আগামীকাল ঢাকায় শুরু হচ্ছে এশিয়ার হকির সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ভারত, পাকিস্তান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপানের মতো দলগুলোর সঙ্গে খেলবে স্বাগতিক হিসেবে বাংলাদেশও।
কেমন হলো স্বাগতিক দলের প্রস্তুতি? প্রথম আলোর সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সেসব নিয়েই কথা বলেছেন বাংলাদেশ দলের মালয়েশিয়ান কোচ ইমান গোবিনাথান কৃষ্ণমূর্তি—
প্রশ্ন :
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে জাপান ও পাকিস্তানের সঙ্গে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেললেন। কেমন হলো সামগ্রিক প্রস্তুতি?
ইমান গোবিনাথান: মোটামুটি ভালোই। প্রস্তুতি ম্যাচে জাপানের সঙ্গে ৪-১ ও পাকিস্তানের সঙ্গে ৩-১ গোলে হেরেছি। ছেলেরা সামর্থ্য অনুযায়ী খেললেও এটা যথেষ্ট নয়। এই পর্যায়ের টুর্নামেন্টে আরও অনেক ভালো খেলতে হবে। অবশ্য এটাও মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ দল ৪০ মাস পর খেলতে নেমেছে। অনেক জড়তা রয়ে গেছে খেলায়। এসব কাটিয়ে উঠতে আরও সময় লাগবে।
প্রশ্ন :
বাংলাদেশ সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে ২০১৮ সালের আগস্টে জাকার্তা এশিয়ান গেমসে। প্রায় ৪০ মাস পর খেলোয়াড়দের নিয়ে কাজ করে কোথায় কোথায় সমস্যা পেলেন?
গোবিনাথান: বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের দক্ষতায় তেমন সমস্যা নেই। ফিটনেসও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না। তবে অনেক দিন ম্যাচ না খেলায় মাঠে খেলার মেজাজে ঘাটতি দেখছি। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলতে গেলে যে ধরনের মেজাজ দরকার, সেটা না থাকলে প্রতিপক্ষ চড়ে বসবে। দ্রুত ক্লান্ত হয়ে গেলে তো চলবে না। ম্যাচে ফিটনেস ধরে রেখে শেষ পর্যন্ত সমানতালে খেলে যেতে হবে।
প্রশ্ন :
বাংলাদেশ দলটাকে ঠিক কীভাবে প্রস্তুত করছেন?
গোবিনাথান: আমি দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র ১০-১২ দিন আগে। এত অল্প সময়ে কীই–বা করা যায়! বিশ্বসেরা কোচ এলেও এত অল্প সময়ে দল তৈরি করতে পারবে না। তবে আমি খেলোয়াড়দের ভেতর থেকে শতভাগ বের করে আনার চেষ্টা করব। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই দলটা তৈরি করেছি। ছয়জন নতুন ছেলে দলে নিয়েছি। এই টুর্নামেন্ট থেকে ওরা আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিতে পারবে। আগামী বছর চীনে এশিয়ান গেমস আছে। সেই গেমসের বাছাইয়ের জন্য তারা প্রস্তুত হতে পারবে।
প্রশ্ন :
বাংলাদেশ দলটাকে ঠিক কীভাবে প্রস্তুত করছেন?
গোবিনাথান: আমি দায়িত্ব নিয়েছি মাত্র ১০-১২ দিন আগে। এত অল্প সময়ে কীই–বা করা যায়! বিশ্বসেরা কোচ এলেও এত অল্প সময়ে দল তৈরি করতে পারবে না। তবে আমি খেলোয়াড়দের ভেতর থেকে শতভাগ বের করে আনার চেষ্টা করব। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই দলটা তৈরি করেছি। ছয়জন নতুন ছেলে দলে নিয়েছি। এই টুর্নামেন্ট থেকে ওরা আন্তর্জাতিক ম্যাচের অভিজ্ঞতা নিতে পারবে। আগামী বছর চীনে এশিয়ান গেমস আছে। সেই গেমসের বাছাইয়ের জন্য তারা প্রস্তুত হতে পারবে।
প্রশ্ন: গত কয়েক বছর ঘরোয়া হকি তো বলতে গেলে ছিলই না বাংলাদেশে। তিন বছর পর গত মাসে প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন আশরাফুলরা। এত লম্বা সময় ঘরোয়া খেলা না থাকার কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব দেখেন?
