বাংলাদেশি সফটওয়্যারে আগ্রহ তিন দেশের

ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল (ডান থেকে), মালদ্বীপের সশস্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তা উপমন্ত্রী তারিক আলী লুথুফি ও কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডাইডোন কালোম্বো ।
ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল (ডান থেকে), মালদ্বীপের সশস্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তা উপমন্ত্রী তারিক আলী লুথুফি ও কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডাইডোন কালোম্বো ।

বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের তৈরি সফটওয়্যারে আগ্রহ দেখিয়েছে ভুটান, মালদ্বীপ ও কঙ্গো। বাংলাদেশি সফটওয়্যার নির্মাতারা খুব ভালো কাজ করছেন বলে প্রশংসা করেছেন ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল, মালদ্বীপের সশস্ত্র ও জাতীয় নিরাপত্তা উপমন্ত্রী তারিক আলী লুথুফি ও কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডাইডোন কালোম্বো। বাংলাদেশি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাঁদের দেশে কাজের সুযোগ দেওয়ার আগ্রহের কথা বলেছেন। সম্প্রতি রাজধানীর দোহাটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে এসে তাঁদের আগ্রহের কথা জানান তাঁরা।

দীননাথ দুঙ্গায়েল, তারিক আলী লুথুফি ও কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডাইডোন কালোম্বো বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৭ উপলক্ষে ঢাকায় আসেন। ৭ ডিসেম্বর মিনিস্টরিয়েল কনফারেন্সে অংশ নেন তাঁরা। ওই অনুষ্ঠানে নিজ দেশের তথ্যপ্রযুক্তির অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন তাঁরা। ওই সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশের কয়েকটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখার আগ্রহের কথা জানান ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল। দুঙ্গায়েল বলেন, ইতিমধ্যে ভুটানের ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) নিয়ে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশের দোহাটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

৮ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনে দোহাটেকের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন ভুটান, মালদ্বীপ ও কঙ্গোর এ তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। দোহাটেকের অফিস পরিদর্শনে এসে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন নিয়ে সন্তুষ্টির পাশাপাশি সফটওয়্যার নিয়ে আগ্রহ দেখান তাঁরা। সে দেশে বাংলাদেশি সফটওয়্যার ব্যবহারের সম্ভাবনা যাচাই করে দেখছেন বলে জানান তাঁরা।

ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েলের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয় দোহাটেকের কার্যালয়ে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তিন বছর ধরে বাংলাদেশের উন্নতি লক্ষ করছি। দ্রুত এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে। এ দেশের জনগণের বেশির ভাগই তরুণ। তাদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তিতে সম্ভাবনা বেশি। ভুটানের চেয়ে বাংলাদেশ অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। কারণ এখানে আছে দূরদর্শীসম্পন্ন নেতৃত্ব ও সম্ভাবনাময় উদ্যোগগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। ধীরে ধীরে এখানে অবকাঠামো গড়ে উঠছে। ভুটান বাংলাদেশকে অনুসরণ করছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ আরও উন্নত ও স্মার্ট হবে।’ দীননাথ দুঙ্গায়েল বলেন, ভুটানে বাংলাদেশের কয়েকটি তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। এখনো সবুজ প্রযুক্তি (গ্রিনটেক), কৃষিপ্রযুক্তিসহ (এগ্রোটেক) নানা ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করার সুযোগ আছে।

দোহাটেকের কার্যালয় পরিদর্শন শেষে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল।
দোহাটেকের কার্যালয় পরিদর্শন শেষে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছবি তোলেন ভুটানের তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী দীননাথ দুঙ্গায়েল।

তারিক আলী লুথুফি বলেন, বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে অনেক উন্নতি করেছে। এখানকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বাইরে কাজ করছে। মালদ্বীপও তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে কাজ করছে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা ডাইডোন কালোম্বো বলেন, ‘কঙ্গোর তরুণদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তিতে কাজ করার সম্ভাবনা অনেক। বাংলাদেশ আমাদের কাছে উদাহরণ হতে পারে। তরুণদের জন্য কাজের সুযোগ করে দিলে তারা দেশকে এগিয়ে নিতে পারবে। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান কঙ্গোতে কাজ করতে পারে কি না, সে বিষয়টি আলোচনা করা হবে।’

দোহাটেক নিউ মিডিয়ার চেয়ারম্যান লুনা শামসুদ্দোহা বলেন, তিন দেশের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও পরামর্শক বাংলাদেশি সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করার বিষয়টি সম্মানের। তাঁদের সামনে ই-জিপিসহ বিভিন্ন সফটওয়্যার বিষয় উপস্থাপন করা হয়েছে। তাঁরা পরিচয় শনাক্তকরণ প্রযুক্তিতে বেশ আগ্রহ দেখিয়েছেন। এ ছাড়াও দরিদ্র মানুষের কাছে নিরাপদ অর্থ পাঠানোর প্রযুক্তিতেও তাঁদের আগ্রহ ছিল।