'বিগ ব্যাং থেকে মহাবিশ্ব' শীর্ষক পাবলিক লেকচার আয়োজিত

‌বিজ্ঞানচিন্তার উদ্যোগে ‘বিগ ব্যাং থেকে মহাবিশ্ব’ শীর্ষক পাবলিক লেকচারে উৎসাহী মানুষের ভিড়। প্রথম আলোর সেমিনার কক্ষ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা, ২২ জানুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো
‌বিজ্ঞানচিন্তার উদ্যোগে ‘বিগ ব্যাং থেকে মহাবিশ্ব’ শীর্ষক পাবলিক লেকচারে উৎসাহী মানুষের ভিড়। প্রথম আলোর সেমিনার কক্ষ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা, ২২ জানুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো

মহাকাশ ও জ্যোতির্বিদ্যা নিয়ে মানুষের আগ্রহ সেই প্রাচীনকাল থেকেই। এই একবিংশ শতাব্দীতে এসেও তাতে ভাটা পড়েনি, বরং দিন দিন তা বেড়েই চলেছে। তারই চাক্ষুষ প্রমাণ মিলল মঙ্গলবার বিকেলে, রাজধানীর কারওয়ান বাজারের প্রথম আলোর সেমিনার কক্ষে।

দুপুর গড়াতে না গড়াতেই একদল উৎসাহী মানুষের ভিড়ে লোকারণ্য সেমিনার কক্ষ। সব বয়সী মানুষ শামিল হয়েছিলেন এই ভিড়ে। আসলে তাঁরা বিজ্ঞানপ্রেমী। এসেছেন ‌বিজ্ঞানচিন্তার উদ্যোগে আয়োজিত ‘বিগ ব্যাং থেকে মহাবিশ্ব’ শীর্ষক পাবলিক লেকচার উপভোগ করতে।

বেলা তিনটায় শুরু হওয়া এই লেকচারে আলোচনা করেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার রিভারসাইড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যার অধ্যাপক ড. দীপেন ভট্টাচার্য। তিনি দেড় ঘণ্টাব্যাপী মহাবিশ্বের জন্ম (বিগ ব্যাং), প্রসারণ, ডার্ক ম্যাটার, কৃষ্ণগহ্বর, মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ ইত্যাদি বিষয়ে সাবলীল বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‌‘জনপ্রিয় বিগ ব্যাং তত্ত্ব শতভাগ প্রতিষ্ঠিত না হলেও এ বিষয়ে বিজ্ঞানীরা এখন অনেকটাই নিশ্চিত। মহাবিশ্বের জন্মপ্রক্রিয়া নিয়ে নতুন অনেক তত্ত্বের জন্ম হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সেসবের বেশির ভাগই বিগ ব্যাং তত্ত্বকে সমর্থন করে।’

মহাকর্ষ তরঙ্গ সম্পর্কে অধ্যাপক ড. দীপেন ভট্টাচার্য বলেন, ‘সম্প্রতি জ্যোতির্বিদরা শত বছর আগে আইনস্টাইনের ভবিষ্যদ্বাণী করা এই তরঙ্গ করতে সক্ষম হয়েছেন। এর ফলে নতুন যুগে পদার্পণ করেছে আধুনিক জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যা। ভবিষ্যতে মহাবিশ্বকে আরও ভালোভাবে বুঝতে, এর সৃষ্টি রহস্য উন্মোচন করতে এই তরঙ্গ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’ লেকচারের শেষ পর্যায়ে উপস্থিত পাঠকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও জবাব দেন ড. দীপেন ভট্টাচার্য।

পাবলিক লেকচারটি শুরু হয় বিজ্ঞানচিন্তার সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুমের স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে। তিনি বলেন, ‘বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে এই বিজ্ঞানেও এ দেশের ছেলেমেয়েদের উন্নতি করতে হবে। বিজ্ঞানচিন্তা বিষয়টি মাথায় রেখেই এ ধরনের পাবলিক লেকচারের আয়োজন করছে নিয়মিত। ভবিষ্যতেও এ ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের সাবেক জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. রেজাউর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আরশাদ মোমেন। তাঁরা পাবলিক লেকচারটির আয়োজনের জন্য বিজ্ঞানচিন্তাকে ধন্যবাদ জানান। এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে বিজ্ঞানচিন্তা এ দেশের বিজ্ঞানমনস্ক একটা জাতি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন তানভিন জাকিয়া।