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং হঠাৎ আমাকে বলা হলো, “তুমি হেরে গেছ”। ব্যস, এভাবেই বলে দিল। আমার মনে হচ্ছে, এটা আসলে ষড়যন্ত্রের অংশ।’
বক্সিংয়ে বিজয়ী নির্ধারণ ও জাজদের পয়েন্ট বিতরণ নিয়ে আলোচনা নতুন নয়। তবে রিও অলিম্পিকে সেটা মাত্রা ছাড়ানোয় এবার অলিম্পিক কমিটিই সে দায়িত্ব নিয়েছে। তবু বিতর্ক এড়ানো যায়নি। আলিভ তাই নিজের পক্ষে যতটা সম্ভব প্রতিবাদ জানিয়ে গেছেন।
লড়াইয়ে আলিভের প্রতিপক্ষ ক্লার্কের দুই চোখের কাছে কেটে গেছে। ব্রিটিশ বক্সার ব্যাপারটা দেখছেন অন্যভাবে। তাঁর চোখে পুরো ব্যাপারটা বিভ্রান্তিকর ছিল, ‘রেফারি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁকে এটা নেওয়ার জন্যই এখানে রাখা হয়েছে। এখানে বেশ কিছু দারুণ রেফারি ও অফিশিয়াল আছেন। আমাদের তাই তাঁদের ওপর আস্থা রাখতে হবে। আমার মনে হয়, তাঁরা যা ঠিক মনে করেছেন, সেটাই করেছেন।’
ক্লার্ক নাকি আলিভকে শান্ত হতেও বলেছিলেন, ‘আমি নিজে এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি। এমন সময় প্রায়ই আপনি মাথা খাটান না। হৃদয় যা বলে, তা-ই ঠিক মনে হয় এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে থাকে না।’