এখন লক্ষ্য পর্তুগাল

সাস্ট ডেসাইফ্রাডর দলের সদস্য বাঁ থেকে মওদুদ খান, অভিষেক পাল, সাইফুল ইসলাম (কোচ) ও জুবায়ের আরাফ। ছবি: আনিস মাহমুদ
সাস্ট ডেসাইফ্রাডর দলের সদস্য বাঁ থেকে মওদুদ খান, অভিষেক পাল, সাইফুল ইসলাম (কোচ) ও জুবায়ের আরাফ। ছবি: আনিস মাহমুদ

১০টি সমস্যা। সময় ৫ ঘণ্টা। প্রতি দলে তিনজন প্রোগ্রামার। কারও চোখ ল্যাপটপের মনিটরে, কেউবা খাতা–কলম নিয়ে জটিল হিসাব কষতে ব্যস্ত। সবার লক্ষ্য সেরা হওয়া। ঘড়ির কাঁটার শব্দের সঙ্গে প্রতিযোগীদের বুকের টিকটিক শব্দের বেগও বাড়ছে। শেষ বিকেলে মূল মঞ্চে ডিজিটাল পর্দায় সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সাস্ট ডেসাইফ্রাডর’ নামটি উজ্জ্বল থেকে আরও উজ্জ্বলতর হচ্ছিল। অবশেষে প্রতিযোগিতার প্রধান বিচারক অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় জানালেন, বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং আসর এসিএম আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার (আইসিপিসি) ঢাকা আঞ্চলিক পর্বের চ্যাম্পিয়ন সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সাস্ট ডেসাইফ্রাডর’। বিশ্ববিদ্যালয়টির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ছাত্র মওদুদ খান শাহরিয়ার, জুবায়ের আরাফ ও অভিষেক পাল এ দলের সদস্য। এ দলটি আগামী বছর পর্তুগালে অনুষ্ঠেয় আইসিপিসির চূড়ান্ত পর্বে সরাসরি অংশ নেবে। ঢাকা পর্ব থেকে আরও দু–একটি দল পরে সুযোগ পেতে পারে।

১০ নভেম্বর ড্যাফোডিল আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডিআইইউ) এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের আয়োজনে তিনজনের কাছেই ছিল নতুন এক অভিজ্ঞতা। তাঁরা জানালেন, বাংলাদেশে আগে যত প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা হয়েছে, সেগুলো কয়েকটা কম্পিউটার ল্যাবে আয়োজন করা হতো। কিন্তু এ বছর এসিএম আইসিপিসি ঢাকা পর্ব সব দলকে এক ছাদের নিচে রেখে আয়োজন করা হয়েছিল।

 লক্ষ্য মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়ন

চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ দল তেমন ভালো ফল করছে না। এবারের প্রস্তুতি বা প্রত্যাশা কেমন? আমরা আমাদের কোচ সাইফুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ওয়ার্ল্ড ফাইনালসের জন্য অনুশীলন শুরু করেছি। চূড়ান্ত পর্বে দক্ষিণ এশিয়া ও ইরানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে একটা কন্টিনেন্ট আছে। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে এই কন্টিনেন্টের চ্যাম্পিয়ন হওয়া—এমনটাই জানান তিনজন।

 মজার প্রোগ্রামিং

প্রোগ্রামিংয়ের জগৎটা অনেক মজার। আইসিপিসিতে অংশ নিলে এই মজার কাজের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায়। এ রকম কাজ খুবই কম আছে, যেটা করলে মজা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে শিক্ষাগত ও পেশাগত জীবনে ভালো প্রভাব ফেলা যায়। প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রামিং এ রকমই একটা কাজ। কোডিং–দক্ষতা যেকোনো সেক্টরে প্রয়োগ করা যাবে। এ কারণে সিএসইতে পড়াশোনা করলে সবারই অল্প কয়েক দিনের জন্য হলেও প্রোগ্রামিং কনটেস্টে অংশ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন দলটির কোচ সাইফুল ইসলাম।

 আগামীর প্রোগ্রামার তৈরির সিঁড়ি

মওদুদ খান, জুবায়ের আরাফ ও অভিষেক পাল মনে করেন, প্রোগ্রামিংয়ের সমস্যা সমাধান অনেক মজার একটি অভিজ্ঞতা। যাঁরা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে চান, তাঁদের জন্য পরামর্শও দিলেন এই তিনজন। কেউ যদি প্রোগ্রামিং শুরু করে, তাহলে তার কাজটা ভালোবেসে করা উচিত। প্রোগ্রামিং শুরু করার পর অনেক সময় অনেকেই হতাশ হয়ে যায়। এই খাতে সময় দিলে, পরিশ্রম করলে সাফল্য আসবেই। এ জন্য ধৈর্য ধরে অনুশীলন চালিয়ে যেতে হবে।