মা-বাবাকে মিথ্যা বলে বেশি দূর যাওয়া যায় না: রুবানা হক

তারুণ্যের জয়োৎসবে বক্তৃতা করেন বিজিএমইএর সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক। ঢাকা, ২৪ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো
তারুণ্যের জয়োৎসবে বক্তৃতা করেন বিজিএমইএর সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক। ঢাকা, ২৪ এপ্রিল। ছবি: প্রথম আলো

‘আমি এখানে দাঁড়িয়েছি প্রথমত একজন মা হিসেবে। দ্বিতীয়ত, আমি মনে করি আপনাদের মতো আমিও একজন তরুণ। কারণ আমার মধ্যে একটা পাগলামি আছে। তৃতীয়ত, আমি একজন উদ্যোক্তা।’ কথাগুলো রুবানা হকের, যিনি পোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নবনির্বাচিত সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আজ বুধবার ঢাকার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ক্রাউন সিমেন্ট-প্রথম আলো তারুণ্যের জয়োৎসবের জাতীয় উৎসবে অতিথি হয়ে এসেছিলেন তিনি।

তরুণদের পরামর্শ দিতে গিয়ে মা-বাবা, পরিবারের কাছাকাছি থাকার ওপর জোর দেন রুবানা হক। তিনি মনে করেন, বন্ধুরা মানুষের জীবনে অবশ্যই প্রভাব ফেলবে। কিন্তু সবার আগে মা-বাবা-পরিবার। ‘আপনাদের মধ্যে কজন মা-বাবার কাছে সব সময় সত্য কথা বলেন? হাত তুলুন।’ তরুণদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুড়ে দেন তিনি। মিলনায়তনজুড়ে বসে থাকা অনেক তরুণের উঁচু করে তোলা হাতগুলো একবার দেখে নিয়ে তিনি বলেন, ‘সফলতার অর্ধেকটা পথ আপনারা পাড়ি দিয়ে ফেলেছেন।’ পরে রুবানা নিজেই বলেন, ‘মা-বাবাকে মিথ্যা বলে কিন্তু বেশি দূর যাওয়া যায় না। যা-ই করতে যাবেন, মা-বাবা প্রথমেই হয়তো বলবেন এটা না করলে হয় না? অথবা এটা করে সময় নষ্ট করছ। কিন্তু, তাঁদের বোঝাতে হবে। বারবার বসতে হবে। আদর করতে হবে। জড়িয়ে ধরতে হবে। মা-বাবার সঙ্গে কখনো যেন দূরত্ব তৈরি না হয়। রুমের মধ্যে বন্দী হয়ে বসে থাকবেন না।’

ক্রাউন সিমেন্ট-প্রথম আলো তারুণ্যের জয়োৎসবের জাতীয় পর্বে বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, ঢাকা, ২৪ এপ্রিল। ছবি: সাইফুল ইসলাম
ক্রাউন সিমেন্ট-প্রথম আলো তারুণ্যের জয়োৎসবের জাতীয় পর্বে বক্তব্য দেন বিজিএমইএর সভাপতি ও মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন, ঢাকা, ২৪ এপ্রিল। ছবি: সাইফুল ইসলাম

তরুণদের অনুপ্রেরণা দিতে গিয়ে স্বামী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের কথা স্মরণ করেন রুবানা হক। তিনি বলেন, ‘আমার স্বামী আনিসুল হক ৮ মাইল হেঁটে স্কুলে যেতেন। মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন। দেশ গ্রুপে চাকরি নিয়েছিলেন। ট্রাকের পেছনে উঠে মাল নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে যেতেন। এই হলো তাঁর শুরু।’ রুবানা হকের পুরো বক্তৃতা অনুপ্রেরণা দিয়েছে তরুণদের। কথার মাঝখানে তাঁকে বারবার বিরতি নিতে হয়েছে, তরুণদের হাততালি থামার অপেক্ষায়।

বিজিএমইএর সভাপতি হিসেবে তরুণদের পাশে থাকবেন বলে কথা দেন রুবানা হক। তিনি বলেন, ‘তোমরা দল বেঁধে আসো। আমাদের কারখানাগুলো ঘুরে দেখো। দারুণ কোনো আইডিয়া দাও। কীভাবে আমরা আরও ভালো করতে পারি, বলো।’ তরুণদের জন্য একটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা আয়োজনের ইচ্ছের কথা বলেন তিনি।

সারা দিনব্যাপী আয়োজিত তারুণ্যের জয়োৎসবে এসেছিলেন নানা ক্ষেত্রের সফল মানুষেরা। বিভিন্ন আলোচনা, কর্মশালা, সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারা দেশ থেকে আসা তরুণেরা যতটা সম্ভব এই সুযোগ কাজে লাগাতে চেষ্টা করেছেন।