'গণিত ছাড়া আমাদের এক মুহূর্তও চলে না'

‘সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যবহারিক জীবনে গণিতের সঙ্গে আমরা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। গণিত মানুষকে ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনে সমস্যার সমাধান করতে শিক্ষা দেয়। গণিত ছাড়া আমাদের এক মুহূর্তও চলে না।’

কথাগুলো দিনাজপুর সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মাসুদুল হকের। দিনাজপুরে মঙ্গলবার ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসবের বাছাইপর্বে তিনি এসব কথা বলেন।

শিক্ষার্থীদের গাণিতিক মেধার উৎকর্ষ বৃদ্ধি ও ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ৬০তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের (আইএমও) জন্য বাংলাদেশ দল নির্বাচনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী এ গণিত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। প্রথমে ৬৪ জেলায় বাছাই অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হবে। বাছাই অলিম্পিয়াডের ফল ঘোষণা করা হবে গণিত অলিম্পিয়াডের ওয়েবসাইটে (www.matholympiad.org.bd)।

বাছাইপর্বের বিজয়ীদের নিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ১২টি শহরে অনুষ্ঠিত হবে আঞ্চলিক পর্ব। তারপর আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীদের নিয়ে মার্চে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় উৎসব। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির আয়োজনে ১৭তম বারের মতো এই গণিত অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান সামনে রেখে গতকাল সকাল ১০টায় দিনাজপুর জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে এই গণিত উৎসব শুরু হয়। জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রতন কুমার রায় এবং মাসুদুল হক। উদ্বোধনী বক্তব্যে মাসুদুল হক আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের গণিত ভীতি দূর করে আনন্দের সঙ্গে গণিত চর্চায় উৎসাহ বাড়াতে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও প্রথম আলোর এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ১০টায় করা হলেও ৯টা না বাজতেই সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে। দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলার ৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬২৮ জন শিক্ষার্থী চার ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে প্রাথমিকের ১৬৯ জন, নিম্নমাধ্যমিকের ২১৫ জন, মাধ্যমিকের ১৩৪ জন এবং উচ্চমাধ্যমিকের ৫৭ জন শিক্ষার্থী ছিল। উৎসব আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল প্রথম আলোর দিনাজপুর বন্ধুসভা। বাছাইপর্বে মোট ২০১ জন প্রতিযোগীকে আঞ্চলিক পর্বের জন্য উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ আদর্শ বিদ্যানিকেতন থেকে ২৪ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে উৎসবে অংশ নেন ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আম্বিয়া খাতুন। তিনি বলেন, ‘তিনটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে বাচ্চাদের নিয়ে ভোর ৬টায় রওনা দিয়েছি। বেশ কয়েক বছর ধরে আমাদের শিক্ষার্থীরা গণিত উৎসবে অংশ নিচ্ছে।’