বোর্ড থেকে সরে দাঁড়ালেন টুইটার সহপ্রতিষ্ঠাতা

ইভান উইলিয়ামস
ইভান উইলিয়ামস

জনপ্রিয় মাইক্রো ব্লগিং সাইট টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ইভান উইলিয়ামস টুইটারের পরিচালকদের বোর্ড থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। কয়েকটি টুইট করে তিনি এ ঘোষণা দেন। গতকাল শুক্রবার টুইটারের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়, এ মাসের শেষেই পরিচালকদের বোর্ড থেকে ইভান সরে যাবেন।

ইভান উইলিয়ামস বর্তমানে অনলাইন পাবলিশিং ওয়বেসাইট মিডিয়ামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। এর আগে তিনি টুইটারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

টুইটার বোর্ড থেকে সরে যাওয়ার কোনো কারণ উল্লেখ করেননি ইভান। এক টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘আমি ভাগ্যবান যে এক যুগ ধরে টুইটারের বোর্ডে থাকতে পেরেছি। যখন বোর্ড ছিল না, তখনো ছিলাম।’

মাইক্রোব্লগিং ওয়েবসাইট, খুদে বার্তার সাইট কিংবা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে টুইটারের পরিচয়। বিজ স্টোন, ইভান উইলিয়ামস, জ্যাক ডরসি ও নোয়া গ্লাস টুইটারের উদ্যোক্তা। ২০০৬ সালের মার্চ মাসে টুইটারের যাত্রা শুরু হয়। তবে ২০০৬ সালের জুলাই মাসে জ্যাক ডরসি আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন।

গুগলের ওডিও ডটকমে (www.odeo.com) কাজ করার সময় ইভান উইলিয়ামস বিজ স্টোনকে নিয়োগ দেন। সেখানেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে দুজনের। ইভান ২০০৪ সালে গুগল থেকে পদত্যাগ করলে স্টোনও তাঁর সঙ্গে চলে আসেন। পরে ওডিওর সাবেক প্রকৌশলী জ্যাক ডরসি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি সরল ধারণার কথা জানালে ইভান স্টোনসহ বেশ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে টুইটার প্রতিষ্ঠা করেন। দুই বন্ধুসহ অন্যদের অক্লান্ত শ্রমে ২০০৬ সালের ২১ মার্চ সানফ্রান্সিসকোতে যাত্রা শুরু করে খুদে বার্তা লেখার ওয়েবসাইট টুইটার।

স্কুলের পড়াশোনা শেষে সেই নব্বইয়ের দশকে ইভান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার বেশ কিছু প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেন। ইন্টেল আর হিউলেট-প্যাকার্ডের মতো প্রতিষ্ঠানের জন্য তিনি কোডিং করতেন। টুকটাক চাকরির পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি অব নেব্রাস্কা-লিংকনে পড়াশোনা শুরু করেন ইভান। দেড় বছরের মাথায় পড়াশোনাকে বিদায় জানিয়ে আবারও পুরোদস্তুর কাজের দুনিয়ায় পা রাখেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনায় তেমন আগ্রহ পাচ্ছিলেন না। বরং প্রযুক্তিসংক্রান্ত নিত্যনতুন ভাবনা তাঁকে পেয়ে বসেছিল।

বন্ধু মেগ হোরিহানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পাইরা ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এই ল্যাবের একটি সেবা ছিল ‘ব্লগার’, যা কিনা বর্তমান সময়ের আলোচিত ‘ব্লগ’ শব্দের গোড়াপত্তন করে। ইভানই ‘ব্লগার’ শব্দটি চালু করেন। ২০০৩ সালে গুগল ব্লগার কিনে নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়া শেষ না করেও ইভান ২০০৩ সালে এমআইটি টেকনোলজি রিভিউয়ের তালিকায় পৃথিবীর সেরা ১০০ উদ্ভাবকের একজন হিসেবে মনোনীত হন। ২০০৬ সালে অভিয়াস করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন ইভান ও বিজ স্টোন। এই প্রতিষ্ঠানের একটি প্রকল্পই ছিল টুইটার, যা কিনা ২০০৭ সালে একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। টুইটার তুমুল জনপ্রিয়তা পেলেও থেমে থাকেননি তিনি। ২০১২ সালে আরেকটি প্রকাশনা ‘ওয়েব মিডিয়াম’ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিনিয়ত প্রযুক্তির দুনিয়ায় নতুন নতুন আবিষ্কার যোগ করে পৃথিবীকে চমকে দেওয়ার বাতিক আছে তাঁর!