সাক্ষাৎকারে মোহামেডানের আর্জেন্টাইন হকি তারকা
খারাপ অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি
মোহামেডান স্পোর্টিং লিমিটেডের হয়ে সদ্য সমাপ্ত প্রিমিয়ার হকি লিগে খেলতে এসেছিলেন আর্জেন্টিনা জাতীয় হকি দলে খেলা হোয়াকিম মেনিনি। ৫ ম্যাচে করেছেন ১০ গোল। ঢাকা ছাড়ার আগে পরশু রাতে রাজধানীর এক হোটেলে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ২০১৬ রিও অলিম্পিকে সোনাজয়ী আর্জেন্টিনা দলের এই স্ট্রাইকার—
বাংলাদেশে খেলার অভিজ্ঞতা কেমন হলো?
মেনিনি: আমার ভারতীয় বন্ধু এস ভি সুনীলের (এবার মোহামেডানে খেলা ভারতীয় জাতীয় দলের খেলোয়াড়) অনুরোধেই বাংলাদেশে খেলতে রাজি হয়েছিলাম। বাংলাদেশে খেলাটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা। নতুন নতুন খেলোয়াড় এবং নতুন একটা দলের সঙ্গে পরিচিত হলাম। এ দেশের মানুষ আমার ভালো লেগেছে। কিন্তু বিদায়টা ভালো না হওয়ায় খারাপ অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরে যাচ্ছি।
শেষ ম্যাচের পর আমাদের সঙ্গে কোনো ক্লাব কর্মকর্তা যোগাযোগ করেননি। আজ আমি আর (গঞ্জালো) পেইলাত (মোহামেডানে খেলা আরেক আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়) তাঁদের ১০০ বারের মতো ফোন দিয়েছি। কেউ ফোন ধরেননি। খুদে বার্তারও জবাব দেননি।
খারাপ অভিজ্ঞতা কেন?
মেনিনি: শেষ ম্যাচের পর আমাদের সঙ্গে কোনো ক্লাব কর্মকর্তা যোগাযোগ করেননি। আজ আমি আর (গঞ্জালো) পেইলাত (মোহামেডানে খেলা আরেক আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়) তাঁদের ১০০ বারের মতো ফোন দিয়েছি। কেউ ফোন ধরেননি। খুদে বার্তারও জবাব দেননি। অথচ আর কয়েক ঘণ্টা পরেই আমার ফ্লাইট। আমাদের হোটেলেই থাকা আবাহনী লিমিটেডের নেদারল্যান্ডসের খেলোয়াড়দের হাসিমুখে বিদায় দিয়েছে তাদের ক্লাব। ওদের দেখে আমাদের হতাশা আরও বেড়ে গেছে। স্পেন, নেদারল্যান্ডস ছাড়াও এশিয়ায় মালয়েশিয়া ও ভারতের লিগে খেলেছি। কখনো এ রকম পরিস্থিতিতে পড়িনি।
শেষের অভিজ্ঞতাটা বাদ দিয়ে বাংলাদেশের হকিটাকে কেমন দেখলেন?
মেনিনি: ভালো একটা লিগ হয়েছে। তিন দলের সামনেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সুযোগ ছিল, এটাই প্রমাণ করে লিগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। অনেক মেধাবী খেলোয়াড় আমার চোখে পড়েছে। তবে শুনেছি, এখানে খেলাটা নিয়মিত হয় না। আর একটা কথা, বাংলাদেশে ডিম–পরোটা খুব ভালো লেগেছে।
বাংলাদেশের মানুষের কাছে তো আর্জেন্টিনা মানেই ফুটবল। আপনি আর্জেন্টিনার মানুষ হয়েও হকিতে কীভাবে?
মেনিনি: আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা বুয়েনস এইরেসে। সেখানে হকি জনপ্রিয় একটা খেলা। ছোটবেলায় এই খেলাটা আনন্দ নিয়েই সবাই খেলে। আমার বোনও হকি খেলোয়াড় ছিল। কিন্তু ফুটবলের চিত্রটা ভিন্ন। ১০–১২ বছর বয়স থেকেই সেখানে বড় খেলোয়াড় হওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়। এ জন্য আপনাকে স্কুল যাওয়াও বন্ধ করে দিতে হবে। ছোটবেলা ফুটবল খেললেও আমি পেশাদার ফুটবলার হই, আমার শিক্ষিকা মা ও হিসাবরক্ষক বাবা তা চাননি।
টুইটারে দেখলাম গত এক বছরে আপনার অধিকাংশ টুইটই ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে নিয়ে...
মেনিনি: পুরো আর্জেন্টিনাতেই তিনি নায়ক। মাঠ ও মাঠের বাইরে অনেক বড় এক চরিত্র। ছোটবেলা থেকেই আমি তাঁর বড় ভক্ত। সৌভাগ্যক্রমে ২০১৫ সালে তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাতেরও সুযোগ হয়। আর্জেন্টিনা জাতীয় হকি দলের একটি ম্যাচের মধ্যাহ্ন বিরতিতে তিনি আমাদের ড্রেসিংরুমে এসেছিলেন। আমি ম্যারাডোনাকে আমার একটা জার্সি উপহার দিয়েছিলাম।
ম্যারাডোনা আর আর্জেন্টিনার ফুটবল নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আবেগটা কি টের পেয়েছেন এই কয় দিনে?
মেনিনো: আগেই জানতাম ফুটবল বিশ্বকাপের সময় এখানে আর্জেন্টিনা নিয়ে খুব মাতামাতি হয়। এখানে এসে আরও ভালো করে বুঝলাম আর্জেন্টিনা নিয়ে উন্মাদনাটা।