অনলাইন বিপণনে সিপিএ

তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক আউটসোর্সিংয়ে নানা রকম কাজের সুযোগ রয়েছে। এর একটা হচ্ছে সিপিএ। সিপিএর পূর্ণরূপ কস্ট পার অ্যাকশন। ক্রেতাকে দিয়ে ক্লায়েন্টের নির্দিষ্ট কোনো ওয়েব পেজে নিবন্ধন, জরিপ, ই-মেইল সাবমিট, জিপ সাবমিট, ডাউনলোড, পারচেজ অর্ডার করিয়ে নেওয়া গেলে সিপিএ মার্কেট ক্রেতার প্রতিটি অ্যাকশনের জন্য বিপণনকারী বা মার্কেটারকে অর্থ দেয়। প্রতিটি অ্যাকশনের ভিত্তিতে যে অর্থ পাওয়া যায়, তাই-ই সিপিএ। যেমন কোনো একটি সাইটে বলল যে, তাদের সাইটে সাইনআপ করিয়ে দিলে প্রতিটি সাইনআপের জন্য ৫ ডলার করে দেওয়া হবে। আর এভাবে বিপণন করে আয় করাকে সিপিএ বলে। যাঁরা অনলাইন বিপণনের কাজ করেন তাঁদের এই বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার।

ফ্রিল্যান্সিং এবং সিপিএর মধ্যে পার্থক্য
ফ্রিল্যান্সিংয়ে এই অনলাইন কাজের বাজার (মার্কেট প্লেস) থেকে বিড করে কাজ নামাতে হয় এবং প্রতি ঘণ্টায় বা নির্দিষ্ট অঙ্কের পারিশ্রমিক পাওয়া যায়। সিপিএতে বিড করে কাজ নামাতে হয় না। হাজার হাজার অফারের কাজ দেওয়া থাকে। প্রতিটা বিক্রয় বা সাইনআপের জন্য সঙ্গে সঙ্গেই অর্থ জমা হয় অ্যাকাউন্টে।

অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট বনাম সিপিএ অ্যাফিলিয়েশন
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েশনে পণ্য বিক্রি হলেই তবে কমিশন পাওয়া যায়। সিপিএতে পণ্য বিক্রির কমিশন তো আছেই, পাশাপাশি পণ্য বিক্রি না হলে শুধু বিনা মূল্যের সাইনআপ, জরিপ বা লিডস সাবমিটের জন্য পারিশ্রমিক পাওয়া যায়।

কেন সিপিএ বিপণন জনপ্রিয়?
তুলনামূলকভাবে অনেক কম বিনিয়োগ এবং কম সময়ে ভালো আয় করা যায়। দল গঠন করে নিজের স্বাধীন ব্যবসায় উদ্যোগ শুরু করা যায়।

নতুনেরাও পারেন আয় করতে
যেহেতু সিপিএতে পণ্য বিক্রির পাশাপাশি বিনা মূল্যের সাইনআপ, জরিপ, ডাউনলোডের মতো কাজও আছে, তাই সঠিকভাবে কাজ করলে আয় করা সম্ভব।

সিপিএ বিপণন যখন পেশা
প্রতিটি ব্যবসাতেই বিক্রয় ও বিপণনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ডিজিটাল বিপণনের অন্যতম উদাহরণ হলো সিপিএ, যা শিখে ঘরে বসেই আয় করা যায়। বিদেশের বাজারে বিপণন অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজের ব্যবসায় বাড়াতে পারবেন। ডিজিটাল যুগে নিজেকে একজন দক্ষÿডিজিটাল মার্কেটার হিসেবে তৈরি করতে পারলে বড় কোনো প্রতিষ্ঠানেও পেশা গড়া যায়।

সিপিএতে যেভাবে আয় করা যায়
সিপিএতে আয় করা যায় মূলত দুভাবে—
১. পিপিএল: ফ্রি সাইনআপ, সার্ভে, জিপ সাবমিট এবং কনটেন্ট নামানোর জন্য কাজ করে।
২. পিপিএস: পণ্য বা সেবা বিক্রি করে। সিপিএতে কাজের সময়, দক্ষতা ও বিনিয়োগের ওপর আপনার আয় নির্ভর করবে। প্রতিদিন ৪-৫ ঘণ্টা কাজ করলে ফ্রি পদ্ধতিতে ১০ থেকে ২০ ডলার আয় করা সম্ভব। পেইড মেথডে পদ্ধতিতে ৫০ ডলারের বেশি আয় করা যায়।

অর্থ পাওয়ার মাধ্যম কী?
পাইওনিয়ার মাস্টারকার্ড, পেপ্যাল, চেক এবং সরাসরি ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ তোলা সম্ভব।

সিপিএ বিপণন শিখতে কী লাগে?
কম্পিউটার, ইন্টারনেট সংযোগ, সঠিক নির্দেশনা, মনোযোগী সময়, পরিশ্রম ও শেখার প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকলেই চলে। এ ছাড়াও সিপিএ নেটওয়ার্কে অ্যাপ্রুভাল কৌশল, ওয়ার্ডপ্রেস, ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন, এসইও, সোশ্যাল মিডিয়া বিপণন, পিপিসি প্রচারণা, শ্রেণিবদ্ধ বিজ্ঞাপন প্রকাশ, ই-মেইল বিপণন জানা থাকতে হবে এবং সার্ভার থাকতে হবে।

যেসব বিষয় নিয়ে কাজ করা যায়
সার্চ ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে থাকা পণ্যের অফার যেমন: হেলথ অ্যান্ড বিউটি, সফটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপস, অ্যান্ড্রয়েড গেম, ডিজিটাল পণ্য, ই-কমার্স পণ্য, ঋণ ও বিমা, চাকরি এবং বিয়ের সাইটের অফার নিয়ে কাজ করা যেতে পারে।

কোন কোন মার্কেটপ্লেসে পাওয়া যায়?
সিপিএ অফার সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় ম্যাক্সবাউটি ওয়েবসাইটে। এ ছাড়াও ক্যাশ নেটওয়ার্ক ডটকম, পিয়ারফ্লাই ডটকম, সিজে ডটকমেও সিপিএ অফার পেতে পারেন।
লেখক: ওয়েব ডেভেলপার ও ই-কমার্স উদ্যোক্তা

.
.