টানা তিন রাউন্ড দুর্দান্ত খেলে টাটা স্টিল পিজিটিআই প্লেয়ার্স টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা জাগিয়েছিলেন বাংলাদেশের গলফার জামাল হোসেন মোল্লা। কিন্তু চণ্ডীগড় গলফ ক্লাবে আজ শেষ দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে এসেই জ্বলে উঠতে পারলেন না জামাল। চতুর্থ রাউন্ডে জামাল খেলেছেন পারের চেয়ে ২ শট কম। সব মিলিয়ে পারের চেয়ে ১৬ শট কম খেলে রানারআপ হয়েছেন জামাল। পারের চেয়ে ১৭ শট কম খেলে জামালের হৃদয় ভেঙে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চণ্ডীগড়ের ‘ঘরের ছেলে’ যুবরাজ সিং সান্ধু। এই টুর্নামেন্টে রানারআপ হওয়ার সুবাদে জামাল পেয়েছেন প্রায় ৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। চ্যাম্পিয়ন যুবরাজ পেয়েছেন বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৯ লাখ ২২ হাজার।
এ বছর সব মিলিয়ে পাঁচটি টুর্নামেন্টে খেলেছেন জামাল। এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স করেছেন এই টাটা স্টিল পিজিটিআই টুর্নামেন্টেই। গত সপ্তাহে বাল্লানটাইনস গলফ চ্যাম্পিয়নশিপে তিনি কাট মিস করেন। এর আগে জামালের সেরা পারফরম্যান্স ছিল মুজিব বর্ষ চট্টগ্রাম ওপেন গলফে, গত ১২ মার্চ ষষ্ঠ হয়ে টুর্নামেন্ট শেষ করেন।
এই টুর্নামেন্টে গত দুই রাউন্ডে জামাল ও যুবরাজ সমানে সমান খেলছিলেন। তৃতীয় রাউন্ড পর্যন্ত দুজনই ছিলেন লিডারবোর্ডের শীর্ষে। কিন্তু আজ ৩ শট কম খেলে জামালকে টপকে যান যুবরাজ। যদিও যুবরাজ আজ ৫টি বার্ডি ও ২টি বগি করেছেন। গত দুই দিন বগিবিহীন দিন কাটালেও জামাল আজ ১টি বগি করেন। আর বার্ডি করেন ৩টি।
প্রথম রাউন্ডে জামাল খেলেন পারের চেয়ে ৫ শট কম। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলেন পারের চেয়ে ৬ শট কম। তৃতীয় রাউন্ডে পারফরম্যান্সে একটু অধারাবাহিক জামাল, সেদিন খেলেন পারের চেয়ে ৩ শট কম। আর যে সময় জ্বলে ওঠার প্রয়োজন, ঠিক সেই সময়েই নিজেকে মেলে ধরতে পারলেন না। আজ সারা দিন জামাল ও যুবরাজের স্কোর পেন্ডুলামের মতো দুলেছে। কখনো জামাল এগিয়ে গেছেন তো কখনো যুবরাজ।
শেষ হোলে জমে ওঠে নাটকীয়তা। ১৮তম হোলে জামাল বার্ডি করলে চ্যাম্পিয়নশিপ নির্ধারণের জন্য প্লে-অফে গড়াত খেলা। কিন্তু জামাল বার্ডি করতে পারেননি, খেলেন পারের সমান। এতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন যুবরাজ।
আসলে শেষ হোলে যতটা স্নায়ু ধরে রেখে খেলা দরকার ছিল, সেটা মোটেও করতে পারেননি জামাল। বরং চেনা গলফ কোর্সে খেলার সুবিধাটা ভালোমতোই কাজে লাগিয়েছেন যুবরাজ। ম্যাচ শেষে যুবরাজ ট্রফি হাতে নিয়ে পিজিটিআই ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন সেটাই, ‘ঘরের মাটিতে কীভাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলতে হয়, সেটা আমার জানা ছিল। চেনা গলফ কোর্স, এলাকার দর্শক, মা–বাবা ও পরিবারের সমর্থন আমাকে স্বচ্ছন্দ্যে খেলতে সাহায্য করেছে। নিজের এলাকার গলফ কোর্সে, বিশেষ করে মা-বাবার সামনে প্রথমবার কোনো টুর্নামেন্ট জেতাটা আমার জন্য বিশেষ কিছু।’