ফেসবুক ইতিবাচক না নেতিবাচক?

ফেসবুক
ফেসবুক

ফেসবুক নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। কেউ মনে করছেন, ফেসবুক আমাদের জন্য অনেক সুবিধা দিচ্ছে। আবার কেউ আওয়াজ তুলছেন, ফেসবুক আমাদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ কী ভাবছেন? গত সোমবার ১৫ বছর উদ্‌যাপন করল ফেসবুক। কিন্তু ফেসবুকের এই কিশোর বয়সে নেতিবাচক প্রভাব নিয়েই আলোচনা হচ্ছে বেশি। তবে জাকারবার্গ তাঁর প্রতিষ্ঠানের পক্ষে ইতিবাচক কথাই বলছেন।

গত বছর থেকে তথ্য কেলেঙ্কারি, ভুয়া খবর ও নির্বাচনে হস্তক্ষেপের মতো বিষয়গুলো নিয়ে ভাবমূর্তির সংকটে পড়েছে ফেসবুক। তবে জাকারবার্গ বলছেন, ফেসবুকের ভাবমূর্তি এখনো ইতিবাচক রয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জাকারবার্গ তাঁর ভাবনার কথা জানান। ফেসবুকের ১৫ বছর পূর্তিতে ওই পোস্ট দেন তিনি।

জাকারবার্গ লিখেছেন, ‘মানুষের এই নেটওয়ার্ক প্রচলিত শ্রেণিবৈষম্য দূর করেছে, আমাদের সমাজের অনেক প্রতিষ্ঠানকে পুনর্গঠন করেছে। এ পরিবর্তন কিছু মানুষ মানতে পারেনি তারা নেতিবাচক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা বলেছে, ইন্টারনেট ও এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মানুষের ক্ষমতায়ন সমাজ ও গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।’

তবে জাকারবার্গ মনে করেন, এই নেতিবাচক ধারণার বাইরেও ফেসবুক ব্যাপক ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছে এ বিশ্বে। জাকারবার্গ ফেসবুকের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে ফেসবুকের সঙ্গে পুরো ইন্টারনেটের বিষয়টিকে টেনে এনেছেন। যার মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন, ইন্টারনেট পুরো বিশ্বের মানুষের মধ্যে যোগাযোগের একটা রাস্তা করে দিয়েছে।

জাকারবার্গের এ দাবি নিয়ে অবশ্য এখন সমালোচনাও হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, বিশ্বজুড়ে মানুষের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনে পুরোপুরি কৃতিত্ব ফেসবুক নিতে পারে না। ফেসবুকের বাইরেও মানুষের যোগাযোগের অনেক মাধ্যম আছে। ফেসবুক আসার আগেও মানুষ নানা উপায়ে যোগাযোগ করেছে। ফেসবুক আসার পরেই মূলত বিশ্বজুড়ে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্বে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুকে আসক্তি মানুষকে একাকী ও বিষণ্ন করে তোলে। এ ছাড়া অনলাইনে যোগাযোগ মানুষের মুখোমুখি সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা কমায়। এ ছাড়া মার্কিন রাজনীতিতে তিক্ততা ছড়ানো ও মেরুকরণের জন্য ফেসবুকের ভূমিকা দেখা যায়।

বিশ্বজুড়ে ফেসবুকের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে দেখা যাচ্ছে। গত বছর নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণ চালাতে মিয়ানমারের সেনারা সমন্বিত অনলাইন প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন ও তাদের হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিউইয়র্ক টাইমস দাবি করেছে, ফেসবুকের নিউজফিড সহিংসতা ছড়াতে ব্যবহৃত হয়েছে।

জাকারবার্গ আলাদা করে বলার মতো কী করেছেন, তা বলা মুশকিল। ফেসবুকের কিছু নেতিবাচক প্রভাব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তবে এ সমস্যা সমাধানের প্রথম ধাপ হচ্ছে সমস্যা থাকার বিষয়টি স্বীকার করা। জাকারবার্গ অবশ্য মাঝেমধ্যে তা স্বীকার করে নেন। ফেসবুকের সমস্যা কাটাতে তাঁর কথা ও ফেসবুকের গৃহীত পদক্ষেপগুলো এখন পর্যন্ত শিথিল উদ্যম বলেই মনে করছেন অনেকেই।