শীত উপেক্ষা করে গণিতের আসরে

শীতের কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। উৎসব শুরু হওয়ার কথা সকাল ১০টায়। কিন্তু ৮টা থেকে খুদে শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে সাতক্ষীরা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। তাদের চোখমুখে গণিত জয়ের স্বপ্ন। প্রচণ্ড শীত আর কুয়াশা—কোনোটিই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি তাদের কাছে।

গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো—স্লোগানকে সামনে রেখে সাতক্ষীরা ছাড়াও আরও ছয় জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও পাবনায় গতকাল বৃহস্পতিবার উচ্ছলমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় গণিত উৎসব।

শিক্ষার্থীদের গাণিতিক মেধার উৎকর্ষ বৃদ্ধি ও ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ৬০তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের (আইএমও) জন্য বাংলাদেশ দল নির্বাচনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী ‘ডাচ্-বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০১৯’ আয়োজন করা হচ্ছে। প্রথমে ৬৪ জেলায় বাছাই অলিম্পিয়াড হচ্ছে। এর ফলাফল ঘোষণা করা হবে ম্যাথ অলিম্পিয়াডের ওয়েবসাইটে (www.matholympiad.org.bd)

বাছাইপর্বের বিজয়ীদের নিয়ে ফেব্রুয়ারিতে ১২টি শহরে আঞ্চলিক পর্ব হবে। মার্চে ঢাকায় হবে জাতীয় উৎসব। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির আয়োজনে ১৭তম বারের মতো এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

সাতক্ষীরায় উৎসব উদ্বোধন করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আবদুল্লাহ আল মামুন। শুরুতে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা। উৎসবে ২৪টি বিদ্যালয়ের ২৯৪ শিক্ষার্থী অংশ নেয়।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে উৎসবে ৩৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ভেন্যু প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের প্রতিনিধি হয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন সহকারী শিক্ষক শফিউল আজম। পাবনা সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণে পরীক্ষায় অংশ নেয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্য থেকে ১০০ জনকে আঞ্চলিক উৎসবের জন্য বাছাই করা হয়েছে।

সুনামগঞ্জ পৌরশহরের এইচ এম পি উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে সকালে বসে বাছাই অলিম্পিয়াডের আসর। জেলার ২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৩৮৫ শিক্ষার্থী অংশ নেয় এ আসরে। এর মধ্যে ১৩১ জনকে আঞ্চলিক পর্বের জন্য উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়। নীলফামারী সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে উৎসব উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক নাজিয়া শিরিন। উৎসবে অংশ নেয় ২৪৯ শিক্ষার্থী। কনকনে শীতের মধ্যে সকাল ১০টায় কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে শুরু হয় গণিত উৎসব। এতে অংশ নেওয়া ৪৬৫ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৬ জনকে আঞ্চলিক পর্বের জন্য উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়।

লক্ষ্মীপুরে সকাল ৯টা বাজতেই গণিতপ্রেমীদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে লক্ষ্মীপুর কলেজিয়েট উচ্চবিদ্যালয়ের আঙিনা। জেলার ৩৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২২৩ জন প্রতিযোগী গণিত উৎসবে অংশ নেয়। ৭২ জনকে আঞ্চলিক পর্বের জন্য বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।