পাইপ পরিদর্শন রোবট নিয়ে রাশিয়ার স্টার্টআপ ভিলেজে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা

বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তৈরি পাইপ ইন্সপেকশন রোবটের প্রোটোটাইপ। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের তৈরি পাইপ ইন্সপেকশন রোবটের প্রোটোটাইপ। ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশের দুই তরুণ উদ্ভাবক তৈরি করেছেন পাইপ পরিদর্শনের উপযোগী বিশেষ একধরনের রোবট। নিজস্ব অর্থায়নে ও উদ্যোগে তৈরি এ রোবট নিয়ে তাঁরা অংশ নিচ্ছেন রাশিয়ার ‘স্টার্টআপ ভিলেজ’ নামের একটি উদ্যোক্তাদের বিশেষ প্রতিযোগিতায়। এখানে বিভিন্ন দেশের উদ্যোক্তারা তাঁদের উদ্ভাবন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরে বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করার সুযোগ পান।

আজ বুধবার থেকে শুরু এই ‘স্টার্টআপ ভিলেজ’ নামের উদ্যোক্তাদের বিশেষ আয়োজন চলবে আগামী ১ জুন পর্যন্ত। রাশিয়া ও সিআইএস অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে আয়োজিত সবচেয়ে বড় মেলা এ ‘স্টার্টআপ ভিলেজ’, যা প্রতিবছর রাশিয়ার স্কলকোভো শহরে আয়োজিত হয়। এ মেলায় অংশ নিতে সারা পৃথিবী থেকে আসে নামীদামি সব স্টার্টআপ কোম্পানি, আন্তর্জাতিক আইটি ও ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান। দুই দিনব্যাপী চলা এ মেলা আয়জন করে থাকে রাশিয়ার স্কলকোভো ফাউন্ডেশন।

এবারের মেলায় প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ রোবোটিকস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রদর্শিত হচ্ছে পাইপ ইন্সপেকশন রোবট। এ রোবটের কাজ হচ্ছে গ্যাস অথবা পানির পাইপের ব্লক বা ফাটল নির্ণয় করা ও পাইপলাইন-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় সব তথ্য আহরণ করা।

নতুন উদ্ভাবকদের তৈরি রোবট দেখছেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম।
নতুন উদ্ভাবকদের তৈরি রোবট দেখছেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম।

রোবোটিকস ফাউন্ডেশনের টিম লিডার তানভির তাবাসসুম বলেন, পাইপ ইন্সপেকশন রোবট ব্যবহারের মাধ্যমে জীবনের ঝুঁকি কমবে। প্রতিবছর ঢাকা শহরের বন্যা ও অধিক বৃষ্টিপাতের ফলে জনজীবনে যে দুর্বিষহ প্রভাব পড়ে, তা থেকেও পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শহরতলির পাইপলাইনে কোনো ধরনের সমস্যা বা ব্লক আছে কি না, তা আগাম জানা যাবে। এতে ঢাকা ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনগুলো আগাম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সারিয়ে তুলতে পারবে ত্রুটিযুক্ত পাইপ। এর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সময় বাঁচবে, ব্যয় কমবে। ঘনঘন রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির প্রবণতা ও জনদুর্ভোগ কমে যাবে।

জার্মানিতে উচ্চতর শিক্ষা নেওয়া তানভির প্রথম আলোকে বলেন, উন্নত বিশ্বে এ প্রযুক্তির ব্যবহার একেবারে নতুন নয়। তবে বাংলাদেশের জন্য দারুণ কার্যকর রোবটটিকে কম খরচে ব্যবহারের উপযোগী করা হয়েছে। আপাতত এটির প্রোটোটাইপ রাশিয়ায় তুলে ধরা হচ্ছে। এটি তৈরিতে সহযোগিতা পেলে তাতে আরও নানা ফিচার যুক্ত করে উন্নত রোবটে রূপ দেওয়া হবে।

রোবটটির নকশাবিদ ও বাংলাদেশ রোবোটিকস ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুল ইমরান রোবটটি আরও উন্নত করার এবং পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করার আশা প্রকাশ করেন।

দেশে এ রোবটের উদ্বোধন করে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম বলেছিলেন, দেশের তরুণ উদ্যোক্তারা অনেক ভালো ভালো কাজ করছেন। তরুণদের উদ্ভাবনী কাজে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ পাশে থাকবে বলে জানান তিনি।