জ্ঞানমেলার উৎসবমুখর দশম আয়োজন

জ্ঞানমেলার একটি স্টলে ক্যানসার নির্ণয়ে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দেখানো হয় l প্রথম আলো
জ্ঞানমেলার একটি স্টলে ক্যানসার নির্ণয়ে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দেখানো হয় l প্রথম আলো

জ্ঞানমেলা কী-স্থানীয় লোকজন তো বটেই, দূরের মানুষেরাও তা জানেন। তাই বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার শ্রীফলতলা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ আয়োজনের জন্য অপেক্ষা থাকে মানুষের মধ্যে। ২০০৪ সালে আমাদের গ্রাম উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্পের উদ্যোগে শুরু হয়েছিল এই জ্ঞানমেলা। গতকাল শনিবার সেই মাঠেই হলো জ্ঞানমেলার দশম আয়োজন।

লোকজ মেলার সব উপাদান, গ্রামে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার আর বিকাশের প্রদর্শনী-জ্ঞানমেলার এমন বৈশিষ্ট্যই দাঁড়িয়ে গেছে। মুড়ি-মুড়কি, নাগরদোলা, হস্তশিল্প, কৃষির উদ্ভাবন থেকে শুরু করে স্কুলের কম্পিউটার ডেটাবেইস, পাঠ্যসূচির ডিজিটাল সংস্করণ সবই দেখা গেল গতকালের জ্ঞানমেলায়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মেলায় মানুষের ভিড়ে তৈরি হলো উৎসবমুখর পরিবেশ।

সকালে জ্ঞানমেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ তালুকদার আবদুল খালেক। এ সময় তিনি বলেন, এ রকম মেলা থেকে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা অনেক কিছু শিখতে পারবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান মিহির কান্তি মজুমদার বলেন, স্থানীয় বা লোকজ জ্ঞান এবং আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটানো গেলে দেশের উন্নয়ন দ্রুততর হবে।

অনুষ্ঠানে চিত্রশিল্পী মাহমুদুল হক, বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায়, বেসরকারি সংস্থা উদ্দীপনের নির্বাহী পরিচালক এমরানুল হক চৌধুরী, রূপান্তরের স্বপন গুহ, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষক আফরোজা পারভীন, রামপালের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তুষার পাল, জ্ঞানমেলা পরিষদের আহ্বায়ক শেখ আবদুল জলিলসহ অনেকে বক্তৃতা করেন।

আমাদের গ্রাম উন্নয়নের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্পের সম্পাদক রেজা সেলিম জানান, জ্ঞানমেলার এই দশম আয়োজনের বিষয় ‘উন্নয়নে গণ-সম্পৃক্ত প্রযুক্তির বিকল্প নেই’। মেলার স্টলগুলোতে সেসবের উদাহরণ দেখানো হচ্ছে। মেলার প্রতিপাদ্য নিয়ে মূল বক্তব্য দেন বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসান। তিনি বলেন, গ্রামে প্রযুক্তি ছড়িয়ে দেওয়ার বিকল্প নেই। বিশ্বে এখন এটা প্রমাণিত যে মেধাভিত্তিক কাজই এখন সবচেয়ে বেশ দামি।

স্কুল মাঠের চারদিকে সাজানো হয় স্টলগুলো। উপজেলা কৃষি অফিস উচ্চফলনশীল ধান প্রদর্শন করে। আমাদের গ্রামের স্টলে আমাদের গ্রাম ব্রেস্ট ক্যানসার সেন্টার স্তন ক্যানসার নিরীক্ষণে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার দেখায়। এ ছাড়া তাদের তৈরি এজি প্যালিয়াটিভ কেয়ার অ্যাপ দেখায়। গত বছর প্রয়াত আমাদের গ্রামের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিমকে এই স্টল উৎসর্গ করা হয়েছে। মেলায় আরও অংশ নেয় পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, আমাদের কারুদল, ওয়ার্ল্ডভিশন রামপাল এরিয়া প্রোগ্রাম, কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, শ্রীফলতলা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঝনঝনিয়া ছিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসা, গিলাতলা সরকারি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাইনতলা ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ফয়লাহাট কামালউদ্দীন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ঝনঝনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও শান্তিসংঘ।

জ্ঞানমেলা উপলক্ষে ছাত্রছাত্রীদের জন্য গণিত, চিত্রাঙ্কন, রচনা লেখা এবং দাবা, ক্যারম ও লুডু খেলার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।