অপরচুনিটি মিশন সমাপ্ত

মঙ্গল গ্রহের অজানা অনেক তথ্য জানার সুযোগ করে দিয়েছে মহাকাশযান অপরচুনিটি। সেখানে পানির প্রবাহ থাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা গেছে দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে। তবে অপরচুনিটির এ মিশন আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করে দিলেন নাসার গবেষকেরা। দীর্ঘদিন অপরচুনিটির কাছ থেকে সাড়া না পেয়ে মিশন সমাপ্ত ঘোষণা করেছেন তাঁরা।

গত বছরের জুন মাসে মঙ্গল গ্রহের ভয়ংকর এক ধূলিঝড়ে হারিয়ে যায় অপরচুনিটি। এরপর থেকে তার সঙ্গে গবেষকেদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। গতকাল বুধবার তাই এ মিশনকে সমাপ্ত বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মহাকাশবিজ্ঞানে অন্যতম সফল অভিযান বলে মনে করা হয় অপরচুনিটির এ অভিযানকে।

দীর্ঘদিন ধরে ব্যাটারিতে চার্জ না থাকায় পৃথিবী থেকে পাঠানো অনেক সংকেতের কোনো সাড়া দিতে পারেনি অপরচুনিটি। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অপরচুনিটির সঙ্গে যোগাযোগের সর্বশেষ প্রচেষ্টা চালান গবেষকেরা।

ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার সায়েন্স মিশন ডিরেক্টরেটের সহযোগী পরিচালক থমাস জুবুরচেন বলেন, ‘অপরচুনিটি মিশন সমাপ্ত ঘোষণা করছি।’

এর সঙ্গে যুক্ত গবেষকেরা এ ঘটনায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকেই অপরচুনিটি রোবটযানটিকে ‘অপি’ বলে ডাকতেন। নাসার এই রোভারটি মঙ্গলের মাটিতে নেমেছিল ২০০৪ সালের ২৪ জানুয়ারি।

গত বছরের জুনে ভয়ংকর ধূলিঝড় হয়েছিল মঙ্গলের ‘পারসিভ্যারেন্স ভ্যালি’ বা উপত্যকায়। এ ঘটনার পরই অপরচুনিটি মূলত অকেজো হয়ে পড়ে।

লাল গ্রহের ‘মেরিডিয়ানি প্লেনাম’ নামক স্থানে নামে নাসার ওই রোভার। পরের দিনই সিগন্যাল পাঠায় যানটি। মনে করা হয়েছিল, মঙ্গলে ১ কিলোমিটারের বেশি চষে বেড়াতে পারবে না অপরচুনিটি। কিন্তু সব হিসাব–নিকাশ পাল্টে দিয়ে ১৫ বছরে মঙ্গলে ৪৫ কিলোমিটারের বেশি চষে বেড়িয়েছে যানটি। খুব বেশি হলে মঙ্গলে ৯০ দিন সক্রিয় থাকবে এই মহাকাশযান। কিন্তু সেটি মঙ্গলের মাটিতে ১৪ বছর পার করেছে। গত বছরের ১০ জুন গ্রাউন্ড কন্ট্রোল রুম থেকে শেষবারের মতো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়েছিল অপরচুনিটির সঙ্গে।