অবশিষ্ট কত থাকবে?

গণিত চর্চায় মাথা খোলে। কথাটা যে খুবই সত্য, এখনই তার প্রমাণ দিচ্ছি। ধরুন একটি গাণিতিক ধারা এ রকম: ৩, ৬, ১৫, ১৮, ৭৫ ...। এখন বলতে হবে এর পরের সংখ্যাগুলো কী? একেবারে মাথা গুলিয়ে যায়। সব উল্টাপাল্টা। কিছু বোঝা যায় না। কিন্তু একটু মাথা খাটালে সমাধান সহজ হয়ে যায়। আমাদের প্রথমে বের করতে হবে প্রদত্ত রাশিমালা যেভাবে লেখা হয়েছে, তার মধ্যে বিশেষ কোনো নিয়ম আছে কি না। এই নিয়মটা ধরতে পারলেই উত্তর বের করা যায়। এখানে লক্ষ করলে দেখা যাবে, দ্বিতীয় সংখ্যাটি লেখা হয়েছে প্রথম সংখ্যার সঙ্গে ৩ যোগ করে। (৩ + ৩) = ৬। আর তৃতীয় সংখ্যাটি হলো প্রথম সংখ্যাটির ৫ গুণ, (৩×৫) = ১৫। এখন দেখা যাক, এই বিশেষ নিয়মটি পরের রাশিমালায় খাটে কি না। আমরা দেখছি, পরের সংখ্যাটি ১৮ = (১৫ + ৩) এবং এর পরের সংখ্যাটি (১৫×৫) = ৭৫। তাহলে বোঝা গেল, রাশিমালাকে প্রথমে দুটি করে জোড়া বাঁধতে হবে। এই জোড়ার প্রথম সংখ্যার সঙ্গে ৩ যোগ করে পরের সংখ্যাটি পাওয়া যাবে এবং প্রথম সংখ্যার ৫ গুণ হবে পরের জোড়ার প্রথম সংখ্যাটি। এটাই প্রদত্ত রাশিমালায় অনুসৃত নিয়ম। সুতরাং আমরা বলতে পারি, প্রদত্ত ধারায় ৭৫–এর পরের সংখ্যাটি হবে (৭৫ + ৩) = ৭৮। এর পরের সংখ্যাটি হবে (৭৫×৫) = ৩৭৫। এরপর আসবে ৩৭৮ এবং তারপর (৩৭৫×৫) = ১৮৭৫। এভাবে পুরো ধারাটি হবে ৩, ৬, ১৫, ১৮, ৭৫, ৭৮, ৩৭৫, ৩৭৮, ১৮৭৫ ...।

এ ধরনের একটি সহজ ধারা দেখুন। ১, ২, ৪, ৫, ৭...। বলতে হবে, ৭–এর পর কী? এটা অবশ্য খুব সহজ। কারণ, দেখাই যাচ্ছে, প্রতি জোড়া রাশির প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্যা দুটি ক্রমিক মানের। কিন্তু এর পরের জোড় সংখ্যা দুটির প্রথমটি পূর্বের জোড় এর শেষ সংখ্যাটির পর একটি সংখ্যা বাদ দিয়ে লেখা হয়েছ। যেমন ১–এর পর ২। কিন্তু এরপর ৩ বাদ দিয়ে ৪ ও ৫। এখন নিয়মটি বোঝা গেল। ৭–এর পর হবে ৮, এরপর ৯ বাদ দিয়ে ১০ ও ১১। তারপর আবার একই ধারায় ১৩ ও ১৪। সুতরাং ধারাটি ১, ২, ৪, ৫, ৭, ৮, ১০, ১১, ১৩, ১৪...।

এ সপ্তাহের ধাঁধা
ক্যালকুলেটর ব্যবহার না করে চট করে বলতে হবে ১০,০০০–কে ১০১ দিয়ে ভাগ করলে কত অবশিষ্ট থাকবে?


খুব সহজ। অনলাইনে মন্তব্য আকারে অথবা [email protected] ই–মেইলে আপনাদের উত্তর পাঠিয়ে দিন। সঠিক উত্তর দেখুন আগামী রোববার অনলাইনে।

গত সপ্তাহের ধাঁধার উত্তর
ধাঁধাটি ছিল এ রকম: কিছু কমলার চার ভাগের এক ভাগ প্রথম দিন এবং পর দিন বাকি কমলার এক-তৃতীয়াংশ খেলাম । অবশিষ্ট থাকল ২টি। প্রথমে মোট কয়টি কমলা ছিল।


উত্তর
মোট ৪টি কমলা ছিল।

প্রায় সবাই সঠিক উত্তর দিয়েছেন। ধন্যবাদ।

কীভাবে উত্তর বের করলাম
প্রথমে খেয়েছি চার ভাগের এক ভাগ। থাকল চার ভাগের তিন ভাগ। এর এক–তৃতীয়াংশ খাওয়া মানে (১/৪)টি কমলা খাওয়া। তাহলে মোট খাওয়া হলো (১/৪ + ১/৪) = (২/৪) = (১/২)। বাকি থাকল (১/২)। অর্থাৎ দ্বিতীয় দিন খাওয়ার পর অবশিষ্ট থাকল মোট কমলার অর্ধেক। এই অর্ধেক = ২। সুতরাং মোট কমলা এর দ্বিগুণ = ৪। বীজগণিতের সাহায্যেও আমরা উত্তর বের করতে পারি। মনে করি, মোট কমলা = ক। প্রথম দিন খেলাম (ক/৪)। দ্বিতীয় দিন খেয়েছি (ক - ক/৪) এর (১/৩) = (৩ক/৪ এর ১/৩) = (ক/৪) । সুতরাং মোট খাওয়া হলো (ক/৪ + ক/৪) = (২ক/৪) = (ক/২)। অবশিষ্ট থাকল = (ক/২)। শর্তানুযায়ী, (ক/২) = ২। সুতরাং ক = ৪।
আব্দুল কাইয়ুম, সম্পাদক, মাসিক ম্যাগাজিন বিজ্ঞানচিন্তা