প্রশ্ন :
গত কয়েক বছর ঘরোয়া হকি তো বলতে গেলে ছিলই না বাংলাদেশে। তিন বছর পর গত মাসে প্রিমিয়ার লিগ খেলেছেন আশরাফুলরা। এত লম্বা সময় ঘরোয়া খেলা না থাকার কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব দেখেন?
গোবিনাথান: এভাবে মোটেও উন্নতি সম্ভব নয়। প্রতিবছরই লিগ হওয়া দরকার। আগামী বছর লিগটা আবার হলে খেলোয়াড়দের জন্য ভালো হবে। লিগের ধারাবাহিকতা খুবই জরুরি। না হলে আবার পেছনে পড়ে যেতে হবে। কারণ, উন্নতির জন্য ধারাবাহিকভাবে খেলতে হবে। লিগ খেললে ছেলেরা নানা পরিস্থিতির সঙ্গে পরিচিত হয়। ভালো খবর যে বাংলাদেশের ছেলেরা লিগ খেলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নামছে।
প্রশ্ন :
প্রশ্ন: চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হলো এশিয়ার শীর্ষ ছয় দলের টুর্নামেন্ট। অবশ্য এবার সেরা পাঁচের সঙ্গে বাংলাদেশ নামছে স্বাগতিক হিসেবে। আপনার চোখে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন কোন দল?
গোবিনাথান: টুর্নামেন্টের সব দলই ভালো। যে কেউ শিরোপা জিততে পারে।
প্রশ্ন :
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হলো এশিয়ার শীর্ষ ছয় দলের টুর্নামেন্ট। অবশ্য এবার সেরা পাঁচের সঙ্গে বাংলাদেশ নামছে স্বাগতিক হিসেবে। আপনার চোখে সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়ন কোন দল?
টুর্নামেন্টের সব দলই ভালো। যে কেউ শিরোপা জিততে পারে।
প্রশ্ন :
তার মানে বাংলাদেশেরও সম্ভাবনা দেখছেন?
গোবিনাথান: (হাসি) না না। বাংলাদেশের সম্ভাবনা নেই, সেটা বলেই দিতে পারি। কারণ, অন্যরা আমাদের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে। বাস্তবতা মাথায় রেখে আমি অযথা স্বপ্ন দেখাব না। বাংলাদেশ দলের সামর্থ্য সম্পর্কে আমি জানি। একটা ড্র করতে পারলেও সেটা হবে বিশেষ কিছু।
প্রশ্ন :
কাদের বিপক্ষে ড্র আশা করবেন বেশি?
গোবিনাথান: আমি সেটা এখনই বলতে পারব না। ভারত এখন ধরাছোঁয়ার বাইরের দল। পাকিস্তানও অনেক ভালো। কোরিয়া, জাপানের সঙ্গে আপনি লড়াইয়ের চেষ্টা করতে পারেন। ড্র করা সম্ভব হলে তো কথাই নেই। সেটা হবে জয়েরই সমান।
প্রশ্ন :
গত এশিয়ান গেমসে আপনি বাংলাদেশ দলের কোচ ছিলেন। সেই দল আর বর্তমান দলের মধ্যে পার্থক্য কী?
গোবিনাথান: সেবার আমি আক্রমণাত্মক খেলেছি। কিন্তু এবার তেমন খেলার মতো অবস্থা নেই। ফলে আমাকে অনেক হিসাব করে এগোতে হবে। গত এশিয়ান গেমসের মতো আক্রমণাত্মক খেলার বিলাসিতা আমি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দেখাতে পারব না। কারণ, টুর্নামেন্ট হবে আমাদের ঘরের মাঠে। দেশের সম্মানের ব্যাপার আছে।
প্রশ্ন :
দেশের মাটিতে দর্শক-সমর্থকদের প্রত্যাশা থাকে বেশি। সেদিক থেকে কতটা চাপ অনুভব করছেন?
গোবিনাথান: চাপ তো বটেই, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জও। আমাদের ভালো কিছু করতে হবে। তবে একটা কথা না বলে পারছি না, এখান দেখছি অনেকেই জয় ছাড়া আর কিছু বুঝতে চান না। বিষয়টা যেন এমন, নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে খেলা হলেও বাংলাদেশকে জিততে হবে! কিন্তু সেটা তো আর সম্ভব নয়। বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের যেটা সামর্থ্য, সে অনুযায়ীই ফল আশা করতে হবে।