>
মাঝে চলে গেছে তিনটি মৌসুম, ২৬টি ম্যাচ। জয়ের দেখা পাচ্ছিল না বরিশাল বিভাগ। আরাধ্য জয়টা অবশেষে তারা পেল এবার। শুধু এই একটা জয়ই নয়, জাতীয় লিগে এবার বরিশালের বদলে যাওয়া চেহারাই দেখছে সবাই। পেছনের রহস্যটা বললেন দলের দীর্ঘদিনের সঙ্গী শাহরিয়ার নাফীস
* বরিশালের তো প্রথম স্তরে ওঠা প্রায় নিশ্চিত। দলের সবাই নিশ্চয়ই খুব আনন্দিত...
শাহরিয়ার নাফীস: প্রথম স্তরে যেতে এখনো আমাদের ৩ পয়েন্ট লাগবে। তবে ৩ পয়েন্ট পেতে নয়, শেষ রাউন্ডের ম্যাচটাও আমরা জেতার জন্যই খেলব। আমরা লিগটা জিতে শেষ করতে চাই।
* শুরু থেকেই তো বরিশালের হয়ে খেলছেন। এবারই কি দলটাকে সবচেয়ে বেশি ভারসাম্যপূর্ণ মনে হচ্ছে?
শাহরিয়ার: আমরা আসলে গত বছর থেকেই ভারসাম্যপূর্ণ হয়ে উঠেছি। দলে পারফরমার বেড়েছে। তা ছাড়া গত বছর প্রথম ম্যাচটা খুব বাজেভাবে হারার পর ফাহিম স্যার (কোচ নাজমুল আবেদীন) একদিন আমাদের সঙ্গে বসেছিলেন, উৎসাহ দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই দলের সবার মানসিকতা বদলে যায়।
* ঠিক কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে মানসিকতায়?
শাহরিয়ার: ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আক্রমণাত্মক মনোভাবটা আসে। আমরা ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে খেলার চেষ্টা শুরু করি। এতে করে গতবারও আমরা অনেকগুলো ম্যাচে ভালো খেলেছি। হয়তো জয় পাইনি, কিন্তু ভালো খেলে ড্র করেছি।
* এবার তো ২৬ ম্যাচ পর জয় পেলেন। কেমন লাগছিল সিলেটকে হারানোর পর?
শাহরিয়ার: খুব নির্ভার লাগছিল। এর আগে অনেক ম্যাচেই আমরা প্রথম ইনিংসে লিড নিয়ে বা প্রতিপক্ষকে ফলোঅনে ফেলেও ম্যাচ ড্র করেছি। কিন্তু জিততে পারছিলাম না। জেতার অনুভূতিটা তাই ছিল অন্য রকম। আমি তো জাতীয় লিগে এর আগে সর্বশেষ ম্যাচ জেতার স্বাদ পেয়েছি চার বছর আগে। ২০১১-১২ মৌসুমে জেতা ম্যাচটা জাতীয় দলে থাকার কারণে খেলা হয়নি আমার।
* দলে এখন অনেক তরুণ পারফরমার। এটাও তো বরিশাল দলের জন্য একটা ইতিবাচক দিক?
শাহরিয়ার: নতুনরা তো বটেই, আমি বলব সবাই ভালো খেলছে। আজ এ ভালো পারফর্ম করছে তো কাল ও ভালো করছে। কারও একার ওপর নির্ভরশীল নই আমরা। দলের এই অবস্থানে আসার পেছনে সবারই সমান অবদান আছে।
* এখন তো বরিশালের স্থানীয় খেলোয়াড়ের সংখ্যাও বেড়েছে...
শাহরিয়ার: ২০১০ সাল থেকেই এই চেষ্টাটা করছি আমরা। তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নিই, আমরা স্থানীয় খেলোয়াড়দের ওপর জোর দেব। তাহলে বিভাগের প্রতি সবার একটা আবেগ কাজ করবে। এই মুহূর্তে আল আমিন আর সৈকত (মোসাদ্দেক হোসেন) ছাড়া বরিশাল দলে বাইরের কোনো খেলোয়াড় নেই।
* নিজের কথা বলুন। পাঁচ ম্যাচে ৩৭৩ রান করেছেন ৪টি ফিফটিসহ। এই পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট?
শাহরিয়ার: এবার এখন পর্যন্ত আমার রানের গড় ৪৭। গত এক বছরের কথা যদি ধরি, ১৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে আমি ১৪ শর মতো রান করেছি। কাজেই আমি মনে করি আমার পারফরম্যান্স ঠিকই আছে। এবার হয়তো এখনো সেঞ্চুরি পাইনি। শেষ ম্যাচে চেষ্টা করব।
* জাতীয় দলে ফেরার স্বপ্ন দেখেন?
শাহরিয়ার: আমার অনেক রান করার ইচ্ছা। জাতীয় দলে ফেরাটা বোর্ড, নির্বাচক—অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। তা ছাড়া এখন প্রতিযোগিতাও বেড়েছে। আমি চাই এত বেশি রান করতে, যাতে আমাকে জাতীয় দলে ডাকা নিয়ে কোনো প্রশ্ন না থাকে। কেউ যেন বলতে না পারে, শাহরিয়ার নাফীস! ও তো ফর্মে নেই